বুধবার, ০৩ মার্চ ২০২১, ০২:৪৯ অপরাহ্ন
উলিপুর (কুড়িগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা ঃ
কুড়িগ্রামের উলিপুর সরকারি ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বিজয় দিবসের শ্রদ্ধাঞ্জলী জানাতে ক্যাম্পাসের শহীদ মিনার বেদিতে জুতা পায়ে উঠে পুস্পস্তবক অর্পণ করেছেন। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে জুতা পায়ে শহীদ মিনারে অধ্যক্ষের শ্রদ্ধা নিবেদনের ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন মহলে তীব্র সমালোচনার ঝড় উঠে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষুব্ধ জনতা ওই দিন দুপুরে অধ্যক্ষের উপর হামলা ও তার অফিস কক্ষে ভাংচুর চালায়। হামলায় আহত অধ্যক্ষ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জানা গেছে, উলিপুর সরকারি ডিগ্রী কলেজে বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে সোমবার সকালে শহীদ মিনারের বেদিতে কলেজের পক্ষ থেকে পুস্পস্তবক অর্পন করা হয়। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু তাহেরকে জুতা পায়ে বেদিতে উঠে পুস্পস্তবক অর্পন করে ফটোসেশন করতেও দেখা যায়। বেদিতে জুতা পায়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন মহলে তীব্র সমালোচনার ঝড় উঠে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওই দিন দুপুরে একদল জনতা কলেজে ঢুকে অধ্যক্ষকে মারধর করে তার অফিস কক্ষ ভাংচুর করেন। এ সময় তারা অফিস কক্ষে রক্ষিত সিসি ক্যামেরার মনিটর ও পিসি নিয়ে যান। পরে কলেজের অন্যান্য শিক্ষকগণ অধ্যক্ষকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। এদিকে বিকালে মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগ ওই অধ্যক্ষের অপসারন ও শাস্তির দাবীতে শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু তাহেরের মুঠো ফোনে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাঁর স্ত্রী ফোন রিসিভ করে জানান, উনি অসুস্থ্য এখন কথা বলতে পারবেন না।
সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এমডি ফয়জার রহমান জানান, বিজয়ের এই দিনে জুতা পায়ে শহীদ মিনারে উঠে শহীদদের অপমান করা হয়েছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক, আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুভাষ চন্দ্র সরকার বলেন, আহত অবস্থায় সরকারি কলেজের অধ্যক্ষকে হাতপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। উনার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছিলা-ফুলা জখম রয়েছে। বর্তমানে অধ্যক্ষের চিকিৎসা চলছে।
উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোয়াজ্জেম হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অধ্যক্ষ শহীদ বেদিতে জুতা পায়ে উঠার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাকে মারপিট করার কথা শুনেছি। এ ঘটনায় তিনি হাতপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। কলেজের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল কাদের বলেন, জুতা পায়ে শহীদ বেদিতে উঠা দুঃখজনক। বিষয়টি জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অবগত করা হয়েছে।