রাজশাহী প্রতিনিধি
রাজশাহীর তানোর পৌর সদরের আলোচিত এবং পুলিশের তালিকাভুক্ত ও একাধিক মাদক মামলার আসামি শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী কথিত ফকির সাহেব নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়নাকে ফুলের মালা পরিয়ে শুভচ্ছা জানিয়ে সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আপলোড করেছে। ছবিটি ফেসবুকে আপলোডের সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। কেউ কেউ বলছে, মাদক কারবার নিবিঘ্ন করতে ফকির এমন জঘন্য কাজ করেছে।
স্থানীয়রা জানান,ফকিরের বাড়ি মাদকরাজ্য খ্যাত ঠাকুর পুকুর মহল্লায়। সে জনৈক হক সাহেবের পুত্র। দীর্ঘ দেড় দশক যাবত মাদক ব্যবসা করে অঢেল সম্পদের মালিক এখন ফকির। গত
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাদ্দাম হোসেন নামের ফেসবুক আইডিতে দেখা যায় ছবিটি। আওয়ামী লীগের দু’নেতাকে পেছনে রেখে কালো গেঞ্জি, কালো চশমা ও কালো প্যান্ট পরে চেয়ারম্যানের গলায় ফুলের মালা দিচ্ছেন ফকির। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবিটি আপলোড হওয়ার পরপরই শুরু হয় নানা সমালোচনা। কার ইশারায় মাদক সম্রাটকে চেয়ারম্যানের কাছে নিয়ে যাওয়া হল, কারা তাকে নিয়ে গিয়ে এমন বিতর্ক কান্ড করল, ফকিরের তো ক্ষমতা নেই চেয়ারম্যানের গলার মালায় হাত রাখা এমন নানা প্রশ্ন বিরাজমান । কার সাহসে এমন জঘন্য কাজ করে চেয়ারম্যান হেয় করল, তাদেরকে বহিষ্কার করা হোক। তারা কি সত্যি আওয়ামী লীগ নাকি আমি লীগ।
দলের সিনিয়র নেতারা বলেন, একজন চিহ্নিত মাদকের গডফাদার কে ওয়ার্ড সভাপতি চেয়ারম্যানের কাছে এনে তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। ফকির তালিকা ভুক্ত মাদক সম্রাট। তার মত ব্যক্তিকে কেন ওয়ার্ড সভাপতি চেয়ারম্যান সামনে নিয়ে এলেন। অবশ্য এটা করতে পারলে যারা ফকিরকে এনেছিল তাদের অবশ্যই সার্থকতা আছে। আর এসব ভূঁইফোড় ব্যক্তিদের কারনে মান ক্ষুন্ন সহ বিতর্কিত হয় জনপ্রতিনিধিরা। কারন চেয়ারম্যান তো জানেনা ফকির অন্যতম মাদকের গডফাদার। কিন্তু তারা তো জানে ফকির মাদক সম্রাট, তারা জেনেও এনেছে তাদের স্বার্থের জন্য। হয়তো তার মাদকের ব্যবসা নির্বিঘ্নেে পরিচালনার জন্য এবং মাসোয়ারা আদায়ের জন্যই ফকির কে নিয়ে সেলফি তুলে ফেসবুকে ছাড়া হয়েছে। যাতে করে প্রশাসন বুঝতে পারে ফকিরও দলের লোক তার মাদক ব্যবসার কিছু করা যাবে না। এই মনোভাব থেকে স্থানীয় নেতারা ফকির কে দিয়ে মালা পড়ানো মত ঘটনার জন্ম দিয়েছে।
জানা গেছে, তানোর পৌর সদর ঠাকুর পুকুর গ্রামে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার হেরোইন কেনা বেচা হয়। এক সময় ফকিরের পিতা গ্রামে গ্রামে গিয়ে বরফ বিক্রি করত। একবেলা খেয়ে না খেয়ে দিন পার হত। সে জনৈক হকের পুত্র ফকির বর্তমান সরকার আসার পর মাদক ব্যবসায় কোটিপতি বনে গেছেন। রয়েছে পাকা আলিশান বাড়ি, নিয়েছেন কয়েকটি পুকুর ও জমি টেন্ডার এবং বাড়িতে রয়েছে দামি ৫-৬ টি মোটরবাইক। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে মাদকের রমরমা ব্যবসা। মাঝে মধ্যে ডিবি, থানা পুলিশ এবং মাদকদ্রব নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর অভিযান দিয়ে আইওয়াস করে থাকেন। অথচ উপজেলা পরিষদের পশ্চিমে এবং থানা থেকে আধা কিলোমিটার দূরুত্ব কম হলেও রহস্য জনক কারনে অভিযান চলে না। চললেও লোক দেখানো। এবিষয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রহিমের কাছে ফকিরের নামে কতটি মাদক মামলা আছে জানতে চাইলে তিনি জানান, তার নামে মামলা আছে। তবে কতটা আছে সেটা দেখে বলতে হবে এবং অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে মাদক কারবারিদের গ্রেফতার করে মাদক মুক্ত রাখার জন্য জোরালো ভূমিকা রাখা হবে বলে হুশিয়ারি দেন তিনি।#
Post Views: ১৩১
Like this:
Like Loading...
Related