বৃহস্পতিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ০৮:৩০ পূর্বাহ্ন
মামুনর রশিদ, জাবি প্রতিনিধি:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) তিন দফা দাবিতে পূর্ব ঘোষিত প্রশাসনিক ভবন অবরোধ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন পালন করছেন আন্দোলনকারীরা।
এতে স্থবির হয়ে পড়েছে সকল ধরনের প্রশাসনিক কার্যক্রম। আজ বুধবার সকাল থেকে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশ করতে পারে নি। ফলে শিক্ষা কার্যক্রমসহ সকল কর্মকান্ড বন্ধ হয়ে আছে। ভোগান্তির কবলে পড়েছে সেবা গ্রাহকরা।
সকাল পৌনে নয়টায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুই উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আমির হোসেন ও নুরুল আলম এবং রেজিস্টার রহিমা কানিজ কথা বলতে আসেন, তারা আন্দোলনকারীদের বলেন তোমরা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করো। আমাদেরকে অফিসে প্রবেশ করতে দাও। এসময় সেখানে থাকা আন্দোলন কারীরা বলেন আমরা আমাদের তিন দফা দাবী স্পষ্ট করে দিয়েছি। প্রশাসনের সাথে আমরা কয়েক দফা আলোচনা করেছি, স্মারকলিপি প্রদান করেছি কিন্তু তারা আামদের যে কথা দিয়েছিলো তারা তা রক্ষা করেনি।
দ্বিতীয় দিন বুধবার সকাল ৮টা থেকে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করে আসছে। এতে শিক্ষকদের একটি অংশসহ জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট ও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের জাবি শাখার নেতাকর্মী অংশ নিয়েছেন।
এ সময় উপ-উপাচার্যসহ প্রশাসনের যারা কথা বলতে আসেন তাদেরকে আন্দোলনকারীরা জানান তাদের তিন দফা দাবি নিয়ে যদি প্রশাসন স্পষ্ট ভাবে আলোচনায় করতে চায় তাহলে তারা আলোচনা করবে।
দুর্নীতি নিয়ে যে অভিযোগ আছে সে সম্পর্কে তদন্তের কথা বললে উপ-উপাচার্য নুরুল আলম বলেন আমি তাকে সৎ হিসেবে জানি তিনি এ কাজ করতে পারেন না। আন্দোলনকারীরা বলেন দেশের প্রথমসারীর পত্রিকায় অভিযোগ এসেছে তার বিরুদ্ধে আর তা বিচারবিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে প্রমান করতে হবে। আপনারা সৎ বললে হবেনা যেহেতু অভিযোগ এসেছে তার নিরপেক্ষ তদন্তে প্রয়োজন। আন্দোলনকারীরা বলেন তারা আমাদের তিন দফা নিয়ে স্পষ্ট করে কথা বলতে হবে তাহলে আমরা আলোচনা করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবো।
আন্দোলনকারীদের দাবি, অপরিকল্পিত মাস্টার প্লানের অধীনে তড়িঘড়ি করে ‘অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের’ কাজ শুরু করা হয়েছে এবং অপরিকল্পিতভাবে যে কয়েকটি স্থাপনার কাজ শুরু হয়েছে তাতেও ব্যাপক আর্থিক অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে বলে তারা জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জেনেছেন। এজন্য প্রকল্পে অপরিকল্পনা ও দুর্নীতির প্রতিবাদে এবং তিন দফা দাবি আদায়ে তারা এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন।
দাবিগুলো হলো—বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের তিনটি হল স্থানান্তর করে নতুন জায়গায় দ্রুত কাজ শুরু করা, মেগাপ্রজেক্টের টাকার দুর্নীতির ব্যাপারে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা, টেন্ডারের শিডিউল ছিনতাইকারীদের শাস্তি প্রদান ও মেগাপ্রজেক্টের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে সকল ব্যয়ের হিসেব জনসম্মুখে প্রকাশ করা এবং মেগাপ্রজেক্টের বাকি স্থাপনার কাজ স্থগিত রেখে সকল স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে মাস্টারপ্লান পুনর্বিন্যাস করা।
এদিকে শিক্ষার্থীদের অবরোধ কর্মসূচির বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের বার্তা পাওয়া যায় নি।