আইপিএলে একেকবার একেক ফ্র্যাঞ্চাইজিতে খেলেছেন মোস্তাফিজ। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, মুম্বাই ইন্ডিয়ানস, রাজস্থান রয়্যালস, দিল্লি ক্যাপিটালস, চেন্নাই সুপার কিংস-২০১৬ সালে আইপিএলে অভিষেকের পর থেকে সর্বশেষ আসর পর্যন্ত পাঁচটি ফ্র্যাঞ্চাইজি তাকে দলে নিয়েছিল।
এবার ২০২৫ আসরের নিলামে মোস্তাফিজের মতো চোখ থাকবে লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনের দিকেও। তার দল পাওয়ার সম্ভাবনাই-বা কতটুকু?
চেন্নাই সর্বশেষ নিলামে মোস্তাফিজকে ২ কোটি রুপিতে কিনেছিল। গত মৌসুমে আইপিএলে তিনিই ছিলেন বাংলাদেশের একমাত্র ক্রিকেটার। চেন্নাইয়ের হয়ে নিজের প্রথম মৌসুমেই ‘দ্য ফিজ’ যা করেছেন, তার পেছনে ফ্র্যাঞ্চাইজিটির বিনিয়োগকে সার্থক বলতেই হবে। ৯ ম্যাচ খেলে উইকেট নিয়েছেন ১৪টি।
মোস্তাফিজকে চেন্নাই দলে নেওয়ার পর থেকেই ধারণা করা হচ্ছিল, ঘরের মাঠের ‘ধীরগতি’র উইকেটের সুবিধা নিতে মোস্তাফিজকে কিনেছে চেন্নাই, যা তিনি ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছেন।
উইকেটের হিসাবে এটি ছিল যৌথভাবে মোস্তাফিজের দ্বিতীয় সেরা মৌসুম। এর আগে ২০২১ সালে রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে ১৪ ম্যাচে ১৪ উইকেট নিয়েছিলেন মোস্তাফিজ। আর তার সর্বোচ্চ ১৭ উইকেট এসেছিল ২০১৬ সালে।
মোস্তাফিজ ওভারপ্রতি রান খরচ করেন ৯.২৬। খরুচে মনে হলেও আইপিএলের গত মৌসুমে যেভাবে রান উঠেছে, ইকোনমিটা খুব বেশি নয়। সবচেয়ে বড় বিষয়, সতীর্থ লঙ্কান পেসার মাতিশা পাতিরানার সঙ্গে দারুণ জুটি গড়ে উঠেছিল তার। মানে মোস্তাফিজ তার কাজটা করেছেন।
তবে এরপরও ২০২৫ আইপিএলের জন্য তাকে রিটেইন (ধরে রাখা) করেনি চেন্নাই সুপার কিংস। চেন্নাই ধরে রাখে রুতুরাজ গায়কোয়াড়, মাতিশা পাতিরানা, শিবম দুবে, রবীন্দ্র জাদেজা ও মহেন্দ্র সিং ধোনিকে। রিটেইন না করলেও চেন্নাইয়ে মোস্তাফিজের খেলার সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়নি।
অনেক হিসাবের মারপ্যাঁচ করে দলগুলো ক্রিকেটার ধরে রাখে। তাই খেলোয়াড় ছেড়ে দিলেও পরে নিলামে অনেক পুরোনো ক্রিকেটারকেই কিনতে দেখা যায় দলগুলোকে। মোস্তাফিজের ক্ষেত্রেও এমনটাই করতে পারে চেন্নাই। কারণ, চেন্নাই স্কোয়াডে খুব বেশি অদলবদল করতে পছন্দ করে না।
চেন্নাই না কিনলেও পারফরম্যান্স বিবেচনায় অন্য কোনো দলে সুযোগ পেতেই পারেন মোস্তাফিজ। অর্থাৎ, দল পাওয়ার ভালো সম্ভাবনাই আছে এই পেসারের।
তবে আগামী বছরের মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে বাংলাদেশ দলের জিম্বাবুয়ে ও পাকিস্তানের বিপক্ষে দুটি ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলার কথা। আইপিএলও একই সময়ে। নিলামে দল পাওয়ার ক্ষেত্রে এই সিরিজ দুটির বড় প্রভাব থাকতে পারে।
মোস্তাফিজের মতো রিশাদও সাদা বলের ক্রিকেটের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। তাই তার দল পাওয়ার ক্ষেত্রেও এই সিরিজ দুটির প্রভাব পড়াটাই প্রত্যাশিত। আবার গত মাসে ভারতের বিপক্ষে তাদের মাটিতে খেলা টি-টোয়েন্টি সিরিজে রিশাদ ভালোও করতে পারেননি। ৩ ম্যাচে উইকেট পেয়েছেন ৩টি, রান দিয়েছেন ওভারপ্রতি ১৪.১১ করে।
তবে লেগ স্পিনারদের প্রতি আইপিএলের দলগুলোর বিশেষ চাহিদা থাকে। সে কারণে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ১৪ উইকেট নেওয়া এই স্পিনারেরও কপাল খুলতে পারে।
রিশাদ, মোস্তাফিজ ছাড়া বাংলাদেশের আরও ১০ ক্রিকেটার আছেন আইপিএলের মেগা নিলামে। সৌদি আরবের জেদ্দায় যে নিলাম অনুষ্ঠিত হবে ২৪ ও ২৫ নভেম্বর। এই নিলাম থেকে ১০টি দল কিনে নেবে ৭০ বিদেশি ক্রিকেটারকে।