রবিবার, ০৭ মার্চ ২০২১, ০৫:১৭ অপরাহ্ন
আজ ৫৩ বছর বয়সের আমার এক কলিগের সাথে পরিচিত হলাম। জীবনের সব অর্জন দিয়ে একটা আড়াই কাঠার প্লট কিনেছেন ঢাকায়। নিজের টাকা না থাকায় ডেভেলপার কম্পানিকে দিয়েছেন বাড়ী বানাতে৷ তাকে ৩ টি ফ্ল্যাট দিয়েছে কম্পানি যার বাজার মূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা।
কথায় কথায় বললাম আমি একটা বড় বাসা খুঁজতেছি। তিনি জানতে চাইলেন কি দরকার বড় বাসার। বললাম বাবা মায়ের থাকতে কষ্ট হয়৷ বড় বাসাটা আসলে তাদের জন্যই দরকার৷ শুনে কিছুক্ষণ চুপ করে রইলেন৷
নীরবতা ভেঙ্গে বলতে শুরু করলেন, ” আমারও একসময় থাকতে কষ্ট হতো৷ বাবা মা ছোটবোন নিয়ে থাকতাম,বড় বাসা নিতে পারিনি। এখন আমার নিজের নামে ৩ টা ফ্ল্যাট। বাবা মা মারা গিয়েছে জমি কেনার পরপরই৷ ফ্ল্যাটে তাদের থাকার ভাগ্য হয়নি৷ আজ অনেক বড় বাসা কিন্তু শূন্য মনে হয় সব৷ ”
সব শেষে তিনি যা বললেন আমি নিজেই বেশ আবেগপ্রবণ হয়ে গেলাম৷ আমাকে বললেন ” এই মুহূর্তে কেউ যদি আমাকে বলতো আমার সম্পত্তি এই ৩ কোটি টাকার ফ্ল্যাট এর বিনিময়ে হলেও একবার শুধু বাবা মা কে দেখতে পারবো আমি সব দিয়ে দিতাম, সব৷ ” তিনি আর কথা বলতে পারেন নি৷ আমিও আর কিছু জানতে চাইনি। তবে শেষে যাওয়ার আগে বারবার বলছিলেন ” বাবা মা থাকতে থাকতে যত্ন করেন, এমন জান্নাত আর পাবেন না। ”
বেচে থাকতে বাবা মা কে ছয় মাসে অন্তত একবার একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে শারীরিক চেকআপ করান। বসা থেকে উঠতে গেলে হাটুতে ব্যাথা লাগে কিনা, ডায়াবেটিসটা কন্ট্রোলে আছে কিনা, ঠিকমতো খাবারগুলো খেতে পারছে কিনা, রাতে ঘুম হয় কিনা।
ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল বাবা মায়েরা।
-সংগৃহীত।