এরদোয়ান ভোট চাইতে গেলেন যৌনকর্মীদের একটি হোটেলে।
১৯৮৯ সালের ঘটনা। তুরস্কে জাতীয় নির্বাচনের প্রচারণা চলছিলো। এরদোয়ান তখন একটি ইসলামি দলের বা রেফাহ পার্টির নেতা। রেফাহ পার্টি ১৯৮৪ সালের নির্বাচনে ৪.৪০% ভোট পেয়েছিলো। কিন্তু এরদোয়ানের কিছু কৌশলের কারণে ১৯৮৯ সালে তারা ৯.৮০% ভোট পায়। অর্থাৎ ৫.৪০% ভোট বেশি পায়।
এরদোয়ানের কৌশলটা তিনি তাঁর এক বক্তব্যে এভাবে বলেন:
“১৯৮৯ সাথে বেইওলু উপজেলার সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসাবে হোটেলগুলোতে ঘুরছিলাম। ৪ টার সময়ে এক হোটেলে প্রবেশ করলাম, সেখানে প্রায় ২৫ জনের মতো যৌনকর্মী ছিলো। তারা হোটেলে খাচ্ছিলো, এবং সেদিন রাতের প্রস্তুতি নিচ্ছিলো।
হোটেলের মালিক তাদেরকে বললেন, “(ইসলামিক দল) রেফাহ পার্টির সংসদ সদস্য প্রার্থী আপনাদের সাথে দেখা করতে চান।”
এ কথা বলার সাথে সাথে সবাই উচ্চস্বরে হাসতে শুরু করলেন।
তাঁরা হোটেল মালিককে বললো, “আপনি আমাদের সাথে ঠাট্টা করতে আসলেন নাকি?”
মালিক বললেন, “না, আসলেই রেফাহ পার্টির সংসদ সদস্য প্রার্থী আপনাদের সাথে দেখা করতে চান।”
যৌনকর্মীরা বললেন, “না, এখানে আসতে পারবেন না তিনি।”
আমি তাদেরকে বললাম, “আমি রেফাহ পার্টির সংসদ সদস্যপ্রার্থী। আপনাদেরকে এ অন্ধকার থেকে বের করার জন্যে এসেছি। আপনাদের ভোট, আপনাদের সমর্থন এবং আপনাদের সহযোগিতা চাই।”
এ কথা বলার পর সবাই হাসাহাসি শুরু করলো, কিন্তু পিছনের এক কোনা থেকে একজন দাঁড়ালো। তিনি বললেন, “আপনি আমাদের রক্ষা করতে পারবেন না। আমরা শেষ হয়ে গেছি। আমরা ধ্বংস হয়ে গেছি।” এ কথা বলে তিনি কান্না শুরু করে দিলেন।
হাসাহাসি করা অন্যরা এবার একটু চুপ করলো। ঐ নারী মনের ভিতরের কষ্ট থেকেই কান্না করছিলো। এবং আমাদেরও কান্না চলে আসছিলো।
সে নারী বললেন, “আমারা ধ্বংস হয়ে গেছি, শেষ হয়ে গেছি। কিন্তু আমার ১৪ বছর বয়সী এবং ১৬ বছর বয়সী দুই মেয়ে আছে। আমি চাই না তাদের অবস্থা আমার মতো হোক। আপনারা ওদেরকে রক্ষা করবেন বলে আমি বিশ্বাস করি। এ জন্যে আমি আপনাদেরকে ভোট দিবো। এখানে অন্য যারা হাসাহাসি করছেন, তাদের হাসাহাসি দেখবেন না। আমি তাদেরকে প্রত্যেককে এক এক করে বুঝাবো আপনাদেরকে ভোট দেওয়ার জন্যে।”
এরদোয়ান এ ঘটনা উল্লেখ করে জানান, কারা তাদের ভোটার, এবং কাদের কাছে তারা ভোট চাইতে যেতেন। মূলত এরদোয়ান সূরা আবাসা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেছেন। সমজের উচ্চশ্রেণীর একটা ভোট সংগ্রহের জন্যে যতটা কষ্ট করতে হয়, একই কষ্ট করলে একটু নিম্ন শ্রেণীর ১০০ টা ভোট সংগ্রহ করা যায়। আল্লাহর বান্দা হিসাবে সবাই সমান।
[জোবায়ের আল মাহমুদ ভাইয়ের ফেসবুক স্টাটাস থেকে]