১১:১৬ পূর্বাহ্ণ, জুলা ২৯, ২০১৮ |জহির হাওলাদার
10937 Views
সাহরী অবস্থায় আযান শুনলে কি করবেন?
কয়েকদিন আগে আমার ফেসবুকে “সাহরি খাওয়া অবস্থায় আযান হলে কী করবেন?” শিরোনামে একটা লেখা পোস্ট করেছিলাম। সেখানে এক বড় ভাই কমেন্ট করেছিলেন। “মুফতি সাহেব আপনার ফতোয়া রাসূলের হাদিস বিরোধী কেন??” এবং তিনি একটি হাদীসও দিয়েছিলেন যা ইমাম আবু দাউদ রহ. তাঁর সুনানের মধ্যে নিয়ে এসেছেন। হাদীসটি হলো-
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْأَعْلَى بْنُ حَمَّادٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا سَمِعَ أَحَدُكُمُ النِّدَاءَ وَالْإِنَاءُ عَلَى يَدِهِ، فَلَا يَضَعْهُ حَتَّى يَقْضِيَ حَاجَتَهُ مِنْهُ»
অনুবাদঃ হযরত আবু হুরায়রা রাযি. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করছেনঃ তোমাদের কেউ যখন ফজরের আযান শুনে, আর এ সময় তার হাতে খাদ্যের পাত্র থাকে, সে যেন আযানের কারণে খাদ্য গ্রহণ বন্ধ না করে-যতক্ষণ না সে তা দিয়ে স্বীয় প্রয়োজন পূর্ণ করে।– আবু দাউদ হাদীস নং ২৩৪২
উল্লিখিত হাদীসের বাহ্যিক অর্থের উপর ভিত্তি করে আবুল আলা মওদূদীসহ কেউ কেউ বলেন যে, ফজর আবির্ভাবের পরে তথা সুবহে সাদিকের পরও খাওয়া-পান করা জায়েয আছ।
চার ইমামসহ জমহুর উম্মতের মতে ফজর আবির্ভাবের পরে পানাহার করা জায়েয নয়। ইচ্ছাকৃত খাওয়ার দ্বারা কাযা এবং কাফ্ফারা উভয়টিই অত্যাবশ্যক হবে। কারণ-
১. আল্লাহ তাআলার বাণী-
وَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الْأَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِ
অনুবাদঃ তোমরা পানাহার কর যতক্ষণ না কাল রেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিস্কার দেখা যায়।–সূরা বাকারা ১৮৭
উপরোল্লিখিত আয়াতে আহার ও পান করার শেষ সীমা ফজর উদয় পর্যন্ত সাব্যস্ত করা হয়েছে।
তাছাড়া উল্লিখিত হাদীসের দ্বারা উদ্দেশ্য এই যে ফজর উদয় হওয়া মূলত ইয়াকীনের উপর নির্ভর করে। মুআযযিনের আযানের উপর নির্ভর করে না। কেননা তার ভ্রান্তি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। সুতরা মুআযযিন যদি আযান দিয়েও দেয়, কিন্তু নিজের কাছে যদি ফজর উদয় হয়নি বলে দৃঢ়ভাবে মনে হয়, তা হলে পানাহার বন্ধ করবে না।
ইবনুল মালেক এবং আল্লামা খাত্তাবী বলেন, উক্ত আযানে দ্বারা ফজরের আযান উদ্দেশ্য নয়, বরং তাহাজ্জুদের আযান উদ্দেশ্য। যেমন অন্য হাদীসে এসেছে-
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنِ التَّيْمِيِّ، ح وحَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ التَّيْمِيُّ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” لَا يَمْنَعَنَّ أَحَدَكُمْ أَذَانُ بِلَالٍ مِنْ سُحُورِهِ، فَإِنَّهُ يُؤَذِّنُ – أَوْ قَالَ: يُنَادِي – لِيَرْجِعَ قَائِمُكُمْ، وَيَنْتَبِهَ نَائِمُكُمْ، وَلَيْسَ الْفَجْرُ أَنْ [ص:304] يَقُولَ هَكَذَا ” قَالَ مُسَدَّدٌ وَجَمَعَ يَحْيَى كَفَّيْهِ حَتَّى يَقُولَ هَكَذَا، وَمَدَّ يَحْيَى بِأُصْبُعَيْهِ السَّبَّابَتَيْنِ
অনুবাদঃ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, বিলালের আযান যেন তোমাদের কাউকে সাহরী খাওয়া হতে বিরত না রাখে, কেননা সে আযান দেয় অথবা আহ্বান করে তাদের যারা তাহাজ্জুদ নামাযে রত থাকে, তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য এবং তোমাদের মধ্যে যারা নিদ্রিত থাকে তাদের জাগাবার জন্য। আর ততক্ষণ ফজর হয় না, যতক্ষণ না এরূপ হয়, এ বলে ইয়াহইয়া তাঁর হাতের তালুকে মুষ্টিবদ্ধ করে প্রসারিত করেন পরে তাঁর হাতের আঙ্গুলি প্রসারিত করে দেন।
এরপরও যদি কারও কোন সন্দেহ থাকে, তা হলে আমাদের কীবা করার আছে!!!
১১৫/২৩, মতিঝিল, আরামবাগ, ঢাকা - ১০০০ | ই-মেইলঃ dsangbad24@gmail.com | যোগাযোগ- 01813822042 , 01923651422
Leave a Reply