শনিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২১, ১০:৪০ অপরাহ্ন
নির্দেশনা মানছে না ভাটা মালিকরা,নষ্ট হচ্ছে ফসলী, পরিবেশ দূষন চরমে!
মো:নজরুল ইসলাম,ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃঃ ঝালকাঠিতে ফসলি এবং আবাদি জমিতে ইটভাটা বানিয়ে একের পর এক পরিবেশের বিনষ্ট করা হলেও তা দেখার কেউ নেই। গাছ কেটে ধ্বংস করা হচ্ছে বনজ সম্পদ। বিপর্যয়ের মুখে পরিবেশ। কিছু নতুন ও পুড়াতন ভাটায় প্রকাশ্যে অবৈধ ভাবে ইট পোড়ানো হচ্ছে জ্বালানী কাঠ দিয়ে। পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন স্থানে গড়ে তোলা অবৈধ ইটের পাজায়ও কাঠ পোড়ানো হচ্ছে দেদারছে। এসকল অবৈধ ভাটা ও পাজায় প্রশাসনের কতিপর অস্বাদু কর্তা ও স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী ব্যাক্তিরা জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি ঝালকাঠির নলছিটি উপজলার মগড় ইউনিয়নর সুজাবাদ গ্রামের ‘মেসার্স ইসলাম ব্রিকস’ নামের অবৈধ ইটভাটায় অভিযান চালায় বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট আবদুল হালিম।
ইটভাটা মালিক মো. জাহিদ হোসেনকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায় দুই বছর কারাদন্ড এবং এ ভাটার ম্যানজারকে এক বছরের কারাদন্ড দিয়েছেন বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট আবদুল হালিম। এছাড়াও একই উপজেলার আরো একাধিক অবৈধ ইটভাটায় অভিযান চালান বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এসময় ওই অবৈধ ইটভাটায় জেলা জরিমানা করে ওই সকল অবৈধ ইটভাটা ও পাজা বন্ধের নিদ্দেশ দেন এবং অবৈধ ভাটা ও পাজায় ফায়ার সার্ভিস দিয়ে পনি দিয়ে এবং ভাটাগুলো গুড়িয়ে দেন বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট আবদুল হালিম। কিন্তু পুনরায় ওই সকল অবৈধ ভাটায় ও পাজার মালিকরা প্রশাসনের সাথে চ্যালেঞ্জ করেই অবৈধভাবেই ইট পোড়াচ্ছে। তারা আইন কানুনের তোয়াক্কা না করে এসব অবৈধ ভাটা ও পাজায় প্রকাশ্যেই ইট পোড়াচ্ছে।
ইমিধ্যেই অভিযান চালানো ওইসকল ভাটা ও পাজা সক্রিয় হয়ে পুনরায় ইট পোড়াতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছে এবং ব্যাপক জ্বালানী কাঠ মজুত করেছে। ওই সকল অবৈধ ভাটা ও পাজা বন্ধে প্রশাসনের কোন পদক্ষেপই কাজে আসছে না বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে।
যদিও বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক ও ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন তারা কঠোর অবস্থানে থেকেই এসব অবৈধ ভাটায় অভিযান অব্যহত রাখবেন।
গত বছরে পরিবেশ অধিদপ্তর ফিট চুংগার ভাটা গুলিকে অবৈধ ঘোষণা করে মালিক পক্ষকে বন্ধ করার নোটিশ দিলেও তা মানছে না অনেকেই। এসব ভাটা ও পাজার কালো ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষিত হবার পাশাপাশি পাশর্^বর্তী গাছপালা বিনষ্ট হচ্ছে যেমনি তেমনি ফসলি জমি নষ্ট হচ্ছে ব্যাপক। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে স্থানীয় কৃষকরা।
সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ইটভাটার জ্যিকজ্যাক চুংগা ব্যবহার করার নির্দেশনা থাকলেও অধিকাংশ ভাটা মালিকরা তা মানছে না। হাতে গোনা কয়েকটি ভাটায় কয়লা পোড়ালেও অপর মালিকরা কিছু কয়লার নমুনা রেখে কাঠ দিয়ে ইট পোড়াচ্ছে।
এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসন নিরব থাকায় মালিকরা কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানোয় বেশি উৎসহ দেখাচ্ছে। ইতিমধ্যেই ফিট চুংগা আইন করে বাতিল করা হলেও ঝালকাঠিতে আইনের তোয়াক্কা না করেই অবৈধ ইটভাটা মালিকরা তা ব্যবহার করছে।
জেলায় প্রায় ৩০ টি ভাটা ও প্রায় ১ হাজার পাজা রয়েছে। এরমধ্যে ১০ টি জ্যিকজ্যাক ভাটার তথ্য পাওয়া গেলেও প্রকৃতপক্ষে জেলায় মোট ভাটা ও পাজার সঠিক কোন পরিসংখ্যান কোথাও পাওয়া যায়নি।
এ প্রসঙ্গে বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তরের ঝালকাঠির দায়িত্ব প্রাপ্ত পরিদর্শক তোতা মিয়া বলেন, যেসব ভাটায় জ্যিকজ্যাক চুংগা নেই সেইসব ভাটা মালিককে ইতি মধ্যেই নোটিশ দিয়ে তাদের ভাটা বন্ধ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কোন ক্রমেই তারা এই চুংগা দিয়ে ইট পোড়াতে পারবে না। পাশাপাশি এক টুকরো কাঠও কোন ভাটা বা পাজায় পোড়ানোর বৈধতা নেই। কিন্তু ইতিমধ্যেই কয়লা ছাড়াই কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো শুরু হলেও ব্যাবস্থা নেয়া হচ্ছেনা কেন জানতে চাইলে এই পরিদর্শক বলেন, এই নির্দেশনা না মানলে আমরা মোবাইল কোর্টে মাধ্যমে ব্যাবস্থা নেব। আমাদের অভিযান অব্যহত রয়েছে।
এব্যাপারে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক মো: জহর আলী বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল অবৈধ ইট ভাটা ও পাজায় মোবাইল কোট পরিচালনা করে আইনের আওতায় আনা হবে।