মেয়েদের কি স্বপ্ন দোষ হয়? ইসলাম কি বলে–

স্বপ্নদোষের ক্ষেত্রে রাতে ঘুম ভেঙে যায় ৷ অন্তর্বাস, নিম্নাঙ্গের পোশাক তো বটেই ৷ অনেক সময় ভিজে যায় বিছানার চাদরও৷ কৈশোরেই এই বিভ্রাট বেশি হয় ৷ দেখা দিতে পারে জীবনের পরবর্তী সময়েও ৷শুধু পুরুষদের নয় ৷ মহিলারাও এই সমস্যার শিকার হতে পারেন ৷ ঘুমের মধ্যে স্বপ্নে যৌন সঙ্গম দেখে ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ হয় ৷ ঘুমের মধ্যে যৌন ক্রীড়া দেখলে মস্তিষ্ক আপনার স্নায়ুতে সঙ্কেত পাঠায় ৷ ঘুমের মধ্যে অবচেতনে মনে হয় যেন হয় আপনি নিজেই যৌন সঙ্গম করছেন ৷মস্তিষ্কের এই সঙ্কেতের ফলে ভ্যাজাইনাল ওয়ালে রক্তপ্রবাহ বেড়ে যায় ৷ কখনও কখনও এর ফলে অর্গ্যাজমও হতে পারে ৷ তবে সব সময় যে অর্গ্যাজম হবেই, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই৷অর্গ্যাজমের পরিবর্তে যৌন আর্দ্রতায় ভিজে যায় অন্তর্বাস ৷ সাধারণত কৈশোরকালীন এই সমস্যা বয়স বাডা়র সঙ্গে সঙ্গে কমে যায় ৷ এই সমস্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ারও কিছু থাকে না সাধারণত ৷হরমোনগত পরিবর্তনের জন্য বয়ঃসন্ধিতে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে ৷ এর সঙ্গে কোনও শারীরিক অস্বস্তি বা অন্য সমস্যা জড়িয়ে থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন ৷

ঘন ঘন স্বপ্নদোষের হার কমাতে কিছু ঘরোয়া উপায়ও আছে ৷ মেডিটেডিং বা অন্য কোনও রিল্যাক্সেশনের দ্বারস্থ হতে পারেন ৷ যদি অস্বস্তিতে পড়েন, তাহলে পরামর্শ নিতে পারেন মনোবিদ বা সেক্সোলজিস্টের ৷

সকলের জীবনেই যে স্বপ্নদোষ আসবে, তার কোনও মানে নেই ৷ তবে এলেও একে বিকৃতি বলে ভাবার কিছু নেই ৷ কৈশোরকালীন শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনের একটি অঙ্গ বলেই ধরে নিতে হবে ৷ غُسْلٍ إِذَا احْتَلَمَتْ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ نَعَمْ إِذَا رَأَتِ الْمَاءَ ‏فَقَالَتْ أُمُّ سَلَمَةَ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَتَحْتَلِمُ الْمَرْأَةُ فَقَالَ ‏”‏ تَرِبَتْ يَدَاكِ فَبِمَ يُشْبِهُهَا وَلَدُهَا ‏

উম্মু সালামাহ্ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মু সালামাহ্ একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললেন,

– হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ তা’আলা হক কথা বলতে লজ্জাবোধ করেন না। তাই মহিলাদের যখন স্বপ্নদোষ হয় তখন কি তার উপর গোসল করা জরুরি?

– রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হ্যাঁ, যখন সে বীর্য দেখবে।

– (এ কথা শুনে) উম্মু সালামাহ্ (রাযিঃ) বললেন, “ইয়া রাসূলাল্লাহ! মহিলাদেরও কি স্বপ্নদোষ – হয়”? তিনি বললেন: তোমার উভয় হাত ধূলিময় হোক! তাহলে তার সন্তান কেমন করে তার সদৃশ হয়?”

[সহীহ মুসলিম, হাদিস নম্বরঃ [599] অধ্যায়ঃ হায়য ঋতুস্রাব (كتاب الحيض) হাদিস একাডেমি]

উল্লেখ্য যে, সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ কথাও বলেছেন যে,

مَاءَ الرَّجُلِ غَلِيظٌ أَبْيَضُ وَمَاءَ الْمَرْأَةِ رَقِيقٌ أَصْفَرُ

“সাধারণত পুরুষের বীর্য হয় গাঢ় ও সাদা এবং স্ত্রীলোকের বীর্য হয় পাতলা ও হলদে।” (সহীহ মুসলিম হা/ ৩১১)>>>>>>>কেউ কেউ ১৩ বছর বয়সে পড়লে এ অভিজ্ঞতা লাভ করেন। যেসব মেয়েরা ঘুমের মধ্যে চরম পুলক লাভ করেন, সাধারণত তাদের বছরে কয়েকবার এটা হয়। মেয়েদের রতিমোচন হিসেবে ঘুমের মধ্যে যৌন উত্তেজনা জাগে যার মাধ্যমে তারা রতিমোচনের অভিজ্ঞতা লাভ করেন। ছেলেদের ক্ষেত্রে তাদের স্বপ্নদোষ নির্ণয় করা সহজ, কারণ হলো বীর্য।মেয়েদের ক্ষেত্রে যোনিপথে নিঃসরণ রাগ মোচন ছাড়াই যৌন উত্তেজনার চিহ্ন হতে পারে।মহিলাদের যখন পুরুষদের মতো স্বপ্নে স্বপ্নদোষ হতে দেখে, তবে কি তাদের ওপর গোসল ফরজ? প্রতিউত্তরে রসুল(সা:) বললেন হ্যা যখন সে তরল পদার্থ বা পানি দেখে, তখন যেন সে গোসল করে নেয় ।হযরত উম্মে সালমা(রা:) বলেন, আমি তাকে বললাম “উম্মে সুলাইম আপনি তো নারী জাতিকে অপমান করলেন।”

সুতরাং উক্ত হাদিস দ্বারা বুঝা গেলো পুরুষের ন্যায় মহিলাদেরও স্বপ্নদোষ হয়। মহিলাদের স্বপ্নদোষ জানার উপায় হোলো দুটি যেটা ইমাম নববী(রহ:) স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন:

যখন মহিলার বীর্যের গন্ধ পুরুষের বীর্যের গন্ধের ন্যায় হবে।

বীর্যপাতের সময় আনন্দ উপভোগ করা। এবং বীর্যপাতের পর যৌন চাহিদা দুর্বল হয়ে পড়া।

এদুটি উপায় থেকে কোনো একটি উপায় পাওয়া গেলে সকল ফুকাহায়ে কিরাম একমত যে তার ওপর গোসল ফরজ।

Exit mobile version