মঙ্গলবার, ১৩ এপ্রিল ২০২১, ০৩:৫৬ পূর্বাহ্ন
সোমবার সকালে করোনাভাইরাস বিষয়ে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে শেরপুর জেলাসহ আরো কয়েকটি জেলার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে তিনি ভিক্ষুক নাজিমউদ্দিন প্রসঙ্গে এ মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শেরপুরের এক কৃষক…নাম নাজিমউদ্দিন; তিনি ভিক্ষা করে চলেন। একেবারেই সাধারণ মানুষ; একসময় কৃষিকাজ করতেন। অ্যাক্সিডেন্টে তার পা ভেঙে যায়, তারপর আর কাজ করতে পারেনি। এখন ভিক্ষা করেন! ভিক্ষা করে করে দশ হাজার টাকা তিনি জমিয়েছিলেন, থাকার ঘরটা ঠিক করবেন বলে; মাত্র একটা ছেঁড়া কাপড় তার গায়ে। ঘরে ঠিকঠাক খাবারও নেই। তারপরও সেই মানুষটা তার জমানো ১০টি হাজার টাকা তুলে দিয়েছে- করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের জন্য।’
শেখ হাসিনা বলেন, তার মতো নিঃস্ব মানুষ যা করেছেন, এতবড় মানবিক গুণ সমাজের অনেক বিত্তশালীর মধ্যেও নেই। তার কাছে তো ১০ হাজার টাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। ওই টাকা দিয়ে তিনি জামা-কাপড় কিনতে পারতেন, ঘরের খাবার কিনতে পারতেন। কিচ্ছু ভাবেননি তিনি। তারপরও তার শেষ সম্বলটুকু তিনি দান করেছেন।
সমাজের স্বচ্ছল ও বিত্তবানদের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে কিছুটা আক্ষেপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসলে তিনি (ভিক্ষুক নাজিমউদ্দিন) যে উদারতাটা দেখিয়েছেন, বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে কিন্তু এই মানবিক বোধটা এখনো আছেই; কিন্তু সেটা আমরা পাই শুধু নিঃস্বদের কাছেই। অনেক সময় দেখি বিত্তশালীরা শুধু হা-হুতাশ করে বেড়ায়। তাদের মধ্যে নাই নাই অভ্যাসটাই যায় না; চাই চাই ভাবটাই যেন সবসময় থেকে যায়।
উল্লেখ্য, গত ২১ এপ্রিল শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের গান্ধীগাঁও গ্রামের নাজিমউদ্দিন তার জমানো ১০ হাজার টাকা করোনায় দুর্গতদের সহায়তায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হাতে তুলে দেন। গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নাজিমউদ্দিনের এই ‘মানবিকতার খবর’ ছড়িয়ে পড়লে- তা নজর কাড়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েরও। এরই পরিপ্রেক্ষিতে, বৃদ্ধ ভিক্ষুক নাজিমউদ্দিনকে সরকারের পক্ষ থেকে জমিসহ ঘর নির্মাণ আর জীবিকার জন্য মুদি দোকান করে দেয়া হচ্ছে।