প্রেস বিজ্ঞপ্তি
চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ বোস্তামী হতে দেড় বছর বয়সী মেয়ে শিশু অপহরণের মাত্র ০৯ ঘন্টার মধ্যে অপহৃত শিশু ভিকটিমকে উদ্ধারসহ অপহরণকারী’কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম।
১। বাংলাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবরুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
২। অপহৃত শিশু ভিকটিমের বাবা পিয়ার মোহাম্মদ (৪৪) একজন ফার্ণিচার ব্যবসায়ী। স্ত্রী, এক ছেলে ছামিউল বাসার রিয়াদ (১৩) ও এক মেয়ে- সিদরাতুল মুনতাহা ফারিয়া (০১ বছর ০৯ মাস) দেরকে নিয়ে বালুচরা, কাশেম কোম্পানির বাড়ির জামাই কলোনীর ভাড়া ঘর, ২নং ওয়ার্ড, পোস্ট- জালালাবাদ, থানা-বায়েজিদ বোস্তামি, সিএমপি, চট্টগ্রাম ঠিকানায় প্রায় ১৫ বছর যাবৎ বসবাস করে আসছে। সেই সুবাধে প্রতিবেশী মোঃ জুয়েল মিয়া (২৪), পিতা-মৃত কাশেম মিয়া, সাং-মনোহরপুর, পোঃ গোয়াইলজুরা বাজার, গোয়াইলজুরা বাজার ইউপি, থানা- বালাগঞ্জ, জেলা- সিলেট, বর্তমানে বালুচরা, কাশেম কোম্পানির বাড়ির জামাই কলোনীর ভাড়া ঘর, ২নং ওয়ার্ড, পোস্ট- জালালাবাদ, থানা-বায়েজিদ বোস্তামি, সিএমপি, চট্টগ্রাম এর সাথে পারিবারিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রতিবেশী জুয়েলের সাথে পিয়ার মোহাম্মদ এর ছেলে ও মেয়ের সখ্যতা তৈরি হয়। পিয়ার মোহাম্মদ এর ছেলে ও মেয়ে জুয়েলকে ভাইয়া বলে সম্বোধন করত। সে বিভিন্ন সময় পিয়ার মোহাম্মদ এর ছেলে মেয়েকে দোকানে নিয়ে গিয়ে চকলেট ও চিপস কিনে দিত। এরই প্রেক্ষিতে গত ২৮ জানুয়ারি ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ দুপুর আনুমানিক ১২০০ ঘটিকায় প্রতিদিনের ন্যায় পিয়ার মোহাম্মদ এর মেয়ে- সিদরাতুল মুনতাহা ফারিয়া পাশের রুমে অন্যান্য ছেলে মেয়েদের সাথে খেলাধুলা করছিল। একই তারিখ আনুমানিক ১২৩০ ঘটিকায় উক্ত রুমে গিয়ে পিয়ার মোহাম্মদ তার মেয়েকে না পেয়ে খুঁজাখুঁজি করলে লোকমুখে জানতে পারে যে, তার মেয়েকে প্রতিবেশী জুয়েল কোলে করে দোকানের দিকে নিয়ে যায়। অনেক সময় পেরিয়ে গেলেও জুয়েল এবং মেয়েকে কোথাও না পেয়ে আতঙ্কিত ও দুঃশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়ে পিয়ার মোহাম্মদ। ভিকটিমের পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে জুয়েল ও তার মেয়েকে খুঁজাখুঁজি শুরু করে। খোজাখুজির একপর্যায়ে জুয়েল মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানায় যে, পিয়ার মোহাম্মদ এর মেয়ে তার হেফাজতে আছে এবং জুয়েল মেয়ে শিশুটিকে অজ্ঞাত স্থানে রেখে, অজ্ঞাত স্থান থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন দিয়ে শিশু ফারিয়াকে পেতে হলে ৩০,০০০/- টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। কিছুক্ষণ পর পর পিয়ার মোহাম্মদ এর মোবাইল নাম্বারে কল দিয়ে দ্রুত টাকা পাঠানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করতঃ বিভিন্ন হুমকি ধামকি প্রদান করে। এছাড়াও আরও বলে যে, তাড়াতাড়ি টাকা না পাঠালে অপহরণকৃত মেয়ে শিশুটিকে আর ফেরত দিবে না ও হত্যা করে ড্রেনে ফেলে দিবে।
৩। পরবর্তীতে অপহৃত শিশু ভিকটিমের বাবা পিয়ার মোহাম্মদ উল্লেখিত বিষয়টি লিখিথভাবে র্যাব-৭, চট্টগ্রামকে অবহিত করে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম বিষয়টি অত্যান্ত গুরুত্বের সহিত আমলে নিয়ে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার এবং ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারীর মাধ্যমে অপহৃত শিশু ভিকটিমকে উদ্ধার ও জড়িত আসামীকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৮ জানুয়ারি ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ রাত আনুমানিক ০৯৩০ ঘটিকায় চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন বায়েজিদ বোস্তামি আবাসিক এলাকাস্থ হাউজ নং-২৭ (৫ম তলা বিল্ডিং) হতে অপহরণকারী মোঃ জুয়েল মিয়া (২৪) পিতা-মৃত কাশেম মিয়া, সাং-মনোহরপুর, পোঃ গোয়াইলজুরা বাজার, থানা- বালাগঞ্জ, জেলা- সিলেট, বর্তমানে বালুচরা, কাশেম কোম্পানির বাড়ির জামাই কলোনীর ভাড়া ঘর, পোস্ট- জালালাবাদ, থানা-বায়েজিদ বোস্তামি, সিএমপি, চট্টগ্রাম’কে গ্রেফতার করত অপহৃত ভিকটিমের বাবার সনাক্ত মতে আসামী জুয়েলের কোল হতে তার মেয়ে শিশু সিদরাতুল মুনতাহা ফারিয়া’কে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত স্বাক্ষীদের সামনে জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ জুয়েল মিয়া (২৪) জানায়, সে মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে মেয়ে শিশুটিকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় এবং বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি ও হুমকি ধামকি প্রদান করে।
৪। গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়।