সরকার পতনের এক দফা অন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে অন্তত ৯৮ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। সোনালীনিউজের প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী রোববার (৪ আগস্ট) সকাল থেকে সারা রাত দেশের বিভিন্ন এলাকায় সহিংসতা হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সহিংসতায় ঢাকায় ১১, নরসিংদী ৬, লক্ষ্মীপুরে ১০, শেরপুরে ৫, পাবনায় ৩, সিলেটের গোপালগঞ্জে ৫, মুন্সিগঞ্জে ৩, সিরাজগঞ্জে ১৩ পুলিশ সদস্যসহ ২৭ জন, মাগুরায় ৪, রংপুরে আওয়ামী লীগের এক কাউন্সিলরসহ ৪ জন, ফেনীতে ৮, বগুড়ায় ৪, কুমিল্লায় ৩, কিশোরগঞ্জে ১ জন, সাভারে ১, জয়পুরহাটে ১, হবিগঞ্জে ১ ও বরিশালে এক আওয়ামী লীগ নেতা নিহত হয়েছেন।
এসব এলাকায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, ও তাদের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ হাজারের মতো মানুষ আহত হয়েছেন।
সিরাজগঞ্জ: সন্ত্রাসীরা সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় হামলা চালিয়ে ১৩ পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। এছাড়া সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর, রায়গঞ্জ উপজেলা ও জেলা শহরে হামলা ও সংঘর্ষে অন্তত ১৪ নিহত হয়েছে। সংঘর্ষের সময় সিরাজগঞ্জ শহরে তাণ্ডব চালানো হয়।
জেলা পুলিশ জানায়, বিএনপি, জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মিশে থানায় হামলা চালায়। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে হামলাকারীদের ওপর গুলি ছোড়ে। এতে বেতিল গ্রামের শিহাব ও সিয়াম এবং খুকনী গ্রামের ইয়াহিয়া গুলিবিদ্ধ হন। পরে খাজা ইউনুছ আলী হাসপাতালে নিলে তাদের মৃত্যু হয়।
হাসপাতালের কর্মকর্তা কৌশিক আহম্মেদ স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পুলিশ সুপার মো. আরিফুর রহমান মন্ডল জানান, হত্যাকারীদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
রায়গঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ হৃদয় জানান, নেতাকর্মীরা সকাল থেকে দলীয় কার্যালয়ে ছিলেন। দুপুর ১২টার দিকে বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীর সন্ত্রাসীরা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ঘেরাও করে হামলা চালায়। এতে ছয়জন নিহত ও অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হয়।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন- রায়গঞ্জের ব্রহ্মগাছা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার লিটন, তার ছোট ভাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হোসেন টিটু, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মেহেদী হাসান ইলিয়াস, সাধারণ সম্পাদক আলামিন সরকার, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ও দৈনিক খবরপত্রের উপজেলা প্রতিনিধি প্রদীপ কুমার।
নিহতদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. বেল্লাল হোসেন। তিনি জানান, হামলায় আহতদের মধ্যে ৩৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতর কয়েকজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
এদিকে দুপুরে জেলা শহরে মিছিল বের করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ওই সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারেও মিছিল বের করা হয়। এসএস রোডে মুখোমুখি হলে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে তিনজনের মৃত্যু হয়। নিহত ব্যক্তিরা হলেন শহর যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রঞ্জু রহমান, পৌর এলাকার সুমন ও আবদুল লতিফ।
সংঘর্ষের সময় সিরাজগঞ্জ-২ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য জান্নাত আর হেনরী, সাবেক সংসদ সদস্য ডা. হাবিবে মিল্লাত, সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের সংসদ সদস্য চয়ন ইসলাম, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ার, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুস সামাদের বাসা, পৌর মেয়র সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তার ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান মুক্তা প্লাজায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। সদর এসি ল্যান্ড, মৎস্য, এলজিইডি, জেলা দুর্যোগ ও ত্রাণ কার্যালয়, নির্বাচন অফিসসহ বিভিন্ন সরকারি অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
জান্নাত আরা হেনরীর স্বামী ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শামীম তালুকদার জানান, বিএনপি, জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে এক হয়ে জেলা শহরের মুজিব সড়কে তাদের বাসা ভাঙচুর করে পুড়িয়ে দেয়। আগুন নেভার পর বাসা থেকে দুটি কঙ্কাল উদ্ধার হয়েছে। এর মধ্যে একটি জানপুরের ছাত্রলীগ কর্মী শাহিন আহম্মেদের। অপরটি এক অটোরিকশা চালকের হতে পারে। হামলা থেকে রক্ষা পেতে তারা বাসায় আশ্রয় নিয়েছিলেন।
ঢাকা: রোববার রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত রাজধানীতে ১১ জন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাদের মধ্যে একজন আওয়ামী লীগের নেতা। তার নাম আনোয়ারুল ইসলাম। আনোয়ারুল ইসলাম ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য। তিনি উত্তরায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষে নিহত হন। ৯ জনের মরদেহ রয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে। হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে একজনের মরদেহ রয়েছে বলে জানা গেছে।
শেরপুর: শেরপুর জেলা শহরে একাধিক স্থানে আন্দোলনকারী এবং আওয়ামী লীগ ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শহরের তিনআনী বাজার মোড়ে আন্দোলনকারীদের ওপর প্রশাসনের টহল গাড়ির চাপায় বেশ কয়েকজন আহত হন। আহতদের শেরপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে পাঁচজন মারা যান।
নিহতরা হলেন- আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও জেলা শহরের বাসিন্দা তুষার (২৪), আইটি উদ্যোক্তা ও কলেজ শিক্ষার্থী জেলা সদরের পাকুরিয়া চৈতনখিলা এলাকার মাহবুব আলম (২১), ঝিনাইগাতী উপজেলার পাইকুড়া এলাকার শারদুল আশিস সৌরভ (২২), শ্রীবরদী উপজেলার রূপারপাড়া এলাকার সবুজ হাসান (২০) এবং জেলা সদরের মিম আক্তার (১৮)।
রংপুর: রংপুরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। এতে আওয়ামী লীগের এক কাউন্সিলরসহ ৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সরদার হোমের (লাশ এন্ট্রি করেন) ইনচার্জ মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নিহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
নরসিংদী: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুযায়ী নরসিংদীর মাধবদী এলাকায় আন্দোলনকারী ও আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে ৬জন নিহত হয়েছেন।
রোববার (৪ আগস্ট) দুপুরে মাধবদী বাজার বড় মসজিদের অজুখানায় এ ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে বিকেলে মাধবদীর পৌর মেয়র মোশারফ হোসেন মানিক সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনা সত্য।
লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।নিহতরা হলেন- ওসমান গনি, মো. কাউসার, সাদ আল আফনান, তৌহিদ কবির, রাফি, রিয়াজ চৌধুরী, আহমেদ শরীফ, হারুন মোল্লা, সিফাত চৌধুরী ও রাসেল। নিহতের অধিকাংশই আওয়ামী লীগ সমর্থক। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. অরুপ পাল বলেন, বিকেল পর্যন্ত আহত ৫৩ জনকে হাসপাতাল আনা হয়েছে। এর অধিকাংশই গুলিবিদ্ধ। মৃত অবস্থায় ৩ জনকে আনা হয়। ঢাকা নেওয়ার পথে একজন মারা গেছেন।
বরিশাল: বরিশালে টুটুল চৌধুরী নামের এক আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. এএসএম সায়েম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। আর আঘাতগুলো এমনভাবে করা হয়েছে যে মাথার খুলির ভেতরে থাকা অনেককিছুই বাইরে বের হয়ে গেছে। এক কথায় রক্তক্ষরণ ও মাথায় আঘাতের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।
নিহত টুটুল চৌধুরী বরিশাল মহানগরের ১২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বলে জানিয়েছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শেখ দিপু।
মুন্সিগঞ্জ: মুন্সিগঞ্জে সংঘর্ষে নিহত বেড়ে তিনজনে দাঁড়িয়েছে। নিহতরা হলেন রিয়াজুল ফরাজী (৩৫), মো. সজল (৩০) ও ডিপজল (১৯)। মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল ও সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সিলেট: সিলেটের গোলাপগঞ্জে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। দুপুর ১টার দিকে গোলাপগঞ্জ পৌর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুদর্শন সেন সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
নিহতরা হলেন- উপজেলার ধারাবাহর গ্রামের মকবুল আলীর ছেলে ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ঠিকাদার (খাবার সরবরাহকারী) তাজ উদ্দিন (৪৩) ও শিলঘাটের বাসিন্দা সানি আহমদ (১৮), দত্তরাইল গ্রামের মিনহাজ আহমদ (২৬), ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়নের নিশ্চিন্ত গ্রামের নাজমুল ইসলাম (২২) ও গৌছ উদ্দিন (২৯)।
হবিগঞ্জ: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘অসহযোগ আন্দোলন’ ঘিরে হবিগঞ্জে সংঘর্ষে টেঁটাবিদ্ধ হয়ে রিপন শীল (২৭) নামে এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধসহ আরও শতাধিক লোক আহত হয়েছেন।নিহত রিপন শীল হবিগঞ্জ শহরে আনন্তপুর এলাকায় রতন শীলের ছেলে।
রোববার (৪ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টায় ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আব্দুল মোমিন উদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিকদের এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
মাগুরা: মাগুরা সদর ও মহম্মদপুর উপজেলায় বিক্ষোভকারী, বিএনপি ও পুলিশের সংঘর্ষে এক ছাত্রদল নেতা, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীসহ চারজন নিহত হয়েছেন। নিহতরা হচ্ছেন জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-সম্পাদক মেহেদী হাসান রাব্বী (২৫), মহম্মদপুরের বালিদিয়া গ্রামের পান্নু শেখের ছেলে সুমন শেখ (১৯), একই উপজেলা সদরের ইউনুস মিয়ার ছেলে আহাদ (১৮) ও শ্রীপুরের রায়নগর গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী ইতিহাসের ছাত্র মোহাম্মদ ফরহাদ (২২)। আহত হয়েছেন তিন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন।
কুমিল্লা: কুমিল্লার দাউদকান্দিতে থানায় ঢুকে মো. এরশাদ (২৯) নামে এক পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষে রুবেল (৩৩) নামের একজন নিহত হয়েছেন। দুপুর পৌনে ২টার দিকে দেবীদ্বার পৌরসভার বানিয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
একই দিনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার কোটবাড়ি এলাকায় পিটিয়ে আহত করা হয় এক যুবককে (২৫)। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তবে হাসপাতাল সূত্র পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি। এ নিয়ে জেলায় একদিনে মোট তিনজনের মৃত্যু হলো।
বগুড়া: বগুড়ায় রোববার অসহযোগ কর্মসূচিতে কমপক্ষে চারজন নিহত এবং শতাধিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক আবদুল ওয়াদুদ বলেন, মোট চারজনের মরদেহ হাসপাতালে আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুইজন গুলিবিদ্ধ।
সাভার: সাভারের আশুলিয়ায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিহতের পিঠে গুলির চিহ্ন রয়েছে।
রোববার (৪ আগস্ট) বিকেল তিনটার দিকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আহমেদুল হক তিতাস।
তিনি বলেন, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আশুলিয়ার বাইপাইল থেকে আনুমানিক ৩০ বছর বয়সী একজনকে নিয়ে আসেন কয়েকজন যুবক। নিহতকে হাসপাতালে রেখে তারা চলে যান। নিহত ওই যুবককে হাসপাতালে আনার আগেই তিনি মারা যান। তবে তার বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি।
পাবনা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সরকারের পদত্যাগ দাবিতে ডাকা অসহযোগ আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছে পাবনা শহর। অভিযোগ উঠেছে, আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের মিছিল থেকে আন্দোলনকারীদের ওপর চালানো গুলিতে তিনজন নিহত হয়েছেন।
রোববার (৪ আগস্ট) পাবনার খেয়াঘাট মোড়ে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের ওপর আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের মিছিল থেকে গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ করেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এসময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৩৫ জন। এরপর বিক্ষোভকারীরা এক আওয়ামী লীগ নেতার গাড়ি এরপর গাড়ি পুড়িয়ে দেন।
ফেনী: ফেনীতে ছাত্র-জনতার অবস্থান কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছে আওয়ামী লীগ। এতে ৮ জন নিহত হয়েছেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, পথচারী ও সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন আরও দুই শতাধিক। ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. আসিফ ইকবাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রোববার (৪ আগস্ট) দুপুর দেড়টা থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মহিপাল এলাকায় এ সংঘর্ষ শুরু হয়।
নিহতরা হলেন, ফেনী সরকারি কলেজে অনার্স ভর্তিচ্ছু ইশতিয়াক আহমেদ শ্রাবণ, সদর উপজেলার ফাজিলপুর কলাতলী গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে ছাইদুল ইসলাম, পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ কাশিমপুর এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে শিহাব উদ্দিন, দাগনভূঞা থানার জয় লস্কর এলাকার সারওয়ান জাহান টিপুর ছেলে সরওয়ার জাহান মাসুদ, সোনাগাজী উপজেলার দেলোয়ার হোসেন চরমজলিশ পুর মান্দারি গ্রামের শাকিব, লক্ষ্মীপুর এলাকার মালেকের ছেলে সাইফুল ইসলাম ও আরাফাত।
জয়পুরহাট: জয়পুরহাটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে জেলা শহর। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে বিশাল সরকার (২৫) নামের একজন নিহত হয়েছেন। আর আহত হয়েছেন শতাধিক।
কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নাজনীন নাহার ডেইজি মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।