অভয়নগরে মানবপাচার সিন্ডিকেট চক্রের কারণে অসহায় মেহেদী হাসান আজও ফেরেনি
মোঃ কামাল হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধি
যশোরের অভয়নগরে মানবপাচার সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে সদর উপজেলার সতীঘাটা গ্রামের সুলতান গাজীর ছেলে মেহেদী হাসান হৃদয়(২৫) নামের এক যুবকক আজও তার পরিবারের কাছে ফেরেনি, এব্যাপারে ওই যুবকের স্ত্রী ২০২২ সালের ২৫ জুলাই নিজ স্বামীকে ফেরত পেতে বাদি হয়ে ৩ জনকে আসামি করে বিজ্ঞ আদালতে একটি মানবপাচার মামলা করেছেন যার মামলা নং পাচার-১৫/২২ ধারা ২০১২ সালের মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনের ৭/৮ ধারা। মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২০২২ সালের ২০ এপ্রিল সকল আসামি বাদিনীর পিত্রালয়ে সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামে এসে তার স্বামীকে ইরাকে ভালো চাকরি দেবে মর্মে মৌখিক ভাবে প্রলোভোন দেখায়। ফলে, আসামিদের কথায় ভুক্তভোগী ও ভিকটিম সরল মনে বিশ্বাস করে নগদ ৩,৫০,০০০ (তিন লাখ পঞ্চাশ হাজার) টাকা ও পাসপোর্ট নিয়ে অঙ্গিকার করে চলে যায়। তারপর গত ২০২২ সালের ৮ মে সকল আসামি ভুক্তভোগীর বাড়ি এসে ইরাকে চাকুরি হয়েছে বলে তার স্বামী মেহেদী হাসান হ্নদয়কে সাথে করে নিয়ে চলে যায়। পরবর্তীতে ভূক্তভোগী পরিবারদের আসামিগণ জানান, মেহেদী হাসান হৃদয় বিদেশ গিয়ে আটক হয়েছে তাকে বাঁচাতে হলে আরো টাকা দিতে হবে। ভুক্তভোগী পরিবার উপান্তর না পেয়ে পাচারকারী চক্রের ব্যাংক একাউন্টে দুই বারে আরো তিন লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা দিলেও আজও সেই মেহেদী হাসান হৃদয়ের সন্ধান পায়নি তার পরিবার। ফলে, কোন উপায় না পেয়ে ভুক্তভোগী যশোর সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের কবির হোসেনের মেয়ে সুমাইয়া ইয়াসমিন(২১) বাদি হয়ে বিজ্ঞ মানব পাচার অপরাধ প্রতিরোধ ও দমন ট্রাইব্যুনাল – ১ নং আদালতে মামলাটি করেন। ওই মামলায় আসামিরা হলেন, যশোর অভয়নগর উপজেলার মশরহাটি ভাঙ্গাগেট এলাকার মৃত- মুন্নাফ এর ছেলে মোঃ মোসলেম(৪০), মোঃ মোসলেমের স্ত্রী নাসরিন সুলতানা(৩২), গোলাম হোসেনের ছেলে জিহাদ কামাল (জিতু)(২৫)। এদের মধ্যে ১ নং আসামি মোঃ মোসলেম বতর্মানে ইরাক প্রবাসী, নাসরিন সুলতানা ও জিহাদ কামাল গত ৬ নভেম্বর আদালতে হাজিরা দিলে আদালত জামিন বাতিল করে জেলে প্রেরণ করে। এবিষয়ে ভূক্তভোগী সুমাইয়া ইয়াসমিন কান্না জড়িত কন্ঠে জানান, ওই আসামিরা আমার স্বামীকে ইরাকে পাঠাবে বলে নিয়ে গেল, এখনো পর্যন্ত আমার স্বামীর কোন খোঁজ পাইনি, ওই আসামিরা আমার স্বামীকে কি হত্যা করলো নাকি? কি করলো? কিছুই বুঝছিনা। তিনি আরো জানান, আমার স্বামীকে আমি ফেরত চাই, লাশ হলেও আমি ফেরত চাই, আপনারা আমাকে সহযোগিতা করুন, এইসব কথা বলতে বলতে তিনি হাউ মাউ করে কান্না করতে থাকেন।