বুধবার, ০৩ মার্চ ২০২১, ০৩:০২ অপরাহ্ন
গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি: হত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও ভাংচুর মামলার চার্জশীটে প্রধান আসামীসহ গুরুত্বপুর্ণ আসামীদের নাম বাদ দেওয়ায় তা প্রত্যাখান করে প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ-অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছে সাঁওতালরা। গত ২৮ জুলাই রবিবার বিকাল ৩টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ঢাকা-দিনাজপুর রাস্তায় উপজেলার বাগদাফার্ম এলাকায় এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এ সময় রাস্তার দু’পাশে কয়েক শত যানবাহন আটকা পড়ে। সাহেবগঞ্জ-বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কের সভাপতিত্বে কর্মসূচী চলাকালে বক্তব্য রাখেন, আদিবাসী নেতা বার্নাবাশ টুডু, প্রিসিলা মুরমু, স্বপন শেখ, সুফল হেমব্রম, হবিবুর রহমান, সিপিবি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সভাপতি তাজুল ইসলাম, আদিবাসী নেতা রাফায়েল হাসদা প্রমূখ। সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম-ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি এই কর্মসূচির আয়োজন করে। বক্তারা বলেন, মামলার যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তার মধ্যে প্রধান আসামী সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদসহ গুরুত্বপূর্ণ আসামীদের নাম বাদ দেয়া হয়েছে। যে সব আসামীদের নাম বাদ দেয়া হয়েছে সে দিনের হামলার ভিডিও ফুটেজ, ছবি ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে তাদের স¤পৃক্ততার প্রমাণ রয়েছে। অবিলম্বে এই মামলার চার্জশীট সংশোধন করে থমাস হেমব্রম কর্তৃক ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে যে মামলা দায়ের করা হয়েছে তার আলোকে চার্জশীট প্রদানের দাবি জানান বক্তারা। পরে সংসদ সদস্য প্রকৌশলী আলহাজ্ব মনোয়ার হোসেন চৌধুরী, উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ প্রধান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রামকৃষ্ণ বর্মন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একে এম মেহেদী হাসান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তারা বিষয়টি আইননানুগ সুষ্ঠু সমাধানের আশ্বাস দিলে সাঁওতালরা অবরোধ তুলে নেয়। এর আগে গত ২৮ জুলাই রবিবার সকালে সাঁওতালদের দায়েরকৃত মামলার চার্জশীটে ৯০ জনের নাম উল্লেখ করেন গোবিন্দগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে দাখিল করে পিবিআই। প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে সাঁওতাল ও কিছু বাঙ্গালি রংপুর চিনিকলের বিরুদ্ধে তাদের পূর্ব পুরুষের জমি অধিগ্রহণের চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ এনে সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারের জমি ফেরত পেতে আন্দোলন শুরু করেন। ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর ওই খামারের জমিতে আখ কাটা নিয়ে পুলিশ ও চিনিকল শ্রমিক কর্মচারীদের সঙ্গে সাঁওতালদের সংঘর্ষে তিন জন সাঁওতাল মারা যান। পরবর্তীতে পুলিশ অভিযানে ওই বসতি থেকে সাঁওতালদের উচ্ছেদ করা হয়। এসব ঘটনায় সাঁওতালদের পক্ষে স্বপন মুরমু বাদি হয়ে গত ২০১৬ সালের ১৬ নভেম্বর ৬০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি দেখিয়ে মামলা করেন। পরে ২৬ নভেম্বর থোমাস হেমরম বাদি হয়ে ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে আরেকটি মামলা করেন।