jahir
- ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ / ৩০ জন দেখেছেন
বেলাল আজাদ, কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি:
কক্সবাজার আদালতে পিতামাতার ভরণপোষণ আইনের প্রথম মামলা (সি.আর.নং-২৬৬/২০১৬) দায়েরকারী ৮৫ বছরের অশীতিপর মৃত্যু শয্যাশায়ী বৃদ্ধা মাহমুদা খাতুনের বেলায় সত্যিই যেন বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে! নিজের একমাত্র গর্ভজাত ছেলে ও ২ নাতীর ধারাবাহিক অত্যাচারে, অবহেলায়, লুটপাটে ও মারধরে অতিষ্ট হয়ে একে একে ৩ টি মামলা করেও, বহুবার পত্রিকার শিরোনাম হয়েও পায়নি ভরণপোষণ, মিলেনি নিজগৃহে ঠাঁই। অবশ, অসুস্থ, অসহায় বৃদ্ধা মাহমুদা খাতুন ন্যায় বিচার না পেলেও তার অত্যাচারী ছেলে সব ক’টি মামলা থেকে ঠিকই অব্যাহতি পেয়েছে।
বৃদ্ধা মাহমুদা খাতুন ২০১৬ সালের ২০ সেপ্টেম্বর পিতামাতার
ভরণ পোষণ আইনে কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২য় (উখিয়া) আমলী আদালতে তার একমাত্র ছেলে সিরাজ আহমদ ও দূই নাতী আবদুল খালেক-মাহমুদুল হকের বিরুদ্ধে ১ম মামলাটি (সি.আর-২৬৬/
২১৬) দায়ের করেন। পিতামাতার ভরণপোষণ আইনে দায়ের কক্সবাজার জেলার এটিই ১ম মামলা। সে মামলায় আসামীরা জামিনে মুক্তি (ধারা জামিনযোগ্য) পেয়ে আদালতের নির্দেশনা মতে বাদীকে ভরণপোষণ দেওয়ার বদলে উল্টো নির্মম নির্যাতন করে নিজের বসত ঘর থেকে বাহির করে দেয়। ছেলের এমন নিষ্ঠুর অত্যাচারে অতিষ্ঠ বৃদ্ধা মাহমুদা খাতুন অনন্যোপায় হয়ে শারীরিক নির্যাতন সহ মারধর করার ও নিজের বসতগৃহ হইতে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে ২০১৭ সালে সি.আর-২১৭/২০১৭ ও ২০১৮ সালে সি.আর-২৭১/২০১৮ নং মামলা করেন। এছাড়াও একমাত্র ছেলে সিরাজ আহমদ কতৃক তার বৃদ্ধা মা মাহমুদা খাতুনকে ধারাবাহিক নির্যাতনের ঘটনায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বার ও উখিয়া থানার পুলিশ বহুবার সালিশ-বিচার করলেও বৃদ্ধা মাহমুদা ছেলের অত্যাচার থেকে নিষ্কৃতি পায়নি বরং দিন দিন অত্যাচারের মাত্রা বেড়েছে।
এই বিষয়ে বহুবার বিভিন্ন পত্রিকার শিরোনামও হয়েছেন তিনি ও তার অত্যাচারী ছেলে সিরাজ আহমদ।
নিজের একমাত্র ছেলের দ্বারা এমন নিষ্ঠুর নির্যাতিত আলোচিত বৃদ্ধা মাহমুদা খাতুন উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের সোনারপাড়া বাজারপাড়া এলাকার মৃত আবদুর রহমানের স্ত্রী। স্থানীয় বাসিন্দা আবদু ছালাম, এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য আবু তাহের, বর্তমান ইউপি সদস্য রফিক আহমদ ও জালিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চৌধুরী সহ অনেকেই ছেলে সিরাজ আহমদ কতৃক তার অসহায় বৃদ্ধা মা কে নির্যাতনের ঘটনা সম্পর্কে অবগত এবং তারা এক বাক্যেই সেটা স্বীকার করে বলেন, এ ঘটনায় অনেকবার সালিশ-বিচার করে দিলেও ছেলে সিরাজ আহমদ মানে না।
বৃদ্ধা মাহমুদা খাতুন বার্ধক্যতা ও অসুস্থ্যতায় অচল হয়ে পড়ায় আদালতে হাজিরা দিতে যেতে অপারগতায় তার দায়েরকৃত ৩টি মামলাই বাদীর অনুপস্থিতিতে খারিজ হয়ে যায়। বর্তমানে নিজের কন্যা রহিমা খাতুনের ঘরে আশ্রিত মৃত্যু শয্যাশায়ী মাহমুদা খানুন (৮৪) বিনা চিকিৎসায় ও চরম দূরাবস্থায় মৃত্যুর প্রহর গুনলেও নিষ্টুর ছেলে সিরাজ আহমদ তার মায়ের এতটুকু খোঁজ-খবর নেওয়া দূরে থাক নিজগৃহেও ঠাঁই দেয় না। বৃদ্ধা মাহমুদা খাতুন জানান, ছেলে সিরাজ আহমদ তার পিতা আবদুর রহমানের জীবদ্দশায় কোন দিন বাপ ডাকেনি, তাকে মা বলে ডাকে না অনেক বছর ধরে। এলাকার সচেতন মহল অত্যাচারী ছেলে সিরাজ আহমদের শাস্তি দাবী করেন।