এনএসইউ’তে ‘মিয়ানমারের বর্তমান সংকট এবং প্রতিবেশী অঞ্চলের উপর
এর প্রভাব’ শীর্ষক সিপিএসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
ঢাকা, ৩১ জানুয়ারী, ২০২৪: নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি (এনএসইউ) এর সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট
অফ পলিসি অ্যান্ড গভর্নেন্স (এসআইপিজি) এর সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ (সিপিএস) গত ৩১
জানুয়ারী, ২০২৪-এ "মিয়ানমারের বর্তমান সংকট এবং প্রতিবেশী অঞ্চলে এর প্রভাব" শীর্ষক
একটি আলোচনা সভার আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে ছিলেন মিয়ানমারের জাতীয় ঐক্য সরকারের (এনইউজি) রাষ্ট্রপতির
মুখপাত্র ও উপদেষ্টা জনাব কিয়াও জাও; ড. রেমন্ড কুন-সান লাউ, সহকারী অধ্যাপক, পিএসএস,
এনএসইউ; ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, সিনিয়র ফেলো, এসআইপিজি; ড.
মোঃ মাহবুবুল হক, আইন ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অনুষদ, ইউনিভার্সিটি সুলতান জয়নাল আবিদীন,
মালয়েশিয়া এবং অধ্যাপক শহীদুল হক, এসআইপিজি। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন অধ্যাপক ড.
এসকে তৌফিক এম হক, ডিন, স্কুল অফ হিউম্যানিটিজ অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্স এবং পরিচালক,
সিপিএস, এসআইপিজি। সিপিএস সমন্বয়কারী ড. আব্দুল ওহাবের শুভেচ্ছা বক্তব্যের মাধ্যমে
অনুষ্ঠানটি শুরু হয়।
কিয়াও জাও বলেন যে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে চলমান বসন্ত বিপ্লব সফল হবে কারণ মিয়ানমারের
জনগণ এখন ইতিহাসের অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি ঐক্যবদ্ধ। তার সরকার মিয়ানমারে সকল
জাতিগত সংখ্যালঘুদের অন্তর্ভুক্ত করবে এবং বর্তমানে বাংলাদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের
প্রত্যাবাসনকে সহজ করবে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন মিয়ানমারের চলমান সংঘাতের কারণে
রোহিঙ্গা সংকট আরও প্রকট হচ্ছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে বাংলাদেশ
মিয়ানমারের একাধিক পক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে পারে।
ড. রেমন্ড কুন-সান লাউ বলেছেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার ইউরোপীয় মিত্রদের নিষেধাজ্ঞা
মিয়ানমারে সামরিক জান্তার পদক্ষেপকে পরিবর্তন করবে না। এদিকে,এই অঞ্চলে চীনা স্বার্থ
সুরক্ষিত করতে চীন মিয়ানমারকে তার বলয়ে রাখার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে যা মিয়ানমার সঙ্কটকে
আরও জটিল করছে।
প্রফেসর শহীদুল হক বলেন যে মিয়ানমার ভারতের কাছে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী কারণ এটিই একমাত্র
দেশ যেটি স্থলপথে আসিয়ান দেশগুলির সাথে তাদের ভৌগলিক সংযোগ প্রদান করে। সুতরাং,
মিয়ানমারের সাথে ভারত তাদের সম্পর্ক আরও বাড়াতে চায়।
ড. মোঃ মাহবুবুল হক বলেন, আসিয়ান দেশগুলো মিয়ানমার সঙ্কট নিরসনে পদক্ষেপের ক্ষেত্রে
বিভক্ত। সুতরাং এই ব্লকের দ্বারা কোন কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের সম্ভাবনা ক্ষীণ কারণ আসিয়ান
‘অন্য দেশের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করা’র নীতি মেনে চলে। কিন্তু আসিয়ানের
মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের মূল নীতি সমুন্নত রাখতে মিয়ানমারে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে তাদের কাজ
করা উচিত বলে তিনি মনে করেন।
অধ্যাপক ড. এসকে তৌফিক এম হক তার সমাপনী বক্তব্যে বলেন, কোনো প্রতিবেশী দেশ
মিয়ানমারকে এ অঞ্চলের ভূ-রাজনীতির রণক্ষেত্র হিসেবে দেখতে চায় না। তিনি আশা করেন যে, সব
দেশ আঞ্চলিক শান্তি সুরক্ষায় একযোগে কাজ করবে। বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা,
বিশ্ববিদ্যালয়, উন্নয়ন সংস্থা, দূতাবাস, মিডিয়া এবং এনএসইউ’র শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সরাসরি ও
অনলাইনে এই আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।