পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে মামলার শিকার দিনাজপুরের একাধিক ব্যবসায়ী

 

দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ দিনাজপুরে সিলেট চাইনিজ এন্ড রেস্টুরেন্ট নামে এক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে বাকিতে মাল দিয়ে পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে উল্টো মামলা খেয়ে হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন দিনাজপুরের একাধিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী ।
প্রসঙ্গত গত ১ডিসেম্বর আকর্ষণীয় এবং লোভনীয় পুরস্কার এর অফার দিয়ে দিনাজপুর শহরের চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর সম্মুখ সড়কে গোহাটি এলাকায় স্বত্বাধিকারী মোঃ সোহেল মিয়ার ব্যবস্থাপনায় সিলেট চাইনিজ এন্ড রেস্টুরেন্ট নামে একটি রেস্তরাঁ যাত্রা শুরু করে।কিন্তু দোকানের আসবাবপত্র, রান্নার সরঞ্জাম,সিটিং,কার্পেট,এসি,টিভি,সিসি ক্যামেরা,স্টিকার ,পোশাক থেকে খাবারের আইটেমসহ সব কিছুই যৎ সামান্য টাকা দিয়ে দিন কয়েকের মধ্যে বকেয়া টাকা পরিশোধের মিথ্যে আশ্বাস আর ব্যাংকের চেক দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে থাকে। ইতিমধ্যে চাল ,ডাল ,তেল সবজি থেকে শুরু করে আসবাবপত্র ও রান্নার সরঞ্জামসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ীরা পাওনা টাকা চাইতে গেলে বিভিন্ন মাধ্যমের দ্বারা একের পর এক তারিখ নিয়ে সময় ক্ষেপন করতে থাকে। নির্ধারিত তারিখ অতিবাহিত হওয়ার পর কয়েকটি সুনামধন্য ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান যেমন সিঙ্গার তাদের সরবরাহ করা চারটি এসি খুলে নিয়ে যায় ।লটারির জন্য নূর মটরস থেকে সরবরাহ করা দুটি মটরসাইকেল তারা ফেরত নিয়ে যায়।কিন্তু সিলেট চাইনিজ এন্ড রেস্টুরেন্ট এর স্বত্বাধিকারী মোঃ সোহেল মিয়া সকল পাওনাদারদের বিভিন্ন ব্যাংকের চেক দিয়ে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করে নির্ধারিত তারিখে ব্যবসায়ী পাওনাদারেরা ব্যাংকে গিয়ে টাকা না পেয়ে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসে। এভাবে একের পর এক তারিখ অতিবাহিত হওয়ার পরে পুনরায় তার দেয়া তারিখ মোতাবেক গত ৩০ডিসেম্বর সকল পাওনাদার ব্যবসায়ীরা সিলেট চাইনিজ এন্ড রেস্টুরেন্ট এর স্বত্বাধিকারী মোঃ সোহেল মিয়ার কাছে গেলে তিনি আবারও টাকা দিতে ব্যর্থ হন ।পরিশেষে মোঃ সোহেল মিয়া নিজের টাকা পরিশোধের ব্যর্থতা ঢাকতে তার ম্যানেজারকে নির্দেশ দেন মোমিন এন্টারপ্রাইজ এর মালামাল ফেরত দেওয়ার জন্য ।মোমিন এন্টারপ্রাইজ এর প্রদানকৃত মালামাল বুঝে নেওয়ার প্রাক্কালে অন্যান্য পাওনাদার ব্যবসায়ীরাও বকেয়া টাকা ফেরত না পাওয়ার আশংকায় রেস্টুরেন্ট এর মালামাল নিয়ে যায় ।এই ঘটনার পর সিলেট চাইনিজ এন্ড রেস্টুরেন্ট এর স্বত্বাধিকারী মোঃ সোহেল মিয়া দিনাজপুর কোতোয়ালি থানায় চাঁদাবাজি ও মালামাল লুটের অভিযোগএনে মোমিন এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্বাধিকারী মোঃ মোমিন,এস ডি টেইলাস এর স্বত্বাধিকারী মোঃ লতিফুর,মুন্নি ভ্যারাইটিজ স্টোরের স্বত্বাধিকারী মোঃ মাসুদ রানা,মোঃ শাহ আলম,মোঃ আরিফ,মোঃ রাহুল এবং ব্যবসায়ী মোঃ শামসুল এর নাম উল্লেখ করে ২০থেকে ৩০জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি মামলা দায়ের করে
গা ঢাকা দেন।
একাধিক ব্যবসায়ীর দেয়া তথ্য মতে জানা যায় সিলেট চাইনিজ এন্ড রেস্টুরেন্ট এর স্বত্বাধিকারী মোঃ সোহেল মিয়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সিকিউরিটি বাবদ ভবন মালিককে এক কোটি টাকা প্রদানের মিথ্যে কথা বলে ব্যবসায়ীদের আকৃষ্ট করে দিনাজপুরের বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার মালামাল বাকিতে নিয়ে বিভিন্ন ব্যাংকের চেক প্রদান করে।যা পরবর্তীতে ভবন মালিককে এক কোটি টাকার পরিবর্তে ১০লাখ টাকার চেক প্রদানের সত্য তথ্য বেরিয়ে আসে।যা যেই চেকে আদৌ কালেকশন হয়নি বলে জানান ভবন মালিক।একই সংগে বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান যেমন মোমিন এন্টারপ্রাইজ এর নিকট ২লক্ষ টাকার আসবাবপত্র ,মোমিনুল হক সবজি ব্যবসায়ীর নিকট দেড় লক্ষ টাকার সবজি,মুন্নি ভ্যারাইটি ষ্টোরের মাসুদ রানার নিকট ১লক্ষ ৯০ হাজার টাকার বাসনপত্র ,চাল ব্যবসায়ী শাহ আলম এর নিকট থেকে ১৮বস্তা চাল, ,ফার্নিচার থাই এলুমিনিয়াম এর দোকান থেকে ৩লক্ষ ২০হাজার ফিটিংস ,মিটসেফ হাউজ রেজওয়ান এর নিকট থেকে দেড় লক্ষ টাকার মালামাল ,নান্নু কসাই এর দোকানে ১লক্ষ ১০হাজার টাকার মাংস ,প্রগ্রেসিভ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও সমবায় সমিতি থেকে ৫লক্ষ টাকার ঋন, নিউ রূপালী ষ্টোর থেকে সাড়ে আট হাজার টাকার কার্পেট,ফিরোজ ষ্টোর থেকে ৮শ টাকার তোয়ালে, ,স্টিকার ব্যবসায়ীর নিকট ১লাখ ১৫হাজার টাকার স্টিকার,এস ডি টেইলাস এর নিকট ২৫হাজার টাকার পোষাকসহ একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে মালামাল ও নগদ টাকা নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে থাকে।এছাড়াও ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা আরো বলেন যে মোঃ সোহেল মিয়া সুদূর সিলেট থেকে এসে স্বল্প পুঁজি লাগিয়ে একাধিক ব্যক্তি ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে পথে বসিয়ে সে ছেড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল।আমরা দিনাজপুরের মানুষ সহজ সরল তাই তার কথায় বিশ্বাস করে ব্যবসায়ীক চিন্তা করেই লক্ষ লক্ষ টাকার মাল বাকি দিয়ে নিজেরাই আজ হয়রানির শিকার হচ্ছি।অনেক ব্যবসায়ী আবার ক্ষোভের বসীভুত হয়ে বলেন কষ্ট আর ঘাম ঝড়ানো পয়সা একটাকাও ছাড় দিবো না।প্রয়োজনে আমরাও আইনের আশ্রয় নিবো।সে বাইরে থেকে এসে এখানে ব্যবসার নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালানোর কৌশল হিসেবে চাইনিজ এন্ড রেস্টুরেন্ট এর ব্যবসা শুরু করেছিল।নইলে এরকম একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দিয়ে এক মাসেই সবজি থেকে প্রতিষ্ঠানের সবকিছুই বাকিতে নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করার স্বপ্ন দেখে কি করে?এ বিষয়ে সিলেট চাইনিজ এন্ড রেস্টুরেন্ট এর স্বত্বাধিকারী মোঃ সোহেল মিয়ার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তার কাছ থেকে কোন সদোওর পাওয়া যায়নি।

Exit mobile version