শনিবার, ০৬ মার্চ ২০২১, ০১:৫৯ পূর্বাহ্ন
গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি: ঋতু পরিবর্তনের কারণে এবার হেমন্তেই মিলছে শীতের আমেজ। কুয়াশার শুভ্র চাদর গায়ে হামা দিতে দিতে এগিয়ে আসছে শীত। হাড় কাঁপানো না হলেও শীতের আমেজ প্রতিদিনই বাড়ছে একটু একটু করে। দিন যত যাচ্ছে প্রকৃতিতে তার ছাপ ততই ¯পষ্টতর হয়ে উঠছে। দিনে রোদের উত্তাপ অনেক কমে গেছে। সন্ধ্যায় একটু গরম কাপড় পরেই বের হতে হচ্ছে রাস্তায়। আর রাতে কম্বল বা কাঁথা না জড়িয়ে ঘুমানো যাচ্ছে না। ভোরে ও সন্ধ্যায় পড়ছে ঘন কুয়াশা। হাওয়ায় মিলছে হিমেল ¯পর্শ। পথের পাশের গাছপালা, ঝোপঝাড়, মাঠের দূর্বাঘাস সারারাত ঝরে পড়া শিশিরে ভিজে উঠছে। আর সেই শিশির বিন্দুতে সকালের সোনাঝরা রোদ হীরার কুচির মতো দ্যুতিময় হয়ে ছড়াচ্ছে তার সাতরঙ বর্ণালি। শহর কিংবা গ্রামাঞ্চল সবখানেই শীতের আমেজ পুরোদমে উপভোগ করছেন মানুষ। এরই মধ্যে চারিদিকে শুরু হয়ে গেছে শীতবুড়িকে বরণ করে নেওয়ার প্রস্তুতি। পাশাপাশি এবার শীত কেমন পড়বে তা নিয়েও শুরুহয়ে গেছে নানান জল্পনা। এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে গাইবান্ধা অঞ্চলে দিনের সর্বোচ্চ গড় তাপমাত্রা ৩০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকছে। সর্বনি¤œ তাপমাত্রা এসে দাঁড়িয়েছে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ঋতু পরিক্রমায় শীত আসতে এখনও এক মাস বাকি থাকলেও গাইবান্ধায় এখনই পাওয়া যাচ্ছে শীতের আমেজ। লোকজন বাক্সবন্দি করে রাখা লেপ-তোষক বের করছে ঠিক করার জন্য। আবার কেউ নতুনভাবে তৈরি করাচ্ছেন। মানুষের শরীরের কাপড়ে পরিবর্তন আসার সঙ্গে সঙ্গে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন গাইবান্ধার ধুনকররাও। জেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ফিরে ধুনকররা তৈরি করেছেন লেপ-তোষক। পাখি ডাকা ভোরে ধুনকররা তুলা, কাপড় ও ধুনার নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন। কেউ সাইকেলে, কেউবা ভ্যানে আবার কেউবা পায়ে হেঁটে ঘুরছেন জেলা শহরের গলিতে-গলিতে। ধুনকরের টুং-টাং আওয়াজ আর বাতাসে উড়ে বেড়ানো তুলা জানিয়ে দিচ্ছে শীত আসছে। ফলে জেলা শহরের কাচারিবাজার এলাকায় লেপ-তোষক তৈরির দোকানগুলোতেও অতিরিক্ত কারিগর কাজ শুরু করে দিয়েছেন। পাড়া-মহল্লার পাশাপাশি দোকানেও কাজ চলছে পুরোদমে। তাদের ব্যস্ততার যেনো শেষ নেই। গাইবান্ধার কাচারি বাজারের ধুনকর এন্তাজ আলী বলেন এক সপ্তাহ আগেও তেমন কাজ-কর্ম ছিল না। কিন্তু গত সপ্তাহ থেকে ভোরের হালকা কুয়াশায় শীতের আমেজ বিরাজ করছে। এতেই লেপ তৈরির অর্ডার দেয়া-নেয়া শুরু হয়ে গেছে। গার্মেন্টের তুলা দিয়ে তৈরি করা লেপও বিক্রি হচ্ছে। যার বিক্রি মূল্য সিঙ্গেল ৫শ টাকা। আর ডাবল লেপ ১১শ টাকা। এছাড়া ভালো শিমুল তুলা দিয়ে নুতনভাবে একটি সিঙ্গেল লেপ তৈরি করতে খরচ পড়ছে ১ হাজার টাকা, আর ডাবল লেপ তৈরিতে খরচ হচ্ছে ১৫শ থেকে ১৭শ টাকা। আর সিঙ্গেল তোষক ৬শ টাকা এবং ডাবল ১২শ টাকায় তৈরি করা হচ্ছে। একটি লেপ তৈরিতে একজন কারিগরের সময় লাগে এক থেকে দেড় ঘণ্টা। এভাবে একজন কারিগর দিনে গড়ে ৫ থেকে ৬টি লেপ তৈরি করতে পারেন। তুলা ও কাপড়ের দাম বাড়ায় গত বছরের তুলনায় এবার লেপ তোষকে ১শ থেকে ১শ ৫০ টাকা বেশি লাগছে। সামনের সপ্তাহ থেকে কাজের চাপ আরও বাড়বে।