বুধবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২১, ০৭:০৭ পূর্বাহ্ন
ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা থেকে ৬২ জন যাত্রীসহ একটি বোয়িং ৭৩৭ বিমান আকাশে ওড়ার একটু পরেই বিধ্বস্ত হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, বিধ্বস্ত বিমানের সব আরোহীর মৃত্যু হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা দুর্ঘটনার স্থান খুঁজে পেয়েছেন। তারা ধারণা করছেন, বোয়িং ৭৩৭ বিমানটি উড্ডয়নের চার মিনিটের মাথায় সাগরে বিধ্বস্ত হয়েছে। ফলে বিমানের কোনো যাত্রীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই।
স্থানীয় সময় শনিবার রাজধানী জাকার্তা থেকে বিমানটি উড্ডয়ন করেছিলো। পরবর্তীতে সাগরের ওপরে ১০ হাজার ফুট উচ্চতায় থাকা অবস্থায় বিমানটি নিখোঁজ হয়ে যায়। তারপর থেকেই বিমানটির সঙ্গে কন্ট্রোল রুম থেকে আর যোগাযোগ করা যায়নি।
শ্রিয়িজায়ার বিমানটি শনিবার রাজধানী জাকার্তা থেকে উড্ডয়ন করেছিলো। এটি জাকার্তা থেকে পশ্চিমাঞ্চলীয় কালিমানতান প্রদেশের পোন্তিয়ানাক শহরের দিকে যাচ্ছিলো। সে সময় বিমানটিতে ৬২ জন আরোহী ছিলো। উড্ডয়নের চার মিনিট পর থেকেই বিমানটি সব ধরনের যোগাযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এরপর থেকেই বিমানটি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে কীনা তা জানতে তল্লাশি শুরু হয়।
ঘটনাস্থলে ১০টির বেশি জাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনাস্থলের আশে-পাশে পাওয়া ধ্বংসাবশেষ খতিয়ে দেখছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। এগুলো আসলেই ওই বিমানের ধ্বংসাবশেষ কীনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
জাকার্তা পুলিশের মুখপাত্র ইউসরি ইউনুস জানান, তল্লাশি ও উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে দুটি ব্যাগ উদ্ধার করেছেন। একটি ব্যাগের মধ্যে বিমানের কোনো আরোহীর জিনিসপত্র ছিলো এবং অপর একটি ব্যাগে কারো দেহাবশেষ পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, আমরা এসব জিনিস শনাক্ত করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।
শনিবার রাতে উদ্ধার ও তল্লাশি অভিযান কিছু সময়ের জন্য বন্ধ রাখা হলেও রোববার সকাল থেকেও আবারো শুরু হয়েছে। উদ্ধারকারী দল থেকে সহায়তা করতে চারটি বিমানও মোতায়েন করা হয়েছে।
বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, তারা বড় ধরনের একটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। সোলিহিন নামের এক জেলে জানিয়েছেন, তিনি বিমান দুর্ঘটনার সাক্ষী।
তিনি বলেন, আমার মনে হলো বিমানটিতে আগুন জ্বলছে এবং এরপরেই সেটি সাগরে বিধ্বস্ত হয়েছে। এটা আমাদের একদম কাছেই ঘটেছে। যে স্থানে ওই বিমানটি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে তার কাছাকাছি একটি দ্বীপের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, তারা বেশ কিছু ধ্বংসাবশেষ দেখতে পেয়েছেন। তাদের মনে হয়েছে এগুলো দুর্ঘটনা কবলিত বিমানের।
বিমানটিতে ১০ শিশুসহ ৫০ জন যাত্রী এবং ১২ জন ক্রু সদস্য ছিলো। বিমানে থাকা সব আরোহীই ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। দুর্ঘটনার পর থেকেই ওই বিমানে থাকা আরোহীদের স্বজনরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। ইয়ামান জাই নামের একজন বলেন, আমার স্ত্রী এবং তিন সন্তান ওই বিমানে ছিলো।