প্রথমবারের মতো লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগে (এলপিএল) খেলতে নেমে বল হাতে ভালোই করলেন তাসকিন আহমেদ। রোমাঞ্চ-উত্তেজনায় ঠাসা ম্যাচে কলম্বো স্ট্রাইকার্সের জয়ে রাখলেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। তার প্রতিপক্ষ হিসেবে খেলতে নেমে হারের তেতো স্বাদ পাওয়া শরিফুল ইসলাম দুই উইকেট নিলেও ছিলেন খরুচে।
শেষ ওভারের রোমাঞ্চে শনিবার (৬ জুলাই) ক্যান্ডি ফ্যালকন্সকে ২ রানে হারায় কলম্বো। ১৯৯ রানের পুঁজি নিয়ে প্রতিপক্ষকে তারা থামাতে পারে ১৯৭ রানে।
শেষ ওভারে ২০ ওভারের সমীকরণে প্রথম বলে উইকেট হারায় ক্যান্ডি। পরের বলে সিঙ্গেল নিয়ে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকে স্ট্রাইক দেন পাভান রাত্নায়েকে। পরের তিন ডেলিভারিতে থিসারা পেরেরাকে দুই ছক্কা ও এক চার মারেন ম্যাথিউস। শেষ বলে ৩ রানে লক্ষ্যে সরাসরি বোলারের হাতে মেরে রান নেওয়ার চেষ্টায় রান আউট হন তিনি।
এলপিএলে অভিষেক ম্যাচে জয় পাওয়া তাসকিন ৪ ওভারে ৩০ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। দুটি ছক্কার সঙ্গে হজম করেন ৩ চার। ১৪ বল দেন তিনি ডট। আর শরিফুল ৪ ওভারে ২ উইকেট নিতে খরচ করেন ৪৩ রান। হজম করেন ৩ ছক্কা ও ১ চার, ডট দিতে পারেন ৬ বল।
ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারে আক্রমণে এসে ওয়াইড দিয়ে শুরু করেন শরিফুল। চতুর্থ বলে তাকে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কায় ওড়ান অ্যাঞ্জেলো পেরেরা। পরের ডেলিভারিতে লেগ বাই থেকে আসে চার রান। শেষ বলে মিডউইকেটে খেলে ৩ রান নেন পেরেরা। ওভারটি থেকে আসে মোট ১৬ রান। শরিফুলের খরচের খাতায় যোগ হয় ১২।
চতুর্থ ওভারে ফের বোলিংয়ে আসা শরিফুলকে প্রথম বলেই মিডউইকেট দিয়ে ছক্কায় ওড়ান পেরেরা। এক বল পর দলকে প্রথম সাফল্য এনে দেন বাঁহাতি এই পেসার। মিডউইকেট দিয়ে ছক্কার চেষ্টায় এবার বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন রাহমানউল্লাহ গুরবাজ। পরের দুই বল ডট দিয়ে শেষ ডেলিভারিতে চার হজম করেন শরিফুল। নিজের দ্বিতীয় ওভারে দেন ১১ রান।
লম্বা বিরতি দিয়ে শরিফুলকে ষোড়শ ওভারে ডাকেন ক্যান্ডি অধিনায়ক ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। এবার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে দেন ৭ রান। কোটার শেষ ওভারে আরেকটি উইকেট পেলেও রান খরচ করেন তিনি ১৩।
ওয়াইড দিয়ে শুরু করা ১৮তম ওভারের প্রথম তিন বলে আসে মোট ৬ রান। চতুর্থ বলে মিডউইকেট দিয়ে ছক্কা মারেন চামিকা কারুনারাত্নে। পরের বলটি ছিল পায়ের ওপরে। ফ্লিক করে শর্ট ফাইন লেগে ধরা পড়েন কারুনারাত্নে।
গ্লেন ফিলিপসের ৪৩ বলে ৭০ ও বাকিদের অবদানে বড় পুঁজি গড়ে কলম্বো।
ব্যাটিংয়ে নেমে দুশমান্থ চামিরাকে বিশাল এক ছক্কা মারা তাসকিনের বোলিংয়েও শুরুটা হতে পারত দুর্দান্ত। তার করা ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই থার্ডম্যান বাউন্ডারিতে দিনেশ চান্দিমালের ক্যাচ ছাড়েন কলম্বোর ফিল্ডার। উল্টো হয় ছক্কা। ওভারের শেষ ডেলিভারিতে তাকে আরেকটি ছক্কায় ওড়ান চান্দিমাল।
প্রথম ওভারে ১২ রান দেওয়া তাসকিন দ্রুত ঘুরে দাঁড়ান। চতুর্থ ওভারের প্রথম বলেই দলকে এনে দেন তিনি সাফল্য। সুইং করে ভেতরে ঢোকা বলের লাইন মিস করে বোল্ড হন চান্দিমাল। বুনো উল্লাসে মেতে ওঠেন তাসকিন। চমৎকার বোলিংয়ে পরের পাঁচ ডেলিভারিতে স্রেফ এক রান দেন ডানহাতি এই পেসার।
চার হজম করে ষোড়শ ওভার শুরু করেন তাসকিন। এরপর ঘুরে দাঁড়ান তিনি দারুণভাবে। পরের পাঁচ বলে দেন কেবল দুই রান। কোটার শেষ ওভারটি করতে এসে ১১ রান দেন তাসকিন।
১৮তম ওভারের প্রথম বলেই তাকে চার মারেন ম্যাথিউস। পরের পাঁচ বল থেকে আসে চার রান, যার একটি লেগ বাই। শেষ বলে তাকে আবার চার মেরে বল রানের ব্যবধান কমান লঙ্কান অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ম্যাথিউস।
শেষ ওভারে দলকে জয়ের আশা দেখানো ম্যাথিউস ১৪ বলে করেন ৩৩ রান। ক্যান্ডির হয়ে ৩২ বলে সর্বোচ্চ ৫৬ রানের ইনিংস খেলেন মোহাম্মদ হারিস।