মঙ্গলবার, ১৩ এপ্রিল ২০২১, ০৭:০৮ অপরাহ্ন
তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি
রাজশাহীর তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছাঃ নাসরিন বানুর বিরুদ্ধে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয়হীনতা ও এড়িয়ে চলার অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ এসেছে জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধিদের কাছে থেকে। উপজেলা প্রশাসনের শীর্ষ এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জনপ্রতিনিধিদের আনা এসব অভিযোগের খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যর সৃষ্টি হয়েছে, উঠেছে সমালোচনার ঝড় দেখা জনমনে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া বলে গুঞ্জন বইছে। সূত্র জানায়, চলতি বছরের ১৫ আগস্ট উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তুলে ধরে স্থানীয় সাংসদ ও রাজশাহী জেলা প্রশাসককে (ডিসি) অবগত করেছেন।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি বছরের ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে উপজেলা প্রশাসনের র্যালী এবং আলোচনা সভায় স্থানীয় সাংসদ এবং তার প্রতিনিধি উপজেলা চেয়ারম্যানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। আবার চলতি বছরের ১৮ ডিসেম্বর বুধবার আর্ন্তজাতিক অভিবাসী দিবস ও একজন মৎস্য কর্মকর্তার বিদায় অনুষ্ঠানে উপজেলা চেয়ারম্যানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে বিভিন্ন দিবস ও অনুষ্ঠানে উপজেলা চেয়ারম্যানকে আমন্ত্রণ না জানানোর খবর ছড়িয়ে পড়লে জনমনে চরম অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে, উঠেছে সমালোচনার ঝড়। এছাড়াও পদাধিকার বলে স্থানীয় সাংসদের প্রতিনিধি হিসেবে উপজেলা চেয়ারম্যান উপজেলার সভাপতি। কিšত্ত অধিকাংশক্ষেত্রে রহস্যজনক কারণে উপজেলা চেয়ারম্যানকে উপেক্ষা করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপজেলা কমিটি, আইনশৃঋলা কমিটি ইত্যাদি সভা আহবান করে আসছে বলেও উপজেলা চত্ত্বরে আলোচনা রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের দেয়া আমন্ত্রণ পত্রে স্থানীয় সাংসদকে প্রধান অতিথি করে আমন্ত্রণ পত্র বিতরণ করা হয়। অথচ চলতি বছরের ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের দেয়া আমন্ত্রণ পত্রে স্থানীয় সাংসদের নাম দেয়া হয়নি। ফলে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে আসলে এটা কি নিছক অনিচ্ছাকৃত ভূল না কি ইউএনও সাহেব ইচ্ছে করেই স্থানীয় সাংসদকে উপেক্ষা করেছেন। এদিকে বিজয় দিবসে উপজেলা প্রশাসনের বিতরণ করা আমন্ত্রণ পত্রে স্থানীয় সাংসদের নাম না থাকায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতাকর্মী আমন্ত্রণ পত্র গ্রহণ না করে ফিরিয়ে দিয়েছে অংশগ্রহণ করেননি বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানেও। ফলে এবার দায়সারা ভাবে বিজয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
অন্যদিকে স্থানীয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের ভাষ্য, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ, এখানে জনগণ রাস্ট্রের মালিক বা সকল ক্ষমতার উৎস্য। ফলে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিগণ সংশ্লিষ্ট এলাকার মালিক বা রাজা, আর সরকারের বেতনভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ রাস্ট্রের বেতনভুক্ত কর্মচারী বা (চাকর) এসব বিবেচনায় জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিগণের অবস্থান কার্যত রাস্ট্রের বেতনভুক্ত কর্মচারীগণের থেকে উপরে। অথচ তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাহেব কি বিবেচনায় জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের এভাবে অবজ্ঞা করে চলেছেন নৈতিকভাবে তিনি কি এটা করতে পারেন এই প্রশ্ন উঠেছে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ দলমত নির্বিশেষে সব শ্রেণী-পেশার মানুষের মধ্যে মনে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা আওয়ামী লীগের এক জৈষ্ঠ নেতা বলেন, বিজয় দিবসে উপজেলা প্রশাসন অনুদানের নামে গণচাঁদাবাজী করেছে, তবে দিবস উদযাপন হয়েছে দায়সারাভাবে। তিনি বলেন, বিজয় দিবসে স্থানীয় সাংসদকে আমন্ত্রণ না জনিয়ে ইউএনও সাহেব শুধু তাকেই অবজ্ঞা করেননি, তিনি নির্বাচনী এলাকার সকল মানুষকে অবজ্ঞা করেছেন। এতে নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে।
এবাপারে তানোর উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাকে না জানিয়ে উপজেলা কমিটির সভা আহবানসহ বিভিন্ন কাজ করছে। তিনি বলেন, ইউএনও সাহেবের কাছে থেকে তারা কোনো সহযোগীতা পান না ইতমধ্যে তারা জনপ্রতিনিধিগণ সম্মেলিতভাবে স্থানীয় সাংসদ ও রাজশাহী জেলা প্রশাসককে (ডিসি) বিষয়টি অবগত করেছেন। এব্যাপারে একাধিকবার যোগাযোগের চেস্টা করা হলেও মুঠোফোনে কল গ্রহণ না করায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোসাঃ নাসরিন বানুর কোনো বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। #