আব্দুল কাদের, বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ নওগাঁর বদলগাছীর হাট-বাজার গুলোতে সরকারি নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে কৃষকের কাছ থেকে অতিরিক্ত টোল আদায়ের মহোৎসব চলছে। ৮ টাকার টোল নেওয়া হচ্ছে ২০ টাকা। গত শুক্রবার ও মঙলবার কোলার হাটে অতিরিক্ত টোল আদায়ের তথ্য সংগ্রহকালে হাট ইজারাদারের পাটনার ফেরদৌস হোসেন জানান, অতিরিক্ত টোল আদায় নিয়ে লেখা লেখি করলে ভালো নিউজ হবে ঠিকই তাতে কোন কিছুই হবে না। কারণ যা করা হয় তা উপর থেকে নীচ পর্যন্ত ঠিক রেখেই করা হয়। হাট ইজারা দেওয়ার সময় টোল আদায়ের রেট চার্ট বা সরকারি নীতিমালা দিয়েছে কিন্তু সেটা কাগজে লিখা থাকে। বাস্তবে সরকারি নীতিমালা কোন হাটে ব্যবহার হয় না। তিনি আরো বলেন জেলার সব চেয়ে বড় হাট মহাদেবপুর উপজেলার মাতাজিহাট। সেখানে দ্যাখেন কি রকম অতিরিক্ত টোল আদায়ের মহোৎসব চলছে। কারো কিছুই করার নেই। ভুক্তভোগী হাটুরিয়ারা জানান, হাট ইজারা দেওয়া হলেও কখনো রেট চার্ট ঝুলানো হয়নি এবং রশিদ না দিয়ে নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত টোল। খোজ নিয়ে জানা যায়, নওগাঁ জেলা হাট বাজার ইজারা টোল রেট নীতিমালা অনুসারে চাল/গমের খুচরা দোকান ও চালঘরের সরকারি টোল রেট ৭টাকা, টোল নেওয়া হয় ২০ টাকা, তরকারী দোকান প্রতি (বড়) রেট ১২ টাকা, নেওয়া হয় ২০ টাকা, আর দোকান ছোট হলে রেট ৭ টাকা নেওয়া হয় ২০ টাকা। খাজা, মুড়ি, মুড়কি, ভাজা, চানাচুর, বাদাম, ঝুড়ি দোকান প্রতি রেট ৫টাকা, নেওয়া হয় ২০ টাকা। মুদির দোকান প্রতি রেট ৮ টাকা নেওয়া হয় ২০ টাকা। বিস্কুটের দোকান প্রতি রেট ৬ টাকা, নেওয়া হয় ২০ টাকা। মোদির দোকানদার খাদেমুল ইসলাম জানায় গত বছর ১কোটি টাকা কোলা হাটের ডাক ছিল। টোল নিয়েছে ১৫ টাকা। এবার ডাক হয়েছে ৫৬ লাখ টাকা। জোর পূর্বক টোল নিচ্ছে ২০ টাকা। ১৫ টাকা দিয়েছি আদায়কারি আমার চোখে মুখে টাকা ছুড়ে মেরেছে। তারপর বলেছি রশিদ না দিলে আর টোল দিব না। গত দুই হাট থেকে রশিদ দিয়ে নিচ্ছে ২০ টাকা করে। বারফালা গ্রামের জামাল সহ অর্ধশতাধীক পটল, বেগুন চাষী জানায় প্রতি মন ২০ টাকা হারে টোল নিচ্ছে, হাটের ঝাড়ুদার নেয় ১০ টাকা করে এবং প্রতিমন ওজন নেয় ৪২/৪৩ কেজিতে মন। কে শোনে কার কথা। বিষ্ণুপুর গ্রামের ছানোয়ার জানায় শুক্রবার হাটে ৪৩হাজার ৫শ টাকায় গরু কিনেছে টোল নিয়েছে সাড়ে ৫শত টাকা, বিক্রেতার কাছ থেকে নিয়েছে ৫০ টাকা। সরকারি রেট গরু ৫শত টাকা। ছাগলের রেট ২শত টাকা, নেওয়া হয় ৩/৪ শত টাকা।
কোলা হাটের ইজারাদার নওগাঁ জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বিমান কুমার রায় এর সঙ্গে মোবইল ফোনে জানতে চাইলে তাঁর পাটনার ফেরদৌসকে প্রথমে চিনেন না বললেও পরে হ্যাঁ বলেন। অতিরিক্ত টোল নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি ফোন কেটে দেন। পরে আরো দুবার ফোন দিলে আর রিসিভ করা হয়নি।
হাট বাজার ইজারা দেওয়ার পর সরকারি নীতিমালা কোন কাজে লাগে না। ফাঁকা রশিদ অথবা রশিদ না দিয়ে অতিরিক্ত টেল নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে নওগাঁ জেলা হাট বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান বিপিএএ জানান কেউ যদি বলে সরকারি নীতিমালা কাজে আসে না আবার অতিরিক্ত টোল নিবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।