বুধবার, ২১ এপ্রিল ২০২১, ১০:৫২ অপরাহ্ন
সায়েম সাবু : ড. ইমতিয়াজ আহমেদ, পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, কানাডার কার্লটন বিশ্ববিদ্যালয়, অটোয়া ও অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ে। জাপানের ইয়োকোহামা সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে কাজ করেছেন। অধ্যাপনা করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে। ‘আন্ডারস্ট্যান্ডিং টেররিজম ইন সাউথ এশিয়া : বিয়ন্ড স্টাটিস্ট ডিসকোর্সেস’ নামক গ্রন্থের রচয়িতা তিনি।
ইরানের শীর্ষ জেনারেল কাসেম সোলেইমানির হ’ত্যাকাণ্ড নিয়ে মু’খো’মু’খি হন। যুক্তরাষ্ট্র-ইরানের মধ্যকার উত্তে’জনা, ফলাফল এবং বিশ্ব পরিস্থিতি নিয়ে বি’স্ত’র আলোচনা করেন। ইরানের ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে সা’ম’রিক শ’ক্তির নিবিড় সম্পর্ক আছে বলেও মত দেন। তবে আপাতত মধ্যপ্রাচ্যে অ’শা’ন্তির আ’গু’নই দেখতে পাচ্ছেন এ বিশ্লে’ষক।
ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, কয়েকটি বিষয় আমলে নিয়ে এমন ঘটনার বিশ্লে’ষণ করতে হয়। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থকাঠামোতে অ’স্ত্র তৈরি, যু’দ্ধাবস্থা রাখা বা যু’দ্ধপরি’স্থি’তি তৈরি করা ওতপ্রো’তভাবে জড়িত। এ কাঠামো থেকে বের হওয়ার চেষ্টাও হয়েছে কয়েকবার। বিশ্বায়নকে সামনে রেখে পণ্য উৎপাদন বাড়ানোর ভাবনা, সে চেষ্টাও করেছে দেশটি। এ চেষ্টায় চীন যতটা লাভবান হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ততটা পারেনি। যুক্তরাষ্ট্রকে যু’দ্ধ করতে হয়, এ কারণেই ইরান এখন টা’র্গে’ট। এর আগে উত্তর কোরিয়ায় চে’ষ্টা করেছিল। চীন পাশে থাকায় সম্ভব হয়নি। যদিও উত্তর কোরিয়া নিজেকে পারমাণবিক শ’ক্তিধর দেশ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে।
কাসেম সোলেইমানি হ’ত্যা ঢাবির এই অধ্যাপক বলেন, এখানে দুটি দিক আছে। প্রথমে ইরানের দিকে তাকাতে হবে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্ত হয়তো কোনো এক সময় যু’দ্ধাপ’রা’ধে সামিল হবে। তবে আমার বিশ্লেষণ হচ্ছে, কাসেম সোলেইমানির হ’ত্যা ইরানকে লাভবান করেছে। ইরান বহু বছর ধরে বিশ্ব জনমতে প্রবেশ করতে পারেনি। পশ্চিমা মিডিয়া ইরান সম্পর্কে বিশ্বকে যা জানিয়েছে, তাই জেনেছে। গরিব, স্বাধীনতা নেই, ইসলামী র’ক্ষ’ণশীল রাষ্ট্র হিসেবে জাহির করেছে পশ্চিমা দেশগুলো।
সোলেইমানিকে হ’ত্যার মধ্য দিয়ে ইরান এখন বিশ্বকে পাশে পেয়েছে। জনমত এ হ’ত্যার বিপক্ষে। সঙ্গত কারণে ইরানের প্রতি মানুষের সমর্থন বাড়ছে। এতে লাভবান হচ্ছে ইরান। খোদ যুক্তরাষ্ট্রেও ইরানের পক্ষে মানববন্ধন হচ্ছে, বিক্ষো’ভ হচ্ছে। এ চিত্র কল্পনাই করা যায় না। যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক মিত্র দেশ এ ঘটনায় উ’দ্বে’গ প্রকাশ করেছে। চীন, রাশিয়া ইরানের পক্ষে অবস্থান নিয়ে কথা বলছে। ইউরোপের দেশগুলো সৈন্য প্র’ত্যাহা’রের ঘোষণা দিচ্ছে। ইরাকের পার্লামেন্ট আইন পাস করল, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্র’ত্যা’হার চায়। তার মানে, দীর্ঘমেয়াদে ইরান লাভবান হলো। ইরান সেই লাভ ধরে রাখতে পারে কি-না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, এ ক্ষ’তি সাময়িক। আমার কাছে মনে হয়েছে, ইরান যতটা না শক্তিশালী, তার চেয়ে বেশি শক্তিশালী হচ্ছে পশ্চিমা দেশগুলোর ভুলের কারণে। ইরাকে যু’দ্ধ বাধিয়ে সাদ্দাম হোসেনকে স’রিয়ে দিল যুক্তরাষ্ট্র। ইরাকে শিয়া বেশি। শিয়া-সুন্নির দ্ব’ন্দ্ব পুরনো। এখন শিয়ারা শ’ক্তিশা’লী হয়ে ইরানের পক্ষে সমর্থন দিচ্ছে। এটি ইরানের লাভ। এ বোধ যুক্তরাষ্ট্রের নেই। ইসরায়েলের সীমানায় এখন ইরানের বাহিনী অবস্থান করছে। এটি তো যুক্তরাষ্ট্রের ভু’ল নীতির কারণেই সম্ভব হয়েছে। সম্প্রসারণ নীতিতে কাসেম সোলেইমানির ব্যা’পক ভূমিকা আছে। ইরান পারস্য সভ্যতা ধারণ করে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশটি বহু সোলেইমানি তৈরি করে ফেলেছে। ইরানের বুদ্ধিদীপ্ত অবস্থান তার সামরিক অবস্থানকে আরও শ’ক্তিশা’লী করছে। সূত্র : জাগো নিউজ