কথায় কথায় ছ্যাৎ ছ্যাৎ করে ওঠাদের দেখেছি আবার যে কোন পরিস্থিতিতে নিজেকে সামলানো ব্যক্তিকেও
দেখেছি, পান থেকে চুন খসলে যাদের ভিন্নরূপ প্রকাশিত হয় তাদেরকেও দেখেছি আবার অপরের দ্বারা
ক্ষতিগ্রস্ত হয়েও হাসি মুখে বলতে দেখেছি এমন ভুল হতেই পারে, কোন কিছুতে বিন্দুমাত্র ছাড় দিতে
নারাজদেরকেও দেখেছি আবার নিজের অধিকারের চেয়ে অপরের অধিকারকে বড় করে দেখাদেরকেও দেখেছি। সব
কিছু নিজের করতে হবে এমন মনোভাবের মানুষকেও দেখেছি আবার নিজের পছন্দকে হাসিমুখে অপরকে উপহার
প্রদানকারীকেও দেখেছি! জীবনে আসলে অনেক কিছুই দেখতে হয়! অনেককিছু দেখতে না চাইলেও চোখে পড়ে যায়!
মাঝে মাঝে চোখ খোলা রাখতে হয়!
দু'পক্ষের মধ্যে কোনপক্ষ জিতেছে, কোন পক্ষ লাভ করেছে বেশি সে সব হিসেব থাক! নিজেকে ভালো রাখা, কেবল
নিজের ভালো থাকা, ভালোর মহোত্তম রূপ নয়। ঘিরে থাকা প্রিয়জন, চলতি পথে দেখা হওয়া প্রয়োজন-সবার সব
স্বার্থকে, সব পাওনাকে, সব অধিকারকে উপেক্ষা করে, হরণ করে, দমন করে আদৌ কি ভালো থাকা যায়? পদে
পদে খুঁত খোঁজা, কথায় কথায় দোষ ধরা-এমন ব্যক্তিকে কি কেউ পছন্দ করে? বোধহয় না! ইচ্ছায় না! নিজেকে
ভালো রাখার জন্য, নিজের ভালো বোঝার জন্য পরিবারকে বোঝার, পরের মতকে অগ্রাধিকার দেয়ার মানসিকতা
থাকতে হবে। একা ভালো থাকব-এই প্রয়াস মূর্খের। কাউকে ব্যথা দিয়ে, কাউকে কেবল কটু কথা বলে-ভালোতো
আসলে থাকা যায় না! এসব খুব একটা আলো মেনে লয় না।
যারা অপরের কেবল ভুল ধরে তারাই জীবনে সবচেয়ে বড় বড় ভুলগুলো করে। ভুলগুলো তাদের মস্তিষ্কে গেঁথে যায়।
পাশাপাশি চলা অথচ একচুল ছাড় না দেয়া টাইপের মানুষগুলো মানসিকভাবে আদৌ সুস্থ কি-না সে প্রশ্ন
উত্থাপনের অবকাশ থেকেই যায়! যা আমি ভালোবাসা দিয়ে মঞ্জুর করাতে পারি সেখানে আমি কটুবাক্যের প্রয়োগ
কেন করবো? যারা কারণ-অকারণ বড্ড বেশি গালাগাল করে তারা মানুষ হিসেবে সুবিধার? মনে হয় না! যে মানুষের
আচরণে কাছের মানুষ বিরক্ত সে মানুষ জগতের সর্বত্রই ত্যক্তকারী! এরা সব জায়গাতেই ব্যস্ত! নিজের
ভালো বোঝায় সিদ্ধহস্ত! অপর কী পেল, কার কী গেল?-তা নিয়ে তাদের মাথাব্যথা কোনকালেই ছিল না!
কে কোন পরিবেশে বেড়ে উঠেছি সেটাতে কিছুই ম্যাটার করে না! যদি শোধরাতে চাই, বদলাতে চাই নিজেকে, তবে এটা
মোটেই কঠিন কাজ নয়। সমাজে অনুকরণ করার মত অনেক ব্যক্তিত্ব আছে! কাইজেনের মত রোজ একটু একটু
বদলালে অচিরেই বৈপ্লবিক পরিবর্তনের স্বাক্ষী হব। সব উজাড় করেও নয় আবার সব ধরে রেখেও নয় বরং কিছু
দানে, কিছু বিনিময়ে জীবনের অলিপথগুলো সুন্দর করে সাজাতে হবে। অন্যের চাওয়া-পাওয়া বুঝলে নিজের
প্রাপ্তির ভাগও অনেকটাই পূর্ণ হবে! কাউকে কিছু না দিয়ে, সব দোষ পরের দেখে জীবন চলবে-এমন প্রিন্সিপালে
বোধহয় পৃথিবীর সৃষ্টি হয়নি। অমি অপরের হলে, পরও আমার হবে। আমার কন্ঠ, আমার ভাষা, আমার মেজাজ,
আমার হাসা-আমার সবকিছু যদি আমার কন্ট্রোলে না থাকে তবে আমি কেন? আমি তো অন্যকেউ নই, আমি!
আমি ইচ্ছা করলেই পারি, ইচ্ছে হলেই হারি!
রাজু আহমেদ। কলামিস্ট।
Raju69alive@gmail.com