মঙ্গলবার, ০২ মার্চ ২০২১, ০৪:৩১ অপরাহ্ন
রায়/আসিফ কাজল: নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের দায় মাথায় নিয়ে দুই শীর্ষ নেতা রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানীকে ছাত্রলীগ থেকে বিদায় নিতে হয়।এরই প্রেক্ষিতে গত ১৪ সেপ্টেম্বর ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান আল নাহিয়ান খান জয় ও লেখক ভট্টাচার্য্য।দায়িত্ব গ্রহণের দেড়মাসেও সাংগঠনিক কার্যক্রমের দৃশ্যমাণ কোনো অগ্রগতি দেখাতে পারেনি এ দুই শীর্ষ নেতা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে গত ৩১ মে ৩০১ সদস্যবিশিষ্ট নতুন কমিটি ঘোষণা করে ছাত্রলীগ।কমিটি ঘোষণার পর থেকেই একের পর এক আসতে থাকে অভিযোগ।এরই প্রেক্ষিতে ২৮ দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজু ভাস্কর্যে আন্দোলন করেন পদবঞ্চিত ছালীগের সাবেক ও বর্তমান ৫০ নেতা।তাদের অভিযোগ ছিলো মাদকাসক্ত, বিবাহিত, বহিষ্কৃত, মামলার আসামি, বয়সোত্তীর্ণ, চাকরিসহ অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত এমন নেতাদের কমিটিতে রাখা হয়।এখানেই শেষ নয়, ছাত্রলীগের একটি অংশ নতুন কমিটির ১০৭ জনের বিরুদ্ধে এমন নানা অভিযোগ তুলেন।সব শেষে ওই কমিটির শীর্ষ দুই নেতা শোভন ও রাব্বানী ১৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগের একটি তালিকা প্রকাশ করে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন।একই সঙ্গে পদবঞ্চিত ছাত্রলীগ থেকে ওই শূণ্যস্থান গুলো পুরণ করা হবে বলেও ঘোষণা দেন তারা।কিন্তু শোভন ও রাব্বানীর বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে পদচ্যুত করা হয়।পরে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দেওয়া হয় জয় ও লেখককে।কিন্তু তার ১ মাস ১২ দিনেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি।একই সঙ্গে সাংগঠনিক কর্যক্রমের কোনো অগ্রগতি দেখাতে পারেনি।
তবে পদবঞ্চিত ছাত্রলীগ নেতারা বলেন, অভিযুক্ত ১৯ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ হয়েছে।এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ব্যবস্থা নিতে বলছিলেন।কিন্তু ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক আবারও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলছেন।সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বিষয় নিজেদের মধ্যে সমন্বয় এবং আস্থাহীনতায় ভুগছেন তারা।তারা এখন পর্যন্ত কেদ্রীয় কমিটিই ঠিক করতে পারেননি।ফলে তারা জেলা-উপজেলা কমিটি কিভাবে দেবেন।তারা আসলে শোভন ও রাব্বানীর কপি পেস্ট।
পদবঞ্চিত ও ছাত্রলীগের সাবেক সমাজ সেবা সম্পাদক রানা হামিদ বলেন, ছাত্রলীগের সাবেক দুই শীর্ষ নেতা শোভন-রাব্বানীর পথেই হাটছেন বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।দেড়মাসেও তারা বিগত দিনের জঞ্জাল পরিস্কার করতে পারেনি।তারা এখন পর্যন্ত সংগঠনের সাংগঠনিক কোনো কাজই এগিয়ে নিতে পারেননি।বরং ছাত্রলীগ এখন যে সঙ্কটে রয়েছে, বিগত দিনে এমন অবস্থায় কখনও সংগঠনটি পরেনি।
ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা পালন করার চেষ্টা করছি।ছাত্রলীগের পরবর্তী সম্মেলনের বাকি মাত্র ৯ মাস।আমরা নিয়মিত সংগঠনের কার্যালয় ও মধুর ক্যান্টিনে সময় দিচ্ছি। নেতাকর্মীদের অভিযোগ শুনছি।এছাড়াও অভ্যন্তরীন সমস্যা নিরসনে কাজ করছি।
তিনি আরো বলেন, দ্রুত সমেয়র মধ্যে ১১১টি ইউনিটের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে।এছাড়াও যেসব জেলাগুলোর কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে।ওইসব জেলাগুলোর সম্মেলন আগামী নভেম্বর মাস থেকে শুরু হবে।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্য বলেন, গত কমিটি ১৯ জনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ পেয়েছিলো।এছাড়া আমরা আরও প্রায় ১৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। তাদের বিষয়ে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে।অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, আমার আগামী সম্মেলনের আগে সারা দেশে কমিটিগুলো দেয়ার চেষ্টা করছি।এতে করে ওইসব কমিটির কাউন্সিলররা আগামী সম্মেলনে ভোট দিতে পারবেন।এ কাজগুলো দ্রুত সময়ের করা হবে। সম্পাদনা : সারোয়ার