সুন্দরগঞ্জে পেঁয়াজের কেজি ৫ টাকা

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার

গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হাট-বাজারে হালি পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উপজেচলতি মৌসুমে উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। ফলে বাজার সয়লাব হয়ে গেছে পেঁয়াজে। ফলন ভাল হলেও হাসি নেই কৃষকের মুখে। তাদের অভিযোগ, বাজারে যে দামে পেঁয়াজ বিক্রয় হচ্ছে তাতে ন্যায্যমূল্য তো দূরের কথা, উৎপাদন খরচই উঠছে না। মসলা জাতীয় ফসলের মধ্যে পেঁয়াজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উপজেলায় মুড়িকাটা ও হালি পেঁয়াজের চাষ করেন চাষিরা। এখন ক্ষেত থেকে হালি পেঁয়াজ সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকগণ। পুরুষরা ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ তুলে বাড়িতে নিয়ে আসছে। নারীরা সেই পেঁয়াজ পরিষ্কার করে বিক্রযের জন্য প্রস্তুত করছেন। উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে মণ প্রতি পেঁয়াজ বিক্রয় হচ্ছে মান ভেদে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা পযন্ত। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। সুুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ৪৫০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় তা দিগুণ। উপজেলা মীরগঞ্জ হাট, সুন্দরগঞ্জ পৌরবাজার, চৈতন্যবাজার, পাঁচপীর হাট,ডোমেরহাট ও নয়ারহাটসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে দেখা যায়, ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ তুলে হাটে বিক্রয় করতে এনেছে চাষিগণ। হাট-বাজাওে পেঁয়াজের ছড়াছড়ি। পাইকারদের হাঁকডাকে বাজার সরগরম। সরবরাহ বেশি হওয়ায় দাম কমে যাওয়ায় হতাশ চাষিরা। পেঁয়াজ চাষিরা বলেন, সবচেয়ে ভাল পেঁয়াজ প্রতি মণ পাইকারি বিক্রয় হচ্ছে ২০০ থেকে ৪০০ টাকায়। এতে উৎপাদন খরচও উঠছে না। গুনতে হচ্ছে লোকসান। পেঁয়াজ উৎপাদন খরচ হচ্ছে বেশী। বাজারে পেঁয়াজের মূল্য কম হওয়ায় লাভের পরিবর্তে লোকসান হচ্ছে। এক সময় পেঁয়াজের ঝাঁজে মানুষ দিশাহারা হয়ে পড়ে। এখন কৃষকদের ক্ষেতে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে তার সঠিক মূল্য পাচ্ছে না। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করা না হলে লোকসান আরও বাড়বে। সুুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর চরের পেঁয়াজ চাষি হবি মিয়া বলেন, ৮ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছি। বাজারে ন্যায্যমূল্য না থাকায় বিঘা প্রতি ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা লোকশান হচ্ছে। বেলকা ইউনিয়নের কৃষক নাজু মিয়া বলেন, এ বছর ৪ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছি। গড়ে প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা। কিন্তু অসময়ের বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজের ক্ষতি হয়েছে। ফলে বাজারে কম দামে পেঁয়াজ বিক্রয় করতে হচ্ছে। মীরগঞ্জ হাটের পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ী কায়ছার আলম বাপ্পী বলেন, বর্তমানে বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বেশি। সে কারণে পেঁয়াজের দাম কম। মানভেদে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা মণ বিক্রয় হচ্ছে। উপজেলা কৃষি অফিসার রাশেদুল কবির বলেন, চলতি মৌসুমে পেঁয়াজ উৎপাদনে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে কিছু পেঁয়াজ ক্ষেত নষ্ট হলেও কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ভরা মৌসুম বলে এখন একটু পেঁয়াজের দাম কম। তবে পেঁয়াজের দাম বাড়বে। উপজেলার চরাঞ্চলে পেঁয়াজের ফলন ভাল হয়েছে।

Exit mobile version