জনবিচ্ছিন্ন সরকারের নতজানু অবস্থানে ঝুঁকিতে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব-ছাত্রশিবির
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতির গুরুতর অবনতিতে বিঘ্নিত হয়েছে জননিরাপত্তা। ইতোমধ্যে সীমান্ত এলাকার গোলাগুলিতে প্রাণ গেছে দুজন নিরীহ বেসামরিক নাগরিক। এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম বলেন, “সম্প্রতি মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যকার সংঘর্ষে নিক্ষিপ্ত মর্টারশেলে বাংলাদেশের ২ জন নিহত হয়। একই সাথে কয়েকজন আহত ও কিছু বেসামরিক অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে। এছাড়াও নিরাপত্তার অভাবে হাজার হাজার মানুষ বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। ফলে কৃষি কাজ ও শিক্ষা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যহত হচ্ছে।”
নেতৃবৃন্দ বলেন, “প্রহসনের নির্বাচনে কারচুপি করে ক্ষমতা ধরে রেখেছে বর্তমান জনবিচ্ছিন্ন আওয়ামী সরকার। যার কারণে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে সরকারের নতজানু অবস্থান দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট। ফলে মিয়ানমার সীমান্তে বারবার আন্তর্জাতিক নীতিমালা লঙ্ঘন হলেও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব হয়নি। উপরন্তু আক্ষেপের বিষয় এই যে, ভঙ্গুর সময়ে ভিনদেশি সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টার সফর নিয়ে লুকোচুরি করা হয়েছে। এতে জনগণের নিকট প্রতীয়মান হয়েছে যে, চরম ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব।”
নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ইতোপূর্বেও মিয়ানমার সেনাবাহিনী বাংলাদেশের আকাশ সীমালঙ্ঘনসহ বিভিন্নভাবে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছে। যা আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। কিন্তু আধিপত্যবাদীদের মদদপুষ্ট অবৈধ সরকারের নতজানু ও দুর্বল কূটনীতির কারণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। উপযুক্ত তৎপরতার অভাবে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনও সম্ভব হয়নি। পরিণতিতে ফল ভোগ করছে এদেশের সাধারণ নাগরিকরা।”
নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকারের দুর্বল অবস্থানের কারণে আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতিতে পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। এই সুযোগে খবরদারি করে চলেছে পরাশক্তিগুলো। কিন্তু এদেশের মুক্তিকামী জনতা আধিপত্যবাদীদের কাছে নিজেদের সার্বভৌমত্ব কখনোই বিকিয়ে দিবে না। জনগণ সরকারের দূরভিসন্ধিমূলক অবস্থানকে প্রতিহত করবে। সরকারের অবস্থান দুর্বল হলেও জনগণ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌত্বের প্রশ্নে ছাড় দেবে না। প্রয়োজনে জনগণ দেশের জন্য জীবন দিতেও প্রস্তুত আছে, ইনশাআল্লাহ।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির দ্বিধাহীনচিত্তে ঘোষণা করছে, জনগণ কখনো সরকারের গাফলতির কারণে গোলামির জিঞ্জির মেনে নেবে না। বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী দেশের নিরাপত্তা রক্ষায় যেকোনো শত্রুকে উপযুক্ত জবাব দিয়ে প্রতি ইঞ্চি মাটি ও জনগণের নিরাপত্তা দিতে সক্ষম। জনগণও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ওপর পরিপূর্ণ আস্থাশীল। শুধু অবৈধ সরকারের নতজানু নীতিই জনগণনের শঙ্কার কারণ। সুতরাং প্রিয় বাংলাদেশকে কোনোভাবেই আধিপত্যবাদীদের খেলনায় পরিণত হতে দেওয়া হবে না।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে সীমান্তে বাংলাদেশের প্রতি ইঞ্চি মাটি ও প্রতিটি জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানান।