সোমবার, ০৮ মার্চ ২০২১, ০৫:২০ পূর্বাহ্ন
উলিপুর (কুড়িগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা ঃ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে বিজয় দিবসের শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাতে ক্যাম্পাসের শহীদ বেদিতে জুতা পায়ে উঠে পুস্পস্তবক অর্পণ করে ক্ষুব্ধ জনতার হাতে হামলার শিকার হওয়া সেই অধ্যক্ষকে মুক্তিযোদ্ধাদের চাপে এবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিট পরিবর্তন করতে হয়েছে। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত কেবিন থেকে আহত অধ্যক্ষকে সাধারন বেডে নেয়া হয়। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
জানা গেছে, উলিপুর সরকারি ডিগ্রী কলেজে বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে সোমবার সকালে শহীদ মিনারের বেদিতে কলেজের পক্ষ থেকে পুস্পস্তবক অর্পন করা হয়। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু তাহেরকে জুতা পায়ে বেদিতে উঠে পুস্পস্তবক অর্পন করে ফটোসেশন করতেও দেখা যায়। পরে বেদিতে জুতা পায়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন মহলে তীব্র সমালোচনার ঝড় উঠে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওই দিন দুপুরে একদল জনতা কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকে অধ্যক্ষকে মারধর করে তার অফিস কক্ষ ভাংচুর করেন। পরে কলেজের অন্যান্য শিক্ষকগণ অধ্যক্ষকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। এ সময় তাকে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত কেবিনে চিকিৎসা দেয়া হয়। শহীদ বেদি অবমাননাকারী অধ্যক্ষকে মুক্তিযোদ্ধা কেবিনে চিকিৎসাধীন থাকার খবর ছড়িয়ে পড়লে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষের কাছে মৌখিক অভিযোগ করে এর প্রতিবাদ জানায়। পরে কর্তৃপক্ষ ওই অধ্যক্ষকে মুক্তিযোদ্ধা কেবিন থেকে সরিয়ে বিকালের দিকে চার নং সাধারন বেডে স্থানন্তর করে এবং মুক্তিযোদ্ধা কেবিনে তালা ঝুলিয়ে দেয়। পরে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হলে সন্ধ্যার পরে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ত্যাগ করেন।
সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এমডি ফয়জার রহমান বলেন, বিজয়ের এই দিনে জুতা পায়ে শহীদ মিনারে উঠে শহীদদের অপমান করে ক্ষুব্ধ জনতার হামলায় আহত হয়ে ওই অধ্যক্ষ বীরমুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত কেবিনে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। পরবর্তীতে আমরা তা জানতে পেরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করি। তিনি আরও বলেন, ওই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুভাষ চন্দ্র সরকার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অধ্যক্ষ যেহেতু মুক্তিযোদ্ধা নন, সে কারনে উনাকে সাধারন বেডে নেয়া হয়েছে। ওই অধ্যক্ষের উন্নত চিকিৎসার জন্য কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।