আলিফ হোসেন, তানোরঃ
রাজশাহী-১ সংসদীয় আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দলীয় মনোনয়ন পেতে এরই মধ্যে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। কেউ কেউ মোটরসাইকেল শোডাউন করে তৃণমূল নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মনোযোগ আর্কষণের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে।আবার অনেকে দলের নীতিনির্ধারণী মহলের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্য নানা কৌশল খুঁজে বের করার চেষ্টায় মরিয়া রয়েছে। এসব মনোনয়ন প্রত্যাশীরা জোরেশোরেই মাঠে নেমেছেন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ থেকে এ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেতে চান প্রায় হাফ ডজন নেতা। এর মধ্যে বর্তমান সাংসদ আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরী, মুন্ডুমালা পৌরসভার সাবেক মেয়র গোলাম রাব্বানী, দেওপাড়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান আখতার, সাবেক ডিআইজি মতিউর রহমান, আয়েশা আক্তার ডালিয়াপ্রমুখ। এদিকে একাধিক নেতা মনোনয়ন চাইলেও ফারুক চৌধুরীকে নিয়েই আওয়ামী লীগের নেতা ও কর্মী-সমর্থকেরা একট্টা। আওয়ামী লীগ এখানে ফারুক চৌধুরীর বিকল্প স্বপ্নেও ভাবেন না।
জানা গেছে, রাজশাহী অঞ্চলে আওয়ামী লীগের আদর্শিক নেতৃত্ব ও রাজনীতিতে আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরী এমপির কোনো বিকল্প নাই। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারো তাকে নৌকার মাঝি করার সবুজ সংকেত দিয়ে মাঠ গোছানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ফলে আবার তিনি নৌকার টিকিট পাচ্ছেন এটা প্রায় নিশ্চিত। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একটি সুত্র জানায়, প্রথম ধাপে দেশব্যাপী ১৭৫ জন প্রার্থীর তালিকা প্রায় চুড়ান্ত করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। যেখানে প্রথম ধাপের তালিকায় রাজশাহী-১ আসনে সাংসদ আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরীর নাম রয়েছে। আওয়ামী লীগে ফারুক চৌধুরীর দীর্ঘ প্রায় দু’দশকের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক
জীবন, দুরদর্শিতা ও আদর্শিক নেতৃত্ব গুন পর্যালোচনা করে তার টিকিট নিশ্চিত
করেছে। রাজশাহী অঞ্চলের রাজনৈতিক অঙ্গনে এমপি ফারুক চৌধুরীকে লৌহমানব হিসেবে সবাই চেনেন। অন্যরা রাজনীতি করে যেখানে পৌঁচ্ছাতে চাই, সেখান থেকে ফারুক চৌধুরীর রাজনীতির শুরু। প্রধানমন্ত্রীর বিশস্ত আস্থাভাজন ও আদর্শিক নেতৃত্ব হিসেবে রাজনীতি করে আসছেন। ফলে তিনি মনোনয়ন নিয়ে ভাবেন না, তাঁর সুপারিশে অনেকের মনোনয়ন হয়। রাজনৈতিক অঙ্গনের যেসব অর্বাচীনরা এটা বোঝে না, তারাই ফারুক চৌধুরী সম্পর্কে নেতিবাচক আলোচনা করেন। রাজনৈতিক প্রতিযোগীতায় বিজয়ী হতে তার গেম প্ল্যানের তৈরীর যে দক্ষতা রয়েছে, সেটা অনেকের নাই। তিনি যেকোনো সময় যেকোনো গেম প্ল্যান তৈরীর ক্ষমতা রাখেন। যেটা একজন সফল রাজনৈতিক নেতার বড় গুণ।
জানা গেছে, রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হবার অনেক আগেই তিনি অর্জন করেন সিআইপি মর্যাদা, হয়েছেন রাজশাহী চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ও সর্বোচ্চ স্বচ্ছ আয়কর দাতা। এমপি ফারুকের রয়েছে নিজস্ব স্বকীয়তা, সামাজিক মর্যাদা, পারিবারিক ঐতিহ্য এবং পরিচিতি আর্থিক স্বচ্ছলতা রয়েছে বিশাল কর্মী বাহিনী। তিনি অনেক আগেই আদর্শিক, কর্মী-জনবান্ধব, সৎ রাজনৈতিকের প্রতিকৃতি ও গণমানুষের নেতার উপাধি অর্জন করেছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, এমপি ফারুক চৌধুরী তানোর-গোদাগাড়ী থেকে প্রতিদিন যদি ৫ জন মানুষের উপকার করে থাকেন, তাহলে ৩৬৫ দিনে ১৮২৫ জন এবং ২০ বছরে ৩৬ হাজার ৫০০ জন মানুষের উপকার করেছেন। উপকারভোগী এই মানুষগুলো তো এখানো এমপির পক্ষে মাঠে রয়েছে
এমপির জন্য জীবন বাজি রেখে কাজ করতে প্রস্তুত। তাহলে তাকে যারা জনবিচ্ছিন্ন বলছে তারা কারা, আর এদের পরিচয় দেবার মতো কিছু আছে কি ? তবে এদেরও কারো কারো সঙ্গে অনেক মানুষ রয়েছে যারা কমবেশী সবাই পাওনাদার কেউ সালিশের জরিমানার টাকা, কেউ চাকরির আশায় দেয়া টাকা, কেউ গভীর নলকুপের অপারেটর নিয়োগের টাকা, কেউ মোটরসাইকেল শোডাউনের তেলের টাকা, ডেকোরেটর ভাড়ার টাকা ইত্যাদি। অন্যদিকে যারা মনোনয়ন প্রত্যাশী তারা সবাই মিলে কি একজন ফারুক চৌধুরী সৃষ্টি করতে পারবেন ? কিন্ত্ত এমপি ফারুক চৌধুরী রাতারাতি এসব দু”দশটা মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মতো নেতা সৃস্টির ক্ষমতা রাখেন। তাহলে বুঝতে হবে কার সঙ্গে তারা প্রতিদন্দিতা করতে নেমেছেন, যেখানে তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার ও পরাজয় নিশ্চিত বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের সব প্রটৌকল ভেঙ্গে একক ক্ষমতা বলে আওয়ামী লীগে যোগদান করিয়ে ফারুক চৌধুরীকে রাজনীতিতে নিয়ে এসে এমপি নির্বাচনে ৪ বার দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন, একবার প্রতিমন্ত্রী এবং জেলার সভাপতি ও সম্পাদক করেছেন। একজন নেতা বা কর্মীর প্রতি কতটা আস্থা, বিশ্বাস এবং ভরসা থাকলেই কেবল একটি রাজনৈতিক দলের সভাপতি ও বিশ্বমানের নেতা কাউকে এভাবে সম্মানিত করেন সেটার গভীরতা অনুধাবন করতে হবে। তবে এমপিবিরোধী একশ্রেণীর রাজনৈতিক অর্বাচীনদের সেই সম্পর্কে কোনো ধারনা বা জ্ঞান নাই। আবার জনপ্রতিনিধি হিসেবে কৃষিক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখায় বৃক্ষরোপণে রাস্ট্রপতি ও প্রধান কর্তৃক স্বর্ণপদক অর্জন করেছেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের অভিমত, এমপি ফারুকের মতো নেতৃত্বরা মনোনয়ন নেয় না, তাদের সুপারিশে দু’ চারজন মনোনয়ন পায়। ফলে রাজনীতিতে নেতৃত্বের প্রতিযোগীতায় ফারুক চৌধুরীদের মতো নেতৃত্বকে হারানো যায় না, তারা যেকোনো রাজনৈতিক দলের কাছেই বড় সম্পদ, তবে দল, নেতা, নেতৃত্ব সর্বপোরী নিজের অবস্থান ধরে রেখে দলের আগাছা-পরগাছা ছুড়ে ফেলে দলের ব্যালেন্স ঠিক রাখতে কখানে কখানো তারা হেরে গিয়ে বিজয়ের স্বাদ গ্রহণ করে। তাদের এই হারে পরাজয়ের গ্লানি নয় থাকে বিজয়ীর উল্লাস রাজনীতি সব সময় বিজয়ী নয় হেরে গিয়ে বিজয়ের স্বাদ নিতে হয়। তাই ফারুক চৌধুরীদের মতো নেতৃত্বের সঙ্গে প্রতিযোগীতার নামে বিরোধ নয় তাদের সঙ্গে সমঝোতা করে চলতে এবং তাদের কাছে থেকে শিখতে হয় ঠান্ডা-শিতল ঘরের রাজনৈতিক কলাকৌশল। আর যাদের এসব বোঝার ক্ষমতা নাই তারাই রাজনীতি থেকে ছিটকে পড়ে অতল গহবরে হারিয়ে যায়। ডিজিটাল বাংলাদেশে এখন মাঠে-ঘাটে বগী আওয়াজ দিয়ে বা ভাড়া করা লোক দিয়ে সমাবেশ করে রাজনীতি হয় না।এখন ঠান্ড ঘরে বসে গরম কফির কাপে চুমুক দিয়ে টেলিভিশনের পর্দায় ফর্মুলাওয়ান ওযান দেখতে দেখতে রাজনীতি হয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনে এমপি ফারুক চৌধুরীর পুনঃরায় সভাপতি হবার সুযোগ থাকলেও তিনি সভাপতি না হয়ে তার অনুগতদের সভাপতি-সম্পাদক করে তার প্রতিপক্ষদের আস্তাকুঁড়ে ছুড়ে ফেলে তার রাজনৈতিক দুরদর্শীতার পরিচয় দিয়েছেন, এবং তিনিই একমাত্র নেতা যিনি নিজেই দলের সভাপতির কাছে জেলা সভাপতির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন। যেখানে দলের একটি পদের জন্য অন্যরা এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করে ক্লান্ত হয়ে পড়ে, সেখানে এমপি
ফারুক এমনই নেতা যিনি জেলার সভাপতির পদ স্বেচ্ছায় ছেড়ে দিতে পারেন। অথচ তার বিরোধী একশ্রেনীর রাজনৈতিক বেকুব এমপি ফারুক চৌধুরীকে হারানোর কথা ভেবে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতে গিয়ে পরক্ষনেই ভুল ভাঙ্গে সেই ঢেঁকুর আর গিলতে পারছে না।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের ভাষ্য, রাজশাহী-১ আসন ছিল বিএনপি-জামায়াতের দুর্গ বা আঁতুড় ঘর। বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান ও ডাকমন্ত্রী
প্রয়াত ব্যারিষ্টার আমিনুল হক ছিলেন জাতীয় পর্যায়ের হেভিওয়েট ও অপ্রতিদন্দী নেতা। ফলে এখানে প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের সভা-সমাবেশ তো দুরের কথা পোস্টার সাঁটানো ছিল দুরুহ।
তাকে পরাজিত করে এমপি তো পরের কথা তার বিপক্ষে বাধাহীনভাবে দলীয় কর্মসূচি পালন করতে পারাটাই ছিল আওয়ামী লীগের কাছে পরম পাওয়া। তাকে পরাজিত করে আওয়ামী লীগের কেউ এমপি হবে এমন আশা দলের নীতিনির্ধারণী মহল কখানো কল্পনা করেনি।
কিন্ত্ত ফারুক চৌধুরীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নবযৌবন ফিরে পায়। ব্যারিস্টার আমিনুলের মতো হেভিওয়েট অপ্রতিদন্দী নেতাকে টেক্কা দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেন। দলের নেতা ও কর্মী-সমর্থকদের ওপর বিরোধীদের হামলা মামলা মোকাবেলার দায় নেন ফারুক চৌধুরী। তিনি তার রাজনৈতিক দুরদর্শীতায় ব্যারিষ্টার আমিনুলের মতো হেভিওয়েট অপ্রতিদন্দী
নেতৃত্বকে পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন, করেছেন আওয়ামী লীগকে প্রতিষ্ঠিত, বিএনপি-জমায়াতের আঁতুড় ঘর দুমড়ে-মুচড়ে তছনছ করে আওয়ামী লীগের বসত ঘরে পরিনত করেছেন।এমপি ফারুক চৌধুরীর দীর্ঘ দুদশকের রাজনৈতিক জীবনে অসংখ্য কাজের মধ্যে দুএকটি কাজ নিয়ে বিতর্ক বা সমালোচনা হতেই পারে। কিন্ত্ত ব্যারিস্টার আমিনুলের মতো হেভিওয়েট অপ্রতিদন্দী
নেতৃত্বকে পরাজিত করে জামায়াত-বিএনপির দুর্গে আওয়ামী লীগকে প্রতিষ্ঠা করতে ফারুক চৌধুরীর যে অবদান সেটাকে অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নাই, যেটা দলের নীতিনির্ধারণী মহলও জানেন। শুধুমাত্র এই অবদানের জন্যই তো ফারুক চৌধুরীর বিকল্প নেতৃত্বের কথা চিন্তা করা যায় না। ফারুক চৌধুরীর আওয়ামী লীগে আশার আগে ও পরের অবস্থান বিশ্লেষণ করলেই স্পষ্ট হবে তিনি আওয়ামী লীগের কাছে কত বড় সম্পদ, এটা জানার জন্য রাজনৈতিক বিশ্লষক হবার প্রয়োজন নাই। এসব বিচার-বিশ্লেষণ করেই তাকে আবারো নৌকার টিকিট দেবার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের নীতিনির্ধারণী মহল বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে। এবিষয়ে কলমা ইউনিয়ন (ইউপি) পশ্চিম আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুর রাহিম বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে যেমন ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগের বিকল্প নাই, তেমনি রাজশাহী-১ আসন ধরে রাখতে সাংসদ আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরীর কোনো বিকল্প নাই। যে যাই বলুক এখানে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তিনি অপ্রতিদন্দী নেতৃত্ব।#
Post Views: ১১৯
Like this:
Like Loading...
Related