সোমবার, ১৯ এপ্রিল ২০২১, ০৮:৪২ পূর্বাহ্ন
তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি
রাজশাহীর তানোরে পলী বিদ্যুতের একশ্রেণীর দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীর কারণে বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) গভীর নলকুপ সেচ প্রকল্প হুমকির মূখে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে আগামী দিনে সেচ নিয়ে এলাকার হাজার হাজার কৃষক উদ্দিগ্ন হয়ে উঠেছে। সূত্র জানায়, স্থানীয় পলী বিদ্যুৎ সমিতির একশ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারির বেপরোয়া ঘুষ বাণিজ্য বিএমডিএর সেচ প্রকল্পকে হুমকির মূখোমূখি দাঁড় করিয়েছে। এতে পলী বিদ্যুতের এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর পকেটভারী হলেও সেচ প্রকল্পের ভবিষ্যত নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা জানান, তানোরে পলী বিদ্যুতের দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে খাবার পানির মটর (আবাশিক) ও বাণিজ্যিক (শিল্প-মৎস্যচাষ) সংযোগ থেকে মটর মালিকদের সেচ বাণিজ্যর সুযোগ করে দিচ্ছেন। ফলে তানোরে উপজেলা সেচ কমিটির অনুমোদন ব্যতিত অবৈধ সেচ পাম্প স্থাপনের প্রতিযোগীতা শুরু হয়েছে। এদিকে মটর মালিকগণ সেচ নীতিমালা লঙ্ঘন এবং উপজেলা সেচ কমিটির অনুমোদন ব্যতিত আবাশিক ও বাণিজ্যিক মটর থেকে সেচ বাণিজ্য করে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। আর আর্থিক সুবিধা দেয়ার টাকা উসুল করতে সাধারণ কৃষকদের জিম্মি করে মটর মালিকগণ মাত্রাতিরিক্তভাবে সেচচার্জ আদায় করায় কৃষকের লাভের গুড় পিঁপড়ায় থাচ্ছে। অন্যদিকে এসব আবাশিক-বাণিজ্যিক মটর থেকে সেচ বাণিজ্য করায় একদিকে বিএমডিএ’র সেচ প্রকল্প হুমকির মূখে পড়েছে অন্যদিকে হস্তচালিত নলকুপ অকেজো হয়ে পড়ায় এলাকায় খাবার পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে,বৃহত্তর বরেন্দ্র অঞ্চলে ভূগর্ভস্ত পানির স্তর দ্রুত নিচে নেমে যাওয়ায় নতুন করে গভীর-অগভীর সেচ মটর (পাম্প) স্থাপন বন্ধ করে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে পরিপত্র জারি করা হয়েছে। অথচ তানোরের মুন্ডুমালা পৌর এলাকার চুনিয়াপড়া (পশ্চিম) গ্রামের ইদ্রিস আলীর পুত্র সেতাবুর দুটি মটর (খাবার পানি) স্থাপন করে সেচ বাণিজ্য করছে এবং একই গ্রামের মৃত পূর্ণ কারীগরের স্ত্রী শান্তি রানীর বাড়ির আবাশিক মিটার থেকে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে চিনাশো গ্রামের ইসমাইল হোসেনের পুত্র ইনসান আলী ও কাজেল উদ্দিনের পুত্র রফিকুল ইসলাম তারা তাদের বাড়ির আবাশিক বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে (খাবার পানি) মটর থেকে অবৈধভাবে সেচ বাণিজ্য করে হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মটর মালিক জানান, পলী বিদ্যুৎ সমিতি জরিমানার নামে প্রতি মাসে ব্যবহৃত বিদ্যুৎ বিলসহ মিটার প্রতি ১৫০০ টাকা ও লাইনম্যানের নামে ৫০০ টাকা করে নিয়ে এসব মটরের অবৈধ সেচ বাণিজ্যর বৈধতা দিচ্ছে। ফলে অবৈধভাবে মটর মালিকগণ হাজার হাজার টাকার সেচ বাণিজ্য করে জরিমানার নামে ১৫০০ ও লাইনম্যানের ৫০০ টাকা দিয়ে সহজেই পার পাচ্ছেন। অথচ সেচ নীতিমালা অনুযায়ী উপজেলা সেচ কমিটির অনুমোদন ব্যতিত আবাশিক বা বাণিজ্যিক সংযোগ থেকে সেচ দেয়া হলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কথা বলা হয়েছে। এব্যাপারে জানতে চাইলে তানোর পলী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা (এজিএম) সানোয়ার হোসেন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আবাশিক ও বাণিজ্যিক মটর থেকে সেচ দেয়ার অভিযোগ পেলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এব্যাপারে বিএমডিএ তানোর জোনের সহকারী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম বলেন, এসব মটরের অবৈধ সেচ বাণিজ্য বন্ধ করা না হলে আগামিতে ভয়াবহ পানি সংকট দেখা দিবে, তাই এই বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। #