পল্লবী থানার নরপশু ওসি পারভেজ ইসলাম ও এসআই জহিরের গ্রেফতারের দাবীতে মানব বন্ধন

রাজধানীর পল্লবীতে বসবাসরত ভূক্তভূগী পরিবার সমূহ।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

রাজধানীর পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পারভেজ ইসলাম নিজে ও
তার নির্দেশে প্রতিনিয়ত পল্লবী থানা এলাকায় বসবাসরত সাধারণ মানুষকে টাকার
জন্য মিথ্যা মামলা, হামলা ও বাড়ীঘর লুটপাটের প্রতিবাদে মানববন্ধন
কর্মসূচী ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেছে রাজধানীর পল্লবীতে বসবাসরত
ভূক্তভূগী পরিবার সমূহ।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধন কর্মসূচীতে পল্লবী থানা
ওসি কর্তৃক বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন ও নিপিড়নের শিকার ভূক্তভূগী পরিবারের
সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এই সময় আবেগঘন কন্ঠে ওসি পারভেজ ইসলাম কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে নির্যাতনের
শিকার ব্যক্তিরা তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এই সময় পল্লবী থানার
বর্তমান ওসি পারভেজ ইসলামকে তারা মানুষরূপী হায়েনার সাথে তুলনা করেন।

তারা বলেন, এই হায়েনা যতদিন পল্লবী এলাকায় থাকবে পল্লবীর একজন ব্যক্তিও
নিরাপদে বসবাস করতে পারবে না। তাকে তার দাবীকৃত নির্দিষ্ট অংকের টাকা না
দিলেই মিথ্যা মামলা. হামলা ও ডাকাতির শিকার হতে হবে। তাকে টাকা না দিলেই
হিরোইন মামলা দিয়ে আদালতে প্রেরণ করেন। পল্লবী থানায়ই বর্তমানে যেন
হিরোইনের মেলা হয়ে উঠেছে। এতো এতো অপকর্ম করলেও তার বিরুদ্ধে পুলিশের কেউ
কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। ইতিমধ্যে পারভেজ ইসলামের বিরুদ্ধে
প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি ও পুলিশ কমিশনার বরাবর অসংখ্য
অভিযোগ জমা দেওয়া হলেও, তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ হচ্ছেনা। এমন কি
যারা অভিযোগ দিচ্ছেন, তাদের নানাভাবে হয়রাণী ও নির্যাতন করা হচ্ছে। ওসি
পারভেজ ইসলাম গর্ব করে বলেন, কৃষ্ণপদ স্যার থাকতে আমার কিছু করার ক্ষমতা
বাংলাদেশের কারো নেই।
এই সময় ওসি পারভেজ ইসলাম কর্তৃক নির্যাতনের শিকার ব্যবসায়ী মোঃ পারভেজ
আবেগঘনভাবে তার উপর হওয়া হামলা ও নির্যাতনের বর্ণনা দেন।

তিনি বলেন, “হেন্ডকাফসহ পালিয়েছিল পারভেজ নামে এক মাদক মামলার আসামী।
পুলিশকে পরবর্তীতে হেন্ডকাফ আসামীদের দিয়ে দিতে দেখা গেছে। যদিও পুলিশ
বলছে পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছে। মাদক মামলার আসামী পারভেজ আদালতে
আত্নসমর্পণ করেছে, পুলিশ কিন্তু তাকে গ্রেফতার করেনি।
এদিকে হেন্ডকাফসহ যে পারভেজ পালিয়েছে, তাকে না ধরে, আমার বাসায় ওসি’র
নেতৃত্বে হামলা হয়েছে। ঘটনা লোপাট করতে বাসায় লাগানো সিসিটিভির ক্যামেরা
ভেঙে ফেলে এবং ডিভাইস নিয়ে যায়। যা উদ্ধার করলে সিসিটিভির ফুটেজে স্পষ্ট
সব দেখতে পারবেন। তাছাড়াও আমার কাছে হামলার সকল আলামত ও ঘটনার সাক্ষী
হিসেবে অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে।

এই সময় ওসি আমার বাসায় থাকা স্বর্ণলঙ্কার ও আমার দোকানের ৬ লাখ টাকার
শাড়ীসহ ১০ লাখ টাকার জিনিসপত্র ডাকাতি করে। আমার বাসার অন্য সদস্যদের ধরে
নিয়ে আরো টাকার জন্য অকথ্য নির্যাতন চালায়। পরবর্তীতে আমার ভাই ও বোন
জামাইকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠায়। আমি এই বিষয়ে পুলিশের সকল
শীর্ষ কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েও কোন বিচার তো পাইনি। উল্টো প্রতিনিয়ত
হয়রাণীর শিকার হচ্ছি। সেই সাথে ওসিকে আমার বাসায় আক্রমণের সাহায্য করার
অভিযোগে আরেক ব্যক্তির নামেও আইজিপিসহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দেওয়া হয়।
এছাড়াও এসআই জহির ও তার সোর্স মূলতঃ ডাকাতি ও আমাদের উপর নির্যাতনে
অগ্রনী ভূমিকা পালন করেন। এসআই জহির ও এই নরপশু ওসিকে গ্রেফতার না করা
পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।

এরপর আমি ঢাকার বাইরে থাকা অবস্থায় আমার বাসার নারীদের উপর আক্রমণ করে।
নারীরা ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিয়ে থানায় অভিযোগ জমা দেয়। কিন্তৃু, থানা
পুলিশ মামলা না নিয়ে উল্টো আমার নামে পুলিশের সেই সোর্সের ভাইকে দিয়ে
মামলা দেয়। শুধু আমি নই, পল্লবী থানা পুলিশের বিরুদ্ধে যেই অভিযোগ দেয়,
তাকে বা তার আত্নীয় স্বজনকে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়।

আমি জানি আজ এখানে মানববন্ধন করেছি। তাই হয়তো আজই বা ২-১ দিনের মাঝেই
আমার বিরুদ্ধে আরো কিছু মিথ্যা মামলা দায়ের করা হবে। যেখানে পল্লবী থানার
ওসির অনিয়মের বিরুদ্ধে সাংবাদিকরা পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করলে ওসি
সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রাণী করছে। সেখানে আমার মতো
সাধারণ মানুষ তো কিছুই না।

ওসি তার আয়কৃত অবৈধ টাকার ভাগ উপরের কর্তাদের দেয়। তাই তার বিচার পুলিশ
বিভাগের কেউ করবে না। কিন্তু, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তো মানবতার মা। আমি
আশা করে রয়েছি, আমাদের এই মানবন্ধনের খবর প্রধানমন্ত্রী দেখবেন এবং
নিরপেক্ষ তদন্ত করে এই ওসি’র বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিবেন।

মানববন্ধনে অংশ নেওয় অন্য ভূক্তভূগীরা আরও বলেন, আজ আমরা যারা মানবন্ধনে
অংশ নিয়েছি, সবার ছবি দেখে দেখে হিরোইনসহ বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে
আমাদের আটক করবে। তারপর চালাবে সীমাহীন নির্যাতন। কিন্তু, আমরা তো এই
ওসি’র কারণে সব হারিয়েছি। আমাদের এখন হয় মেরে ফেলা হোক নয়তো এই ওসি’র হাত
থেকে মুক্তি দেওয়া হোক।

একই সাথে মানববন্ধনে বক্তারা ওসি পারভেজ ইসলামের প্রত্যাহার ও গ্রেফতারের
দাবী জানান। এছাড়া ভূক্তভূগী মোঃ পারভেজ ওসি ছাড়াও এসআই জহিরের শাস্তি ও
গ্রেফতার দাবী করেন।

পল্লবী থানার ওসি কর্তৃক নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের পক্ষে

মোঃ পারভেজ

Exit mobile version