রবিবার, ১১ এপ্রিল ২০২১, ০৬:৫১ পূর্বাহ্ন
মামুনুর রশিদ, জাবি প্রতিনিধি:
স্বপ্নসিঁড়ি স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন একটি সেচ্ছাসেবী শিক্ষামূলক সংগঠন। যাদের কাজ হচ্ছে স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের দিকনির্দেশনা, সহযোগিতা করা। বিভিন্ন সময়ে তাদের পাশে থেকে তাদের উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি ভবিষ্যতে দেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে ছাত্রছাত্রীদের গড়ে তোলা।
সংগঠনটির কিছু নির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য রয়েছে। যার ধারাবাহিকতায় সংগঠনটির সুনাম ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে এবং ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এলাকার শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গ, শিক্ষকবৃন্দ ও সফল উদ্যোক্তারা এই মহৎ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
তিনটি ক্ষেত্রে এই সংগঠনটি বর্তমানে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
* জেএসসি পরীক্ষা।
*এস এস সি পরীক্ষা।
*বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা।
সংগঠনটি ইতিমধ্যে এলাকার ছয়টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে একত্রিত করে পাঠ্যপুস্তকের আলোকে জে এস সি ও এস এস সি পরীক্ষার্থীদের কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে ৬৯ জন বিজয়ীকে পুরষ্কার বিতরণ ও সংবর্ধনার আয়োজন ও দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
তাছাড়াও জে এস সি,এস এস সি,এইচ এস সি পরীক্ষায় যারা ভালো ফলাফল অর্জন করেছে এবং বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা ভর্তি হয়েছে তাদেরকেও উৎসাহ প্রদান করার জন্য সংবর্ধনার আয়োজন করে।
স্বপ্নসিঁড়ির সদস্যদের দিকনির্দেশনা ও যথাযথ গাইডলাইনে ২০১৮-১৯ সেশনের ৮ জন শিক্ষার্থী বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট দূরীকরণ ও উপযুক্ত তথ্য ও সেবা প্রদান করেন উক্ত সংগঠনটি।
সংগঠনটির বর্তমান কমিটির সভাপতির দায়িত্বে আছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আল-আমিন হুসাইন হৃদয়। ও সাধারণ সম্পাদক দায়িত্বে আছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী স্বপ্নীল সাগর।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক স্বপ্নীল সাগর বলেন, ”সংগঠনটি সম্পূর্ণ শিক্ষামূলক ও অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি গ্রামের শিক্ষার্থীরা যথেষ্ট মেধাবী ও প্রতিভাবান । শুধুমাত্র যথাযথ গাইডলাইনের অভাব , ভীরুতা, অসেচতনতা ও শিক্ষকদের খামখেয়ালীর কারণে গ্রামের মেধাবী মুখগুলো ঝরে যায়। তাছাড়া নিরক্ষতা ও সামাজিক অসেচতনতার কারণে বিশেষ করে গ্রামের ছাত্রীরা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে ব্যহত হয়। পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনা করে পড়াশোনার পাশাপাশি এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টার মাধ্যমে যদি এলাকার মেধাবী মুখ গুলো সু শিক্ষায় শিক্ষিত হয় উঠে এটা যেমন এলাকার সুনাম, তেমনি আমাদের স্বপ্নসিঁড়ির প্রাপ্তি”
সংগঠনটি প্রতিষ্ঠাকালীন ২০ জন সদস্য নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমান সদস্য সংখ্যা প্রায় ৫০ জন। স্বপ্নসিঁড়ি সদস্যের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি, মেডিক্যাল কলেজ ও স্বনামধন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স পড়ুয়া মেধাবী শিক্ষার্থীরা। সংগঠনের কর্মীদের কিছু পরিকল্পনা রয়েছে যা খুব দ্রুত কার্যকর হবে বলে সংগঠনের সভাপতি আশাবাদী।
* স্কুল ও কলেজগুলোতে বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা।
*নিরক্ষতা দূরীকরণের জন্য এলাকার অশিক্ষিত ব্যক্তিদের স্বশিক্ষায় শিক্ষিত করা।
* সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বাল্যবিবাহ রোধ করা।
*মাদকের ভয়াবহ তুলে ধরে মাদকাশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা।
* আবেগের বশবর্তী হয়ে যেন কেউ আত্মহত্যার পথ বেছে না নেয় সেদিকে পূর্ণ দৃষ্টি রাখা ও জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা।
উল্লেখ্য, সংগঠনটির অর্থায়নের মূল উৎস সংগঠনের সদস্যদের মাসিক চাঁদা ও আর্থিক অনুদান। অনুষ্ঠানিকভাবে যার যাত্রা শুরু হয় ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে। সংগঠনটি রাজবাড়ি জেলার অন্তর্গত পাংশা উপজেলার স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার মান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।