কোটাবিরোধী আন্দোলনে সহিংসতায় টোল প্লাজায় ভাঙচুর ও পুড়িয়ে দেওয়ায় আপাতত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই উড়ালপথের নির্মাতা ও পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (এফডিইই) কোম্পানি লিমিটেড।
দুটি টোল প্লাজা পুড়িয়ে দেওয়া এবং দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বুধবার (২৪ জুলাই) জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স বিভাগের ব্যবস্থাপক হাসিব হাসান খান।
তিনি বলেন, আমাদের দুটি টোল প্লাজা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে গেছেন। এ অবস্থায় সিদ্ধান্ত হয়েছে কারফিউ না উঠলে, দেশের পরিস্থিতি একদম স্বাভাবিক না হলে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ থাকবে।
কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত বৃহ্স্পতিবার রাতে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বনানীর টোল প্লাজা ভাঙুচর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। শুক্রবার মহাখালীর টোলপ্লাজায় আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
আগুনে টোল প্লাজার ছাউনি, টোলের বুথ এবং অপারেটিং সিস্টেম পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র, কম্পিউটারসহ যন্ত্রপাতি।
হাসিব হাসান খান বলেন, বনানী টোল প্লাজা সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। আমাদের টোল বুথ, সিস্টেম পুড়ে গেছে। সবকিছু মিলিয়ে একটা আধুনিক ইউনিট। নতুন করে আবার ক্যামেরা আনা, অন্যান্য যন্ত্রপাতি, প্রযুক্তি স্থাপন করা একটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এগুলো দেশের বাইরে থেকে আমদানি করে আনতে হবে। ফলে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু হতে ঠিক কতদিন সময় লাগবে তা বলা যাচ্ছে না।
ক্ষতিগ্রস্ত দুটি টোল প্লাজায় ‘ম্যানুয়ালি’ টোল আদায় করা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এটা নিয়ে কর্তৃপক্ষ আলোচনা করেছে। যদি যানবাহন চলাচল শুরু হয় তাহলে ওই দুটি টোল প্লাজা ম্যানুয়ালি চালানো সম্ভব। তবে এ বিষয়ে এখনও আমরা সিদ্ধান্ত নিইনি।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের পরিচালক এ এইচ এম সাখাওয়াত আখতার বলেন, আমরা নির্মাতা ও পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। এখনও দেশের অবস্থা স্বাভাবিক হয়নি। অবস্থা মোটামুটি ভালো হলে আমরা এটি চালু করে দেব।
দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের আওতায় হযরত শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত যাবে। সংযোগ সড়কসহ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য হবে ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার।
২০২৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশে যান চলাচল উদ্বোধন করেন। এতে যান চলাচল শুরু হয় পরদিন ৩ সেপ্টেম্বর।
এরপর চলতি বছরের ২০ মার্চ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কারওয়ানবাজার র্যাম্প খুলে দেওয়া হয়।