সুস্থ ও ফিট থাকার জন্য ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা, ডায়াবেটিস, হৃদরোগসহ অনেক মারাত্মক রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেক মানুষই অনিদ্রায় ভোগেন। প্রতিদিন অন্তত ৭-৯ ঘণ্টা ঘুমানো আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি। আর এ পরিমাণ ঘুম না হলে দেখা দিতে পারে নানান রকম সমস্যা।
কিন্তু অনেকেই আছেন যাদের রাতে ভালো ঘুম হয় না।অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, শরীরচর্চার অভাব, গ্যাজেট নির্ভর আধুনিক জীবন বেশিরভাগ মানুষের ঘুম কেড়ে নিয়েছে।রাতেরবেলা শরীরে ক্লান্ত থাকলেও চোখে ঘুম আসে না। ঘুম না আসার কারণে দৈনন্দিন কাজে ব্যাঘাতসহ নানা ধরনের শারীরিক জটিলতায় ভুগতে হয়।
আবার অনেকেই রাতে ঠিকমতো না ঘুমাতে পেরে বিভিন্ন ওষুধের ওপর নির্ভর হয়ে পড়েন যা স্বাস্থ্যের জন্য আরও ক্ষতিকর হতে পারে। তাই শরীরের কোনো ক্ষতি না করেই বেছে নিতে পারেন কিছু প্রকৃতিক খাবার; যা আপনাকে ভালো ঘুম হতে সহায়তা করবে।অনেকের আবার ঘুম আসে, কিন্তু বারবার ভেঙেও যায়। এই সমস্যা এড়াতে ঘুমানোর আগে খেতে পারেন কিছু উপকারী খাবার, যা খেলে রাতে ভালো ঘুম হবে।
জানুন এমনই কিছু খাবার সম্পর্কে-
কলায় প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে। তাই কলা খেলে রাতে ঘুম ভালো হয়।
মধু সেরেটোনিন ও মেলাটোনিন তৈরি করে। নিয়মিত মধু খেলে ভালো ঘুম হয়।
মিষ্টি আলুকে বলা হয় ‘ঘুমের মাসি’। এতে বিদ্যমান পটাশিয়াম ঘুমাতে সাহায্য করে।
ডিমে আছে ভিটামিন ডি। মস্তিষ্কে যে অংশের নিউরন ঘুমাতে সাহায্য করে, ডিমের ভিটামিন ডি সেখানে কাজ করে। ভিটামিন ডির ঘাটতি থাকলে সহজে ঘুম আসে না।
রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে গরম দুধ পান করুন। গরম দুধ অনিদ্রার সমস্যা মেটানোর ঘরোয়া প্রতিকার। দুধে চারটি যৌগ রয়েছে, যা ঘুমের উন্নতি ঘটায়। যেমন- ট্রিপটোফ্যান, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি ও মেলাটোনিন।আয়ুর্বেদে রাতের সময়কে দুধ পানের সেরা সময় বলে মনে করা হয়।
আখরোটে ঘুম বাড়ানোর মতো কিছু যৌগ আছে। এতে মেলাটোনিন, সেরোটোনিন ও ম্যাগনেসিয়ামের মতো উপাদান রয়েছে, যা ঘুমের মান উন্নত করতে সাহায্য করে।
রাতে ঘুমানোর আগে বাদাম খেলেও আপনার শান্তিতে ঘুম হয়। বাদামে ভালো পরিমাণে মেলাটোনিন থাকে। এটি একটি হরমোন, যা ঘুম ও জেগে ওঠার চক্র নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। বাদাম ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ। এটি পেশি শিথিল করে এবং ঘুমের উন্নতিতে সাহায্য করতে পারে।
অনেক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কিউই ফল খাওয়া রাতে শান্তিপূর্ণ ঘুম পেতে সাহায্য করে। কিউই এবং ঘুমের মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক থাকতে পারে বলে দাবি করেছেন গবেষকরা।
শুনতে একটু অবাক লাগলেও এটি সত্য যে হারবাল চা রাতে ভালো ঘুম হতে সহায়তা করে। আর হারবাল চা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের একটি সমৃদ্ধ উৎস। এতে থাকা ফ্ল্যাভোনয়েড অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো ভালো ঘুমে হওয়ার পাশাপাশি প্রদাহ কমাতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতেও ভূমিকা রাখে।
ভাতের মতো ওটমিলেও কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বেশি থাকে এবং এটিতে কিছুটা বেশি ফাইবার থাকে। এ কারণে এটি ঘুমানোর আগে খেলে তা তন্দ্রাকে প্ররোচিত করে এবং আপনার ভালো ঘুম হতে সহায়তা করতে পারে।
ঘুমোনোর আগে এক টুকরো করে ডার্ক চকোলেট খান। তাতে এক দম শিশুর মতো গভীর ঘুমোবেন। কারণ ডার্ক চকোলেট খেলেও শরীরে সেরোটোনিনের ক্ষরণ বাড়ে। তাতে ঘুম ভালো হয়।