সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে দুর্ঘটনায় ১৫ প্রাণহানির ঘটনার কারণ অনুসন্ধান ও সুপারিশ প্রণয়নের জন্য ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সিলেট জেলা প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার রাতে সিলেটের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) আহসানুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কমিটির সভাপতি হলেন, সিলেট জেলার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট। সদস্য সচিব করা হয়েছে বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালককে (ইঞ্জিনিয়ারিং)। এছাড়াও কমিটির সদস্য হলেন- মহানগর পুলিশ কমিশনার, জেলা পুলিশ সুপার, সওজের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল এন্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান।
এর আগে বুধবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের দক্ষিণ সুরমার নাজিরবাজার এলাকার কুতুবপুরে দুর্ঘটনাটি ঘটে। সিলেট থেকে ছেড়ে যাওয়া পিকআপে প্রায় ৩০ জন নির্মাণ শ্রমিক জেলার ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজার যাচ্ছিলেন। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে দক্ষিণ সুরমার নাজিরবাজার এলাকার কুতুবপুর নামক স্থানে পৌঁছলে মুনশীগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী মালবোঝাই ট্রাকের সঙ্গে শ্রমিক বহনকারী পিকআপের সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান ১১ জন। পরে হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যান আরও ৪ জন। বৃহস্পতিবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে।
নিহতের বেশির ভাগ সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। তারা সবাই নির্মাণ শ্রমিক। দৈনিক মজুরিতে তারা বাসার ছাদ ঢালাইয়ের কাজ করতেন। বুধবার ভোরেও তারা একটি বাসার ঢালাই কাজের জন্য সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলায় যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যেই দুর্ঘটনার শিকার হন তারা। মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে সিলেট জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার এবং আহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ১০ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়রপ্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে ২৫ হাজার টাকার অনুদান প্রদান করেন।
এদিকে ভয়াবহ এ দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহতের ঘটনায় দুই চালকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের ইজাজুল বাদী হয়ে এ মামলা করেছেন। ইজাজুলের বাবা ওই দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি শামসুদ্দোহা।
তিনি জানান, ১৫ জন শ্রমিক নিহতের ঘটনায় পিকআপ ও ট্রাকচালকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তারা এখনও পলাতক। পুলিশ তাদের গ্রেফতার করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ গাড়ির নাম্বার দিয়ে মালিকের সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে।