শিক্ষাজীবন শেষে তিনি শিক্ষাগতকে বেছে নেন। সেই হিসেবে তিনি নিজ গ্রামে ১৯৭৭ সালে চরম্বা উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে যোগদান করেন। সেখানে তিনি দীর্ঘ ০৭ (সাত) বছর কৃতিত্ব সহিত দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৩ সালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত পাঠানটুলি খান সাহেব সিটি কর্পেোরেশন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ঐ বছরের শেষের দিকে চট্টগ্রামের চকবাজার কাপাসগোলা সিটি কর্পেোরেশন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। এই স্কুলে কৃতিত্ব ও দক্ষতার সহিত দীর্ঘ ১০ (দশ) বছর শিক্ষকতা করে ১৯৯৪ সালে সরাইপাড়া সিটি কর্পেোরেশন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে চলে যান। এই স্কুলেও দীর্ঘ ০৪ (চার) বছর শিক্ষকতা করে ১৯৯৮ সালে লামা বাজার সিটি কর্পেোরেশন উচ্চ বালক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। সেখানে দীর্ঘ ০৭ (সাত) বছর শিক্ষকতা করে সর্বশেষ স্থানান্তরিত হন ডাবলমুরিং থানার চৌমুনীর মোড় পাঠানটুলি খান সাহেব সিটি কর্পেোরেশন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে। সেখানেও মৃত্যুর আগপর্যন্ত দীর্ঘ ০৭ (সাত) বছর কৃতিত্ব ও দক্ষতার সহিত শিক্ষকতা করেন।
মাওলানা হাবীবুর রহমান শুধু একজন শিক্ষক ছিলেন না। একজন আদর্শ পিতাও ছিলেন। এমনকি একজন অভিভাবকও বঠে। তিনি প্রত্যেকটি ছাত্র-ছাত্রীদেরকে নিজ সন্তানের মত মনে করতেন। আর ছাত্র-ছাত্রীরাও তাঁকে পিতৃতুল্য স্থানে স্থান দিতেন। তিনি সব সময় তাঁর হক আদায় করার ক্ষেত্রে অঙ্গীকারবদ্ধ ছিলেন।একজন শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনে তিনি অত্যন্ত সজাগ ছিলেন। নিয়ম শৃঙ্খলার প্রতি তিনি ছিলেন খুবই সচেতন। শিক্ষক সমাজে তিনি ছিলেন অত্যন্ত সম্মানিত ও শ্রদ্ধাভাজন একজন আদর্শ শিক্ষক। ছাত্র সমাজের কাছে একজন প্রাণপ্রিয় মান্যবর উস্তাদ।
মাওলানা মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান (রহ:) লোহাগাড়া থানার চুনতীর বড় মৌলভীর বাড়ী মাওলানা আব্দুল হাকীমের বংশধর মাওলানা আব্দুন নূর সিদ্দিকীর ৩য় কন্যা রোকিয়া সিদ্দিকার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁর শ্বশুর একজন প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন এবং অলীয়ে কামেল ছিলেন। যিনি একই সাথে চুনতীর ঐতিহাসসিক ১৯ দিন ব্যাপী মাহফিলে সিরাতুন্নবী (সাঃ) এর প্রতিষ্ঠাতা হযরত শাহ হাফেজ আহমদ (রহঃ) এর শ্বশুর ছিলেন। পারিবারিক জীবনে মাওলানা মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান(রহ) ০৮ (আট) সন্তান-সন্ততির জনক।
তিনি অত্যন্ত সাদাসিধে একজন সাধারণ মানুষ ছিলেন।তিনি অত্যন্ত পরহেজগার ও নীতিবান ছিলেন। সব সময় খোদার উপর ভরসা করতেন। তিনি অত্যন্ত বিনয়ী, সহজ, সদালাপী ও উত্তম চরিত্রের অধিকারী ছিলেন।পরনিন্দা,সমালোচনা,পরশ্রীকাতরতা ও মিথ্যা তাঁর মধ্যে ছিল না। তিনি এগুলো পছন্দও করতেন না। তিনি সত্য ভাষী, সহিষ্ণু, ধৈর্যশীল এবং অসাধারণ ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন ছিলেন।
১২ ই জুন ২০১২ সালে রোজ মঙ্গলবার মরহুম মাওলানা মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান (রহ:) তাঁর প্রভুর ডাকে না ফেরার দেশে চলে যান।তাঁর মৃত্যুতে চট্টগ্রামের সিটি কর্পোরেশনের শিক্ষক সমাজ শুধু একজন শিক্ষককে নয়, একজন অভিভাবককেও হারিয়েছে। তিনি এ দেশের মানুষের হৃদয়ে আজীবন বেঁচে থাকবেন।আল্লাহ পাক তাঁকে আন্বিয়া, সোলাহা ও শুহাদার সাথে জান্নাতুল ফেরদাউসের আলা ইল্লিয়িনে মর্যাদাপূর্ণ স্থান নসীব করুন।