বুধবার, ০৩ মার্চ ২০২১, ১১:৩২ পূর্বাহ্ন
তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি
রাজশাহীর তানোর উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার, দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ও বিভিন্ন প্রবীণ দলিল লেখকের সুপারিশ ও স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে ভূয়া তথ্য দিয়ে দলিল লেখক নিবন্ধনের ‘লাইসেন্স’ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট সাবরেজিস্ট্রারর ও সমিতির সভাপতির মতামত (প্রতিবেদন) ব্যতিত নীতিমালা লঙ্ঘন করে দলিল লেখকের নিবন্ধন (লাইসেন্স) না দেওয়ার দাবি করেছেন তানোর উপজেলা দলিল লেখক সমিতি। সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী জেলা রেজিস্ট্রার (ডিআর) ও উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ের একশ্রেণীর কর্মচারি বড় অঙ্কের আর্থিক সুবিধা নিয়ে ভূয়া তথ্য দিয়ে জালিয়াতির মাধমে দলিল লেখকের লাইসেন্স প্রদানে সহযোগীতা করে আসছে। বিনিময়ে মাথা পিছু প্রায় এক লাখ টাকা করে আর্থিক সুবিধা নিয়ে এসব কর্মচারি নেপথ্যে থেকে এসব লাইসেন্স প্রদান কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে এই খবর ছড়িয়ে পড়লে রাজশাহীর সাবরেজিষ্ট্রার অফিসের দলিল লেখকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনৈক দলিল লেখক বলেন, তিনি ঢাকা আইজিআর অফিসে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে তানোর সাবরেজিস্ট্রার অফিসের দলিল লেখক নিবন্ধনের অনুমতিপত্র নিয়ে রাজশাহী জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে জমা দিয়েছেন। এখন জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের এক কর্মচারী তার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছেন, এই টাকা দিলেই তার লাইসেন্স হয়ে যাবে। তিনি বলেন, টাকা দিলেই দলিল লেখকের লাইসেন্স পাওয়া যায় কোনো অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয় না। সূত্র জানায়, তানোর সাবরেজিষ্ট্রার কার্যালয়ে ৫০ জন দলিল লেখকের প্রয়োজন থাকলেও ইতিমধ্যে প্রায় ১৮০ জন দলিল লেখককে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আরো প্রায় ৫০টি লাইসেন্স রাজশাহী জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে পক্রিয়াধীন রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, দলিল লেখক নিবন্ধনের বৈধ লাইসেন্স পেতে তিন বছরের বাস্তব অভিজ্ঞতা, প্রবীণ একজন দলিল লেখকের সুপারিশ, এসএসসি সার্টিফিকেট, কম্পিউটার সার্টিফিকেট, সংশ্লিষ্ট সাবরেজিস্ট্রার ও সমিতির সভাপতির মতামত প্রয়োজন। কিšত্ত এসব নিয়মনীতি লঙ্ঘন করে আইজিআর, জেলা রেজিস্ট্রার ও সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ের দূর্নীতিবাজ একশ্রেণীর কর্মচারী অবৈধভাবে লাইসেন্স প্রদানে সহায়তা করে চলেছে। আর এই সুযোগে বিভিন্ন এলাকার একশ্রেণীর টাউট-বাটপার দলিল লেখকের লইসেন্স নিয়ে জমি জালিয়াতির ঘটনায় জড়িয়ে পড়ছে। ফলে এসব কথিত দলিল লেখকদের কারণে প্রতিনিয়ত জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ বাড়ছে। তিন বছরের বাস্তব অভিজ্ঞতা, প্রবীণ একজন দলিল লেখকের সুপারিশ, এসএসসি সার্টিফিকেট, কম্পিউটার সার্টিফিকেট, সংশ্লিষ্ট সাবরেজিস্ট্রার ও সমিতির সভাপতির মতামত নিয়ে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে দলিল লেখকের লাইসেন্স প্রদানের জন্য জেলার দলিল লেখকগণ সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এব্যাপারে তানোর উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি তাসির উদ্দীন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, তানোরে ৫০ জন দলিল লেখকের প্রয়োজন থাকলেও প্রায় ১৮০ জন দলিল লেখক রয়েছে। তার পরেও যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে দলিল লেখকের লাইসেন্স দেয়া হলে তাদের কোনো আপত্তী নেই। তবে রাজনৈতিক বিবেচনায় ও আর্থিক সুবিধা নিয়ে অযোগ্য ব্যক্তিদের লাইসেন্স না দেওয়ার জন্য তারা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করেছেন। #