গোপাল চন্দ্র রায়, ডোমার (নীলফামারীর) প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নরমাল ডেলিভারিতে আস্থা বাড়ছে গর্ভবতী মায়েদের।
দেশে চিকিৎসা সেবায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ার সাথে বিত্তবান ব্যাক্তিদের এবং আরামপ্রিয় কিছু অংশ মানুষজন বিশেষ করে ব্যাঙ্গের ছাতার মতো গজিয়ে উঠা ক্লিনিকে কর্মরত চিকিৎসকদের সিজারিয়ান পরামর্শের কারণে নরমাল ডেলিভারির কথা ভুলতে বসেছে অনেকে। ঠিক সে মূহুর্তে ৫০শয্যা বিশিষ্ট ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নরমাল ডেলিভারিতে আস্থা বাড়ছে গর্ভবতী মায়েদের। ইতিমধ্যে নরমাল ডেলিভারিতে নীলফামারী জেলায় প্রসংশা কুড়াচ্ছেন সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি।
ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দেয়া তথ্যানুযায়ী, ২০২১সালে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে সন্তান জন্ম দিয়েছেন ৫৮৪জন প্রসূতি। ২০২২সালে ১হাজার ৮৮জন এবং ২০২৩সালে ১হাজার ১৮৮ জন প্রসূতি। চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে মাসে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে সন্তান জন্ম দিয়েছেন ১৮৩জন প্রসূতি। সিজারিয়ানের মাধ্যমে প্রসব হয়েছে ২০২১সালে ৪৭জন শিশু, ২০২২সালে ২১৬জন শিশু এবং ২০২৩সালে ২৯১জন শিশু। চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে সিজার করা হয়েছে ৪৯জনের।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাঃ রায়হান বারী যোগদানের পর থেকে তার নিজস্ব তৎপরতায় চিকিৎসা সেবায় আমুল পরিবর্তন হয়েছে। বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে। নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে সন্তান প্রসব করার লক্ষে গর্ভবতী নারীদের হাসপাতাল মূখী করতে হাসপাতালে এএনসি কমিউনিকেশন সেল তৈরী করা হয়েছে।সেখানে ৩টি শিপ্টে সার্বক্ষণিক ৮জন মিডওয়াইফ কাজ করছেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রসূতি ওয়ার্ডে একদিনে ৭জন শিশু জন্ম নেয়ার রেকর্ডও রয়েছে। ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রসূতি ওয়ার্ডের ইনচার্জ মিডওয়াইফ জান্নাতুল ফেরদৌসি জান্নাত জানান, গর্ভবতী নারীদের নিয়ে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রতিমাসে ৪টি করে ভায়া ক্যাম্প ও ৪টি এনসি করা হয়। সেখান থেকে কাউন্সিলিং করে গর্ভবতী মায়েদের চেকআপের জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসি। আমরা নামমাত্র মূল্যে গর্ভবতী মায়েদের আলট্রা স্নো গ্রাম, রক্ত ও প্রস্রাব টেষ্ট করে থাকি এবং ঝুকিপূর্ণ বিষয়গুলো অবগত করি। নরমাল ডেলিভারিতে উদ্ভুদ্ধ করতে সন্তান প্রসব হওয়ার পর স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তার ব্যাক্তিগত অর্থায়নে নবজাতককে গিফট প্রদান করা হয়। পাশাপাশি সন্তান জন্মের পর ৪২দিন পর্যন্ত নবজাতকের খোঁজ খবর নেই এবং সেবা দিয়ে থাকি। এ সবের কারণে নরমাল ডেলিভারির সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাঃ রায়হান বারী জানান, এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রাতিষ্ঠানিক নরমাল ডেলিভারি বৃদ্ধির লক্ষে ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এএনসি কমিউনিকেশন সেল তৈরী করে কাজ করে যাচ্ছি। সারা দেশের মধ্যে একমাত্র আমরাই গর্ভবতী মায়েদের জন্য মোবাইল সেবা চালু করেছি। যা দেশের অন্য কোন উপজেলায় নাই।
#
ছবির ক্যাপশন- সম্প্রতি ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নরমাল ডেলিভারি হওয়া প্রসূতি ওয়ার্ড পরিদর্শন করে নবজাতককে গিফট প্রদান করছেন, রংপুর বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. এবিএম আবু হানিফ, ইউনিসেফের কান্ট্রি ডিরেক্টর দীপিকা শর্মা, নীলফামারী সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ হাসিবুর রহমান ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাঃ রায়হান বারী।