দুমকি(পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর দুমকিতে সরকারি রেকর্ডিও খালে বাঁধ দিয়ে পানির প্রবাহ আটকে চলছে প্রভাবশালীদের মাছের চাষ। এতে বর্ষায় জলাবদ্ধতা আর শুষ্কমৌসুমে পানি সংকটে সৃষ্টি কয়েক শ’একর জমির ফসল হানিতে দিশেহারা এলাকার কৃষকরা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার চরবয়ড়া গ্রামের সরকারি রেকর্ডিও ডাঙ্গার খালে চার চারটি বাঁধ দিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি হাওলাদার ফিরোজ জামান ঘের বানিয়ে মাছ চাষ করছেন। তার দেখাদেখি এলাকার প্রভাবশালী ব্যবসায়ি সাঈদ মৃধার অর্থায়নে খালের অগ্রভাগে বাঁধ দিয়ে দ্বিতীয় ঘের তৈরী করে মাছ চাষের ব্যবসা করেছেন। এ ডাঙ্গার খালে পর পর একাধিক বাঁধ দিয়ে অবৈধ মাছের ঘেরের ব্যবসায় বিপাকে পরেছেন এলাকার সাধারণ কৃষকেরা। ফসলী জমির পানি ওঠা-নামা বাঁধাগ্রস্তের পাশাপাশি কৃত্রিম জলাবদ্ধতা ও শুষ্কমৌুমে পানি সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। ওয়াপদা ভেরিবাঁধের স্লুইস গেট খোলা থাকলেও ডাঙ্গার খালে প্রভাবশালীরা পর পর ৩/৪টি বাঁধ দেয়ায় পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। ফলে প্রতিবছর কয়েক শ’ একর জমির আউস-আমন ও রবি ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের চরবয়েড়া গ্রামের এক কৃষক অভিযোগ করেন, ডাঙ্গার খালে ৩/৪টি বাঁধ দিয়ে আটকে রাখায় বর্ষা মৌসুমে ক্ষেতের পানি আটকে থাকে। বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে রোপা আমনের ফসলহানী ঘটে। আবার শুষ্কমৌসুমে পানি শূন্যতায় রবি ফসলের ক্ষতিতে দিশেহারা হয়ে পরেছেন। এসমস্যা নিরসনে জরুরী ভিত্তিতে বাঁধ কেটে খাল খুলে দেয়ার দাবি করেছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ বাকের আলী (বাবুল) হাওলাদার বলেন, সরকারি রেকর্ডীয় খাল আটকে মাছের ঘের করায় ওই এলাকায় আউশ, আমন ও রবি ফসলের আবাদ বিঘ্নিত হচ্ছে। এসমস্যা দূরীকরণে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষথেকে বাঁধ কাটার জন্য ১৫দিন সময় দেয়ার পর অন্ততঃ ৬মাস পাড় হলেও রহস্যজনক কারণে বাঁধ কাটা হয়নি।
সরকারি রেকর্ডিও খালে অবৈধ মাছের প্রশ্নে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি হাওলাদার ফিরোজ জামান বলেন, সরকারি খাস খালে ঘের করা হয়নি। রেকর্ডিও জমির পানি নামতে নামতে নালা খাল হয়েছে।মালিকানা সম্পত্তিতে ঘের করা হয়েছে। তবে ঘের কোন সমস্যা হচ্ছে না, সরকারি খাল ভরাট হওয়ায় পানি অপসারণ হচ্ছে না বলে মনে করছেন তিনি। অপর ঘের মালিক সাঈদ মৃধার মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করার জন্য কল করা হলেও রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ ইমরান হোসেন বলেন, খালে বাধ দিয়ে আটকে রাখায় কৃত্রিম জলাবদ্ধতা এবং শুকনো মৌসুমে চরম সেচ সংকট সৃষ্টি হয়ে ফসলের আবাদ বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। আর একারনে কৃষকরা প্রতিবছর কাঙ্খিত ফলন পাচ্ছে না। তাই যতদ্রুত সম্ভব খালের বাঁধ অপসারণ করে জোয়ার ভাটার পানির প্রবাহ স্বাভাবিক করা দরকার।
দুমকি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনামিকা নজরুল বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
#