মঙ্গলবার, ১৩ এপ্রিল ২০২১, ০৬:৫১ অপরাহ্ন
গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি:
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে অবরুদ্ধ পরিস্থিতিতে গাইবান্ধায় কম মজুরিতে বিভিন্ন পেশার শ্রমজীবীরা বোরো ধান কাটছে। গত বছর ধান কাটার জন্য একজন শ্রমিকের মজুরি প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা দিতে হতো। কিন্তু চলতি মৌসুমে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা মজুরি দিয়ে ধান কাটাচ্ছেন কৃষকগণ। কৃষকরা বলেন,করোনার কারণে অন্যান্য পেশার শ্রমজীবীরা কাজ হারিয়েছেন। এতে কর্মহীন হয়ে পড়া এসব মানুষ ধান কাটতে নেমে পড়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মাসুদুর রহমান বলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে কৃষি শ্রমিকের সঙ্কট না থাকার কারণে গাইবান্ধায় বর্তমানে একদিনের মজুরি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। সাধারণত সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত কাজের ভিত্তিতে একদিনের মজুরি ধরা হয়। সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের ইজিবাইক চালক আবুল হোসেন বলেন, লকডাউনের কারণে গাড়ি চালাতে পারছি না।
তাই অন্যের ধান কাটছি। করোনাভাইরাসের কারণে জমির মালিকরা সহজেই ধান কাটার শ্রমিক পাওয়ায় ৩৫০ টাকার বেশি দিচ্ছে না। ফুলছড়ি উপজেলার রসুলপুর গ্রামের কৃষক হাসেম বলেন ১০ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছি। এলাকায় ধান কাটা শুরু হয়েছে। সুলভ মূল্যে কৃষি শ্রমিক দিয়ে ধান কাটাচ্ছি। গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যে জেলার সাতটি উপজেলায় এক লাখ ১৬ হাজার কৃষি শ্রমিক রয়েছে। এরমধ্যে করোনার কারণে আট হাজার ৩২৭ জনকে প্রত্যায়নপত্র দিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় কাজে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়াও জেলায় ধান কাটা মেশিন ১৬টি হারভেস্টার বিতরণ করা হয়েছে। একটি হারভেস্টার ঘন্টায় তিন বিঘা জমির ধান কাটতে পারে। এ মেশিনে এক বিঘা জমির ধান কাটতে খরচ পড়ে এক হাজার টাকা। ফলে ধান কাটতে কোনো সমস্যা হবে না। জেলার সাতটি উপজেলায় এক লাখ ৩০ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। তবে চাষ হয়েছে এক লাখ ২৭ হাজার ৫০০ হেক্টও জমিতে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী পাঁচ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। মে মাসই এ জেলার বোরো ধান কাটার ভরা মৌসুম। শুক্রবার পর্যন্ত জেলায় শতকরা ১২ ভাগ জমির ধান কাটা হয়েছে ।