বেলাল আজাদ,
কক্সবাজার প্রতিনিধি :
কক্সবাজারের টেকনাফে র্যাবের হাতে ৮ লাখ ইয়াবা ও অস্ত্রসহ আটক ৪ জনের মধ্যে আলোচিত নুর হাফেজ ও সোহেল পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গিখালী গাজী পাড়ার পশ্চিমে পাহাড়ে ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধারে গেলে পুলিশের সাথে এ ‘বন্দুকযুদ্ধে’র ঘটনা ঘটে।
এঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আরো ৯৫ হাজার ইয়াবা, ৬টি দেশীয় তৈরী এলজি বন্দুক, ১৮ রাউন্ড তাজা গুলি ও ১৩ রাউন্ড খালি খোসা উদ্ধার করেছে।
নিহতরা হলেন, টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের নয়াবাজার এলাকার দিল মোহাম্মদের ছেলে ও শীর্ষ ইয়াবা কারবারি নুর হাফেজ (৩২) ও হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গীখালী এলাকার সাব্বির আহমদের ছেলে মোহাম্মদ সোহেল (২৭)। এঘটনায় পুলিশের ৫জন সদস্য আহত হয়েছে বলে দাবি করছে পুলিশ।
টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ জানিয়েছেন, ‘গত ১৩ ডিসেম্বর রাতে র্যাব-৭ এর একটিদল ৮ লক্ষ ইয়াবা, ৬ টি আগ্নেয়াস্ত্র সহ শীর্ষ মাদক ও ইয়াবা কারবারি টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের নয়াবাজার এলাকার নুর হাফেজ (৩২), মোহাম্মদ সোহেল (২৭), সৈয়দ হোসেনের ছেলে সৈয়দ নুর (২৭) ও মৃত দলিলুর রহমানের ছেলে সৈয়দ আলম প্রকাশ কালু (৪৫) আটক করে। আটকের পর র্যাব সদস্যরা একই দিন বিকালে টেকনাফ থানার পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন এবং সংশ্লিষ্ট আইনে মামলাও রুজু করা হয়। পরে আটক ইয়াবা কারবারিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাহাড়ে আরো ইয়াবা মজুদের কথা স্বীকার করলে রাতে টেকনাফ থানার এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ইয়াবা উদ্ধারের জন্য অভিযানে নামেন। পুলিশ দল টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গিখালী গাজী পাড়ার পশ্চিমে পাহাড়ে পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গে পূর্ব থেকে উৎপেতে থাকা অন্যান্য ইয়াবাকারবারিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়। এসময় ইয়াবাকারবারিদের গুলিতে টেকনাফ থানা পুলিশের এসআই কামরুজ্জামান, এএসআই মিশকাত, সনজীব দত্ত, কনস্টেবল মহিউদ্দিন, সেকান্দর গুলিবিদ্ধ হয়। এক পর্যায়ে হামলাকারি ইয়াবা কারবারিরা পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থলে তল্লাশী করে ৬টি দেশিয় তৈরি এলজি, ১৮ রাউন্ড কাতুজ, ১৩ কাতুজের খোসা, ৯৫ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট সহ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় নুর হাফেজ (৩২) ও মো: সোহেলকে উদ্ধার করা হয়। আহতদের প্রথমে টেকনাফ স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষনা করেন। আহত পুলিশ সদস্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। মৃতদেহ দুটি ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাপসাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক টিটু চন্দ্র শীল বলেন, ভোরে পুলিশ সাতজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এরমধ্যে পাঁচজন পুলিশ সদস্য। অপর দুইজন সাধারণ মানুষ। তাদের শরীরে দুটি করে গুলির চিহ্ন রয়েছে। তাদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং সকালে পুলিশের পাঁচজন সদস্যকে ছেড়ে দেওয়া হয়।