গরীবের ডাক্তার অমিতাভ তরফদার এখনও প্রচার বিমুখ

যার ফলে রাতারাতি বিখ্যাতও হয়ে যান তারা।

 

দুমকি (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ
‘জীবন জীবনের জন্য, মানুষ মানুষের জন্য।’ এই বাক্যটি সর্বজন স্বীকৃত হলেও ক’জনইবা পারে এই নির্মম সত্যকে বাস্তব জীবনে রূপ দিতে। মানুষ হিসেবে পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করলেও সবাই ব্যক্তি ও পেশাগত জীবনে সুনাম কিংবা সুখ্যাতি অর্জন করতে পারে না।
কিন্তু এদের মধ্যে কেউ কেউ তার নিজের কর্মগুনে অতীতের সব রেকর্ড ছাপিয়ে যান। নামের পেছনে নানা উপাধির তকমাও পেয়ে থাকেন সাধারণ মানুষের কাছ থেকে। যার ফলে রাতারাতি বিখ্যাতও হয়ে যান তারা।
তেমনি আজ কথা বলব, একজন এমবিবিএস চিকিৎসকের কথা। যিনি এই পেশায় থেকেও অভিজাত শহরাঞ্চল ছেড়ে মানব সেবার ব্রত নিয়ে এসেছিলেন গ্রামাঞ্চলে। তার লক্ষ্য ছিল একটাই-সাধারণ মানুষের মাঝে সেবা পৌঁছে দেয়া। সেটি তিনি আজ অনেকাংশে বাস্তবে রূপও দিতে পেরেছেন। সাধারণ মানুষের মাঝে আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছেন।

ধনী-গরীব, নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ সবার মধ্যে তিনি বিশ্বস্ত হয়ে উঠেছেন। তাই তো রাতারাতি সাধারণ মানুষের কাছে তিনি গরীবের ডাক্তার বলেও পরিচিতি পেয়েছেন। বেশ কয়েক বছর যাবৎ দুমকি উপজেলা সদরের বিশেষায়তি একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের হয়ে স্বাস্থসেবা দেয়ার পাশাপাশি মানবিক দায়বদ্ধতা থেকেও অনেককেই সহযোগিতা করে থাকেন এই গুনী চিকিৎসক।
তিনি ২০১৩ সালের জুলাই মাসে এমবিবিএস পাশ করেন। ২০১৪ সালের জুলাই মাসে ইন্টার্নী শেষ করেন। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে নাইটেঙ্গেল মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালের ইমার্জেনসি মেডিকেল অফিসার হিসেবে যোগদান করেন ডাক্তার অমিতাভ তরফদার।

২০১৫ সালে ওই হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার হিসেবে মর্নিং শিফটে যোগদান করেন। একই সাথে ইভেনিং এবং নাইট শিপটে কাজ করেন। ২০১৫ সালের আগস্টে সার্জারি বিভাগে সহকারী রেজিস্ট্রার হিসেবে যোগদান করেন।

পরবর্তীতে ২০১৭ সালের ২ জানুয়ারি দক্ষিণাঞ্চলের বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ সেবাদানকারী লুথ্যারান হেলথ কেয়ারে চিকিৎসক হিসেবে যোগদান করেন। এখানে যোগদানের পর থেকেই খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি তৃণমূল-প্রান্তিক মানুষের মাঝে এই প্রতিষ্ঠানের আস্থা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন। তিনি চিকিৎসাসেবায় নিত্যনতুন কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন।

এখানকার ছিন্নমূল হতদর্দ্রি মানুষের এককালের আস্থার প্রতীক এই প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে যে নিবিড় স¤পর্ক তৈরি হয়েছিল সেটি আবার একটি বিশ্বাসের জায়গায় রূপ দিয়েছেন তিনি। রোগীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার, স্বাস্থ সেবায় গুণগত পরিবর্তন আনা এবং সেবা প্রার্থীদের আন্তরিকতা দেখানোর মধ্য দিয়ে একটি বিশ্বস্ততার জায়গায় এনে দিয়েছেন।
তিনি ১৯৮৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর খুলনা সদরের এক সমভ্রান্ত হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা সুনীল তরফদার ব্যবসায়ী এবং মা গিতা তরফদার অবসরপ্রাপ্ত নার্সিং সুপারভাইজার।

এ প্রতিবেদকের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে দুমকি উপজেলা সদরের শ্রীরামপুরে অবস্থিত লুথ্যারান হেলথ কেয়ার বাংলাদেশের চিকিৎসক (শিশু ও মেডিসিন বিষয়ে বিশেষ অভিজ্ঞ) ডা. অমিতাভ তরফদার বলেন, সেবাটাই মূল লক্ষ্য।
নিঃস্বার্থভাবে সাধারন মানুষের আমৃত্যু সেবা করতে চাই। গরীবদেরকে সেবা ও সহযোগিতা করি, ভবিষ্যতেও করতে চাই।প্রান্তিক পর্যায়ে চিকিৎসকরা থাকতে চায়না। কিন্তু আমি এসব স্থানে থেকে সেবার ব্রত নিয়ে তাদের পাশে দাড়াতে চাই। প্রান্তিক জনগোষ্টীকে সেবা দেওয়ার মুহুর্তগুলোকে আমি এনজয় বেশ করি।

উল্লেখ্য, এই চিকিৎসক তার উপর অর্পিত দায়েিত্বর পাশাপাশি ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনেক গরীব ও দুস্থ রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেয়া এবং ব্যক্তিগত খরচে তাদের ঔষধ দিয়ে থাকেন।
কিন্তু তিনি বরাবরই একজন প্রচারবিমুখ মানুষ। কেননা, তিনি এসব কোন প্রচারের জন্য করেন না বলে একটি বিশ্বস্ত সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
তিনি ব্যক্তিজীবনে একজন সুখী মানুষ। সদা হাস্যজ্জল ও সদালাপী একজন মানুষ তিনি। তার স্ত্রী একজন সফল গৃহিণী।

Exit mobile version