গার্মেন্টস শিল্প রক্ষায় শ্রমিক-মালিককে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন
দেশের চলমান পরিস্থিতিতে গার্মেন্টস শিল্প নিয়ে নানামুখী ষড়যন্ত্র রুখে দিতে শ্রমিক-মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন।
আজ এক যৌথ বিবৃতিতে ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ.ন.ম শামসুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি, দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্প নিয়ে পতিত স্বৈরাচারের দোসরা গভীর ষড়যন্ত্রের জাল বুনছে। আমরা দেশের এই সংকটকালীন মুহূর্তে আপামর শ্রমিক ও মালিকদের ঐক্যবদ্ধ থেকে ষড়যন্ত্রকারীদের রুখে দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
নেতৃদ্বয় বলেন, আমরা তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের সকল ন্যায্য দাবির পক্ষে অতীতের ন্যায় এখনো অটুট অবস্থানে অনঢ় আছি। আমরা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধিসহ সকল সুযোগ সুবিধা আদায়ে অঙ্গীকারাবদ্ধ। গত দেড় দশকে সরকারের ছত্রছায়ায় মালিকরা শ্রমিকদের নানাবিধ পন্থায় শোষণ ও নির্যাতন চালিয়েছে। গত বছর ন্যূনতম মজুরির আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে ৪ জন শ্রমিককে জীবনদান ও শত শত শ্রমিককে পঙ্গুত্ববরণ করতে হয়েছে। আমরা এই রক্তাক্ত ইতিহাস ভুলে যাইনি।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে দেশ থেকে স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটেছে। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার দোসররা সমাজ-রাষ্ট্রের রন্ধে রন্ধে বসে আছে। দোসররা কোনোভাবে স্বৈরাচার সরকারের পতন মেনে নিতে পারছে না। তারা আবারও স্বৈরাচারী সরকারকে ফিরিয়ে আনার জন্য তারা একের পর ষড়যন্ত্র রচনা করছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি দুস্কৃতিকারীরা অন্তবর্তীকালীন সরকারকে দেশ গঠনের কাজ বাধাগ্রস্ত করার জন্য বিভিন্ন দাবি দাওয়া রাজপথ গরম করার চেষ্টা করছে। এখন তারা ভর করছে গার্মেন্টস শিল্পের উপর। স্বৈরাচারের দোসর শ্রমিক লীগ ও বিজিএমএ-র কতিপয় নেতা পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন বয়সের দুস্কৃতিকারীদের শতাধিক গার্মেন্টসে পাঠিয়ে ‘চাকরি চাই’স্লোগান দিয়ে কারখানাগুলোতে বিক্ষোভের আড়ালে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে। এরা কোনোভাবেই শ্রমিক ছিল না। আমরা এসব দুস্কৃতিকারীদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।
এমতাবস্থায় শ্রমিক ও মালিকদের কোনোভাবে ষড়যন্ত্রকারীদের ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না। সকল ষড়যন্ত্র ধৈর্য, সাহসিকতা ও বুদ্ধিমত্তার সাথে মোকাবিলা করতে হবে। ষড়যন্ত্রকারী চাচ্ছে গার্মেন্টস বন্ধ করে দিয়ে শ্রমিকদের উসকে দিতে। শ্রমিকরা রাজপথে নেমে এলে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাচ্ছে। তাদের এ ঘৃণ্য পরিকল্পনা সফল হতে দেওয়া যাবে না। অপরদিকে গার্মেন্টস বন্ধ হলে পার্শ্ববর্তী দেশ লাভবান হবে। এদেশের অর্ডার সব চলে যাবে তাদের কাছে। তাদের এই ষড়যন্ত্রে মালিক-শ্রমিক যতটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে তারচেয়ে বেশি ক্ষতি বাংলাদেশের। দেশের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়বে। অন্ধকারের কালোছায়া নেমে আসবে দেশ ও জাতির উপরে।
নেতৃদ্বয় বলেন, এই দুর্দিনে সাভার-আশুলিয়া, মিরপুর, ইপিজেড অঞ্চলসহ দেশের সকল পোশাক শিল্প এলাকায় দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে শ্রমিক ও গার্মেন্টেসের নিরাপত্তা প্রদানের জন্য আমরা আহ্বান জানাচ্ছি। একই সাথে শ্রমিক-জনতাকেও তাদের কর্মক্ষেত্রকে সুরক্ষিত রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।