জেলা-মহানগরী সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক সম্মেলন ২০২৩ অনুষ্ঠিত

আল্লাহর বিধানের মধ্যে রয়েছে মানুষের মুক্তি: অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন তার গোলামির জন্য। তার আইন-কানুন মেনে চলার জন্য। আল্লাহর বিধানের মধ্যে মানুষের মুক্তি ও কল্যাণের পথ নিহিত রয়েছে।

তিনি গত ২০ ফেব্রুয়ারি (রবিবার) বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উদ্যোগে ভার্চুয়ালি আয়োজিত জেলা-মহানগরী সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান-এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আতিকুর রহমান-এর সঞ্চালনায় এই সময় মূল মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি লস্কর মোঃ তসলিম, কবির আহমাদ, সহ-সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আলমগীর হোসাইন, মোঃ মহিব্বুল্লাহ, দপ্তর সম্পাদক নুরুল আমিন, প্রকাশনা সম্পাদক জামিল মাহমুদ প্রমুখ।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ এক সময় কৃষি সম্পদে পরিপূর্ণ ছিল। পাট ছিল সোনালী আঁশ। কিন্তু অসততা ও চুরির কারণে আজ পাট শিল্প ধ্বংস হয়ে গেছে। আজকে বাংলাদেশ কৃষিতে উন্নতির পরিবর্তে যে দিন দিন ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে, এর প্রধান কারণ হলো রাষ্ট্র যন্ত্রে যারা আছে, তারা অসৎ ও চারিত্রিক দিকে দুশ্চরিত্রের অধিকারী। তাদের জন্য একটি জাতি ধ্বংসের দিকে উপনিত হচ্ছে। ফলে বাংলাদেশ আজ আমদানি নির্ভর দেশে পরিণত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, জাতিকে ধ্বংসের হাত রক্ষার জন্য সমাজ রাষ্ট্রের সর্বত্র পরিবর্তন আনতে হবে। অসৎ শাসন উৎখাত করে সমাজ রাষ্ট্রকে কল্যাণের পথে পরিচালনার জন্য আল্লাহর বিধান পূর্ণাঙ্গ ভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। শ্রম অঙ্গনে শ্রমিক সমস্যা দূর করে তাদের জন্য ইনসাফ ভিত্তিক মজুরি কাঠামো গঠনের জন্য ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়ন করতে হবে। মালিক-শ্রমিকের মধ্যে ঐক্য গড়তে হবে। শ্রমিকরা মালিকের সাথে সম্পাদিত চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করবে। তারা যথা সময়ে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করবে। চুক্তি অনুযায়ী তার কর্ম সম্পাদন করবে। মালিকরা শ্রমিকদের প্রতি জুলুম করবে না। বরং শ্রমিকদের প্রতি ইনসাফ ও এহসান করতে মালিকরা হবে অগ্রবর্তী। মালিকরা শ্রমিকদের সাথে ভালো ব্যবহার করবে। মালিক যে খাবার খাবে, যে বস্ত্র পরিধান করবে; একই খাবার ও বস্ত্র শ্রমিকদের প্রদান করবে। শ্রমিকদের মালিকরা এমন ভারী কাজ দিবে না, যা তার শ্রমিকের পক্ষে অসাধ্য। যদি দিতেই হয় তাহলে মালিক-শ্রমিক মিলে সেই কাজ সম্পাদন করবে। মালিক কিংবা শ্রমিক শুধু এক পক্ষকে ভালো হলে হবে না। দুই পক্ষকে ভালো হতে হবে। মালিক-শ্রমিক উভয় নিজ নিজ কর্তব্য যথাযথভাবে সম্পাদন করলে উৎপাদিত পণ্য মানসম্পন্ন হবে। পণ্যের মান ভালো হলে দেশের অগ্রগতি হবে। মালিক-শ্রমিক কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশকে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেন, সমাজকে এগিয়ে নিতে হলে শ্রমজীবী মানুষদের সর্বক্ষেত্রে গুরুত্ব দিতে হবে। শ্রমিকের শ্রমে রাষ্ট্রযন্ত্র সচল থাকে। তাই রাষ্ট্র ঠিক রাখার জন্য শ্রমিকদের প্রাপ্য অধিকার, মজুরি ও অন্যান্য নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। শ্রমিকরা যেন সারাদিন মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ঘরে ফিরে অভুক্ত না থাকে; এটি নিশ্চিত করতে হবে। এই দায়িত্ব পালনে মালিকদের পাশাপাশি রাষ্ট্র ক্ষমতায় যারা আছে তাদের এগিয়ে আসতে হবে।

Exit mobile version