তানভীর হাসান,নিজস্ব প্রতিবেদক
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল কাইয়ূমের স্বাক্ষর ও সিল জালিয়াতির অভিযোগে তাফালবাড়িয়া হাসানিয়া আলিম মাদ্রাসার এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত মাওলানা জাকারিয়া ঘটনার পর থেকেই আত্মগোপনে রয়েছেন।
ইউএনও আবদুল কাইয়ূম জানান, বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে মঠবাড়িয়া থানায় প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে মামলাটি দায়ের করা হয়।
জানা গেছে মাদ্রাসার ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ের প্রভাষক মো. আলমগীর হোসেন দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় তার বেতন-ভাতা বন্ধ ছিল। নিয়ম অনুযায়ী, ইউএনও মাদ্রাসার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় শিক্ষক-কর্মচারীদের জানুয়ারি মাসের বিল অনুমোদন করেন, তবে অনুপস্থিত থাকায় আলমগীর হোসেনের বেতন বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।
এরপর সহকারী মৌলভী মাওলানা জাকারিয়া প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বাংলা প্রভাষক মাসুম গাজীর সহযোগিতায় ইউএনও ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা জাহাঙ্গীর হোসেনের স্বাক্ষর ও সিল জাল করে ব্যাংকে বিল জমা দেন।
সোনালী ব্যাংক, মঠবাড়িয়া শাখায় বিল জমা দেওয়ার পর বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে বিল পরিশোধ স্থগিত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। প্রশাসনের সতর্কতায় জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে, আর তা বুঝতে পেরে অভিযুক্ত শিক্ষক দ্রুত ব্যাংক থেকে পালিয়ে যান।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সহকারী শিক্ষক জাকারিয়া দীর্ঘদিন ধরে মাদ্রাসার বিলসংক্রান্ত কাজ করতেন। কিন্তু জালিয়াতির বিষয়টি অনাকাক্সিক্ষত এবং দুঃখজনক।
এদিকে, বেতন-ভাতা বন্ধ থাকা প্রভাষক আলমগীর হোসেন দাবি করেন,ইউএনওর স্বাক্ষর ও সিল জালিয়াতির বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে আমার কিছু বকেয়া বিল ছিল।
এ ঘটনায় ইউএনও আবদুল কাইয়ূম বলেন, আমার স্বাক্ষর ও সিল জাল করে ব্যাংকে বিল জমা দেওয়া হয়েছিল। বিষয়টি জানার পর আমি আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি এবং থানায় মামলা দায়ের করেছি।
মঠবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ্ আল মামুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,এ ঘটনায় তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও জালিয়াতির মামলা হয়েছে। তদন্ত চলমান রয়েছে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।