রবিবার, ১১ এপ্রিল ২০২১, ০৭:১৫ অপরাহ্ন
আবু হানিফ মোঃ বায়েজিদ (গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি) :
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয় স্কেল হওয়ার খবরে একই নামে নতুন করে আরেকটি প্রতিষ্ঠান নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের ফলগাছা (দর্জিপাড়া) গ্রামে নতুন করে আরেকটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করছে অন্য পক্ষ। এতে আগের প্রতিষ্ঠিত স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয় বেতনভুক্তি হওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, ১৯৮৪ সালে ফলগাছা দর্জিপাড়া স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন দেলওয়ার হোসেন নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি। প্রতিষ্ঠানটি গড়তে জমিদান করেন তকিজল, মন্তাজ, শামছুল, কান্দরি, শহিদুল ও আবু তালেব নামের কিছু শিক্ষানুরাগী। শুরু থেকে প্রতিষ্ঠানটি বিনা বেতনে স্থানীয় শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছায় পাঠদান করে আসছিলেন। এমনকি সরকারি শিক্ষা উপকরণ, উপবৃত্তি ও বিষ্কুটসহ সকল সুযোগ সুবিধা পেয়ে প্রতিষ্ঠানটি ধরে রাখেন প্রধান শিক্ষক শামছুল আলম।
তৎকালীন সময় থেকে শুরু করে মাদ্রাসাটি সমাপনী পরীক্ষায় সন্তোষজনক ফলাফল অর্জন করেন। এরই মধ্যে প্রায় ৩৬ বছর পর নতুন করে এবতেদায়ী মাদ্রাসাটি জাতীয় স্কেলে অর্ন্তভুক্ত হয়। স্বতন্ত্র মাদ্রাসাটির জাতীয় স্কেলের তালিকায় নাম আসার পর প্রতিপক্ষ আবু তালেব ওই মাদ্রাসার কাছেই নতুন করে আরেকটি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করছেন। এতে একই নামে প্রতিষ্ঠান হওয়ায় জাতীয় স্কেলে বেতন ভুক্তি হওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
অভিযোগ আছে, স্থানীয় জমিদাতা আবু তালেব মাদ্রাসাটিতে জমিদান করার পর নিজের নামে তা রেকর্ড করে নেন। এমনকি তার ছেলেকে ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার জন্য প্রধান শিক্ষককে হুমকি দেন। প্রধান শিক্ষক তা মানতে রাজি না হওয়ায় নিজেকে সভাপতি দাবি করে আদালতে একটি মামলা করেন। মামলাটি এখনো বিচারাধীন রয়েছে। অন্যদিকে, বিভিন্ন জায়গার কিছু লোকজনকে শিক্ষক বানিয়ে ও কমিটির সদস্য দেখিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে কাগজপত্র দাখিল করেন।
এসব ঘটনার পর কোন কাজ না হওয়ায় মাদ্রাসা সংলগ্ন এলাকায় জমি নিয়ে নতুন করে একই নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করছেন তিনি। এতে আগের প্রতিষ্ঠানটির জাতীয় বেতন স্কেল ভুক্তি হওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়রা বলছে, ফলগাছা দর্জিপাড়া স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসাটি শুরু থেকেই পাঠদান ও যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। নতুন করে আরেকটা প্রতিষ্ঠান তৈরি হওয়ায় আগের মাদ্রাসা ক্ষতিগ্রস্থ হবে। তাদের দাবি, প্রতিপক্ষতা দুর করে আগের মাদ্রাসাটিকে দ্রুত প্রাতিষ্ঠানিক রূপে ফিরিয়ে আনার।
এবতেদায়ী মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক শামছুল আলম বলেন, ১৯৮৪ সাল থেকে আমি মাদ্রাসার পিছনে শ্রম দিয়ে আসছি। এতে একদিকে যেমন আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি, অন্যদিকে সময়ের ব্যয় করেছি। প্রত্যন্ত অঞ্চলে আমি কিছুটা শিক্ষার আলো ছড়াতে পরিশ্রম করছি। তবে হঠাৎ করে জাতীয় বেতন স্কেল ভুক্তির খবর শুনে প্রতিপক্ষের আরেকটা বিদ্যালয় নির্মাণ করায় এটি ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেন মন্ডল বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোলেমান আলী বলেন, কেউ প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে চাইলে তো আমরা বাধা দিতে পারিনা। ওই প্রতিষ্ঠানটির দাবিদার দুই পক্ষ। ইতোমধ্যে একটি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। তবে আমরা সবকিছু যাচাই-বাছাই করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রতিবেদন পাঠিয়েছি।