রহস্যজনক ‘গুপ্তধন এর সন্ধান মিললো গৌরীপুরে

গৌরীপুর(ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
রহস্যজনক গুপ্তধনের দুই সিন্দুকের সন্ধান মিলল ময়মনসিংহের গৌরীপুরে। উপজেলা সাবরেজিস্ট্রি অফিসের রেকর্ডরুম ভাঙার পর মাটি খুঁড়ে এ সিন্দুকের সন্ধান পাওয়া যায়। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারী) এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ‘গুপ্তধনের লোহার সিন্দুক’ দেখতে উৎসুক জনতার ভিড় জমে সেখানে।
মুহূর্তের মধ্যে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আর শহরজুড়ে ‘টক অব দ্য টাউনে’ পরিণত হয়।
ঐদিন সকাল থেকে ১১ জন শ্রমিক পাকা ভবনের মেঝে ভেঙে দুপুর ২টার দিকে দুটি সিন্দুক উত্তোলন করেন। প্রথম সিন্দুকটির ওজন প্রায় দুই মণ। এটার উচ্চতা ১ ফুট ৩ ইঞ্চি, লম্বা ১ ফুট ১১ ইঞ্চি, প্রস্থ ১ ফুট ৩ ইঞ্চি। ভিতরে ৩টি ভাগে বিভক্ত। দ্বিতীয় সিন্দুকটির ওজন ৪-৫ মণ হবে বলে জানান উত্তোলনকারী কর্মীরা।
তারা জানান, দ্বিতীয়টার (বড়টার) উচ্চতা ১ ফুট ৮ ইঞ্চি, লম্বা ২ ফুট ৮ ইঞ্চি, প্রস্থ ১ ফুট ১১ ইঞ্চি। এটা দুভাগে বিভক্ত। সিন্দুকের উপরের অংশ বিশেষ আকৃতির লক দিয়ে তৈরি করা ছিল। দীর্ঘদিন মাটির নিচে পড়ে থাকায় সিন্দুকের চারপাশ লালচে রঙের হয়ে গেছে। সোনা-রূপা আর মূল্যবান জিনিস রয়েছে- এমন শঙ্কায় উৎসুক জনতা ভিড় করলেও সিন্দুকের ভিতরে মূল্যবান তেমন কিছুই পাওয়া যায়নি।
এ প্রসঙ্গে গৌরীপুর সাবরেজিস্ট্রার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, বড় সিন্দুকটিতে মাত্র ২টি পুরাতন চাবি পাওয়া গেছে। আর ছোট সিন্দুকে ১৯৮০ সালের একটি অসম্পাদিত দলিল, কয়েকটি ৫২ ধারার নোটিশ আর কিছু পুরাতন অপ্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ১৯৮০ সালের পরে আর এটি খোলা হয়নি। আমি এ অফিসে মাত্র ৪ মাস হয়েছে এসেছি। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।
দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাচিবেশ শাহিদ মুনশী জানান, দীর্ঘদিন যাবত রেকর্ডরুমটি অব্যবহৃত ছিল। এটি অপ্রয়োজনীয় হওয়ায় ভাঙার সময় সিন্দুক ২টি দেখা যায়। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করার পর অনুমোদনসাপেক্ষে সাংবাদিক ও সবার সম্মুখে উত্তোলন এবং খোলা হয়। এটা নিয়ে সবার মাঝে নানা সন্দেহ বিরাজ করছিল, যার অবসান হলো।
তিনি আরও বলেন, সিন্দুকটি বর্তমানে সাবরেজিস্ট্রি অফিসের বর্তমান রেকর্ড রুমে রাখা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
হারুন পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা মো. হারুন মিয়া জানান, সবাই বলছে এখানে গুপ্তধন আছে, এখন দেখলাম কিছুই নাই, আমরা হতাশ।
সিন্দুক উত্তোলনের সময় উপস্থিত ছিলেন গৌরীপুর দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আব্দুল জলিল মুনশী, সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাচিবেশ শাহিদ মুনশী, যুগ্ম সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ভুট্টো, কোষাধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা, প্রচার সম্পাদক আতাউর রহমান সোহেল, মোহরাব আমিনুল ইসলাম, আবুল কালাম প্রমুখ।
Exit mobile version