শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ০৯:৫৫ পূর্বাহ্ন
গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি: পা দিয়ে লেখাপড়া করা সেই আয়েশা আক্তারের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক আব্দুল মতিন। আয়েশাকে দশ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছেন তিনি। গত ২২ অক্টোবর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক তার কার্যালয়ে আয়েশা আক্তারকে দশ হাজার টাকার চেক প্রদান করেন। আয়েশা আক্তারকে নিয়ে জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও অনলাইনে প্রতিবেদন প্রকাশ হলে দৃষ্টি গোচর হয় জেলা প্রশাসকের। পরে আয়েশাকে সহায়তা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি। আয়েশা আক্তার মাস্টার্সে ভর্তি হলেও টাকার অভাবে তিনি বই কিনতে পারছিলেন না। জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদানের সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসেন আলী, গাইবান্ধা বি এম ল্যাবরেটরি স্কুলের অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান,আয়েশার মা মাজেদা বেগম প্রমুখ। টাকা বিতরণের পর জেলা প্রশাসক আয়েশাকে একটি ক¤িপউটার প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেন। চব্বিশ বছর বয়সী আয়েশার জন্ম থেকেই দুটি হাত নেই। তার বাড়ি গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার কচুয়া ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামে। তার প্রত্যয় ছিল হাত নেই তাতে কি। তিনি পরিবারের বোঝা হয়ে থাকবেন না। তাই পা দিয়ে লিখেই লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছেন। আয়েশা গাইবান্ধা সরকারি কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে মাস্টার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। পা দিয়ে লিখে বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি চাকরি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন। পা দিয়ে লিখলেও তার লেখা খুবই সুন্দর। আয়েশা আক্তার বলেন, পা দিয়ে শুধু লেখাই নয়, সব ধরনের কাজ করতে পারেন তিনি। আয়েশা ঘর গোছানো, পরিষ্কার করা, রান্না করা, ল্যাপটপ চালানো, মোবাইলে কথা বলা, দরজায় লাগানো তালা চাবি দিয়ে খোলা, কাপড় ভাজ করাসহ দৈনন্দিন সব কাজ করতে পারেন। লেখাপড়া শিখে সরকারি চাকরি করার আশা প্রকাশ করেন আয়েশা। চাকরি করে নিজের ও পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চান তিনি। আয়েশা ২০১২ সালে কচুয়াহাট এইচ আর এম বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করে। ২০১৪ সালে সাঘাটা উদয়ন মহিলা ডিগ্রী কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে। আয়েশা ২০১৭ সালে একই কলেজ থেকে বিএ পাশ করে। এরপর ২০১৮ সালে গাইবান্ধা সরকারি কলেজে মাস্টার্সে ভর্তি হন। তিনি কয়েক প্রকারের সেলাই ও ক¤িপউটারের কাজ শিখেছেন।