রংপুর বিভাগীয় প্রতিনিধি: উত্তরাঞ্চলের এলাকায় বসবাসরত নানা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও ভাষাভাষীর মানুষের মাতৃভাষা সংকটে রয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক চর্চাকেন্দ্র ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা না পাওয়ার কারণে তাদের মাতৃভাষা, নিজস্ব কৃষ্টি ও সংস্কৃতি হুমকির মুখে পড়েছে। গাইবান্ধার সাত উপজেলার মধ্যে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বসবাস শুধু গোবিন্দগঞ্জ ও সাদুল্লাপুর উপজেলায়। সাঁওতাল, ওরাওঁ, মাহালী ও মালপাহাড়ি নামের চারটি সম্প্রদায়ের ছয়-সাত হাজার মানুষ বসবাস করেন গাইবান্ধার রাজাবিরাট, জয়পুরসহ বিভিন্ন গ্রামে। সাঁওতালি সারি, কুরুক ও সাদরি ভাষায় কথা বলেন এখানকার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ওরাওঁ এবং সাঁওতালরা। এখানকার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের প্রায় অর্ধেক মানুষই বর্তমানে লেখাপড়া শিখে চাকরি করছেন। এর ফলে মাতৃভাষায় নিজেদের মধ্যে কথা বললেও কোনো বর্ণমালা না থাকায় তাদের কোনো ছাপানো বই নেই। নিজেদের মাতৃভাষার হরফ, বই-পুস্তক ও শিক্ষক না থাকায় নিজস্ব ঐতিহ্য রক্ষায় বেশ সমস্যায় পড়েছেন তারা। বাংলা বা ইংরেজি হরফে তাদের ভাষায় কিছু বই থাকলেও নিজেদের মাতৃভাষা কেবল মুখে মুখেই ঘুরছে। কোনো বই বা দলিলে সংরক্ষিত হচ্ছে না এসব ভাষা। মিশনারী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী নেত্রী ও সমাজসেবক এমিলি হেমব্রম বলেন, বর্তমানে গোবিন্দগঞ্জ ও সাদুল্লাপুর উপজেলাসহ পার্শ^বর্তী জেলা জয়পুরহাট ও দিনাজপুরের কয়েকটি অঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের শতকরা ৪৫ থেকে ৫০ ভাগ মানুষ শিক্ষিত হয়ে চাকরি করছেন। তারা বাংলা বা ইংরেজি ভাষায় কথা বলতে বাধ্য হচ্ছেন। সেভেন্থ ডে অ্যাডভেন্টিস্ট প্রি সেমিনার মিশন স্কুলের শিক্ষিকা দিপালী কিস্কু বলেন, সাঁওতালী, ওরাওঁ বা অন্য ভাষাগুলো নিজেদের মধ্যে চালু থাকলেও বাস্তব জীবনে তা প্রয়োগ করা যাচ্ছে না। নিজস্ব বর্ণমালা না থাকায় ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে বসেছে এসব ভাষা।