মোঃ বেল্লাল হোসেন নাঈম,
স্টাফ রিপোর্টারঃ
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে চোরের আধিপাত্য আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, চোরের উৎপাত৷চোরেরা বাদ দেয়নি সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতা এবং ব্যবসায়ীদেরও। এখানে হোন্ডা থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রকার চুরি নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাড়িয়েছে। অনেকেই বলছেন সোনাইমুড়ী উপজেলায় চোরদের জন্য স্বাধীন ভূখণ্ড৷ চুরির ঘটনায় থানায় একাধিক মামলা হলেও অধিকাংশ মামলাই আলোর মুখ দেখেনি।
খোঁজ নিয়ে জানাযায়, গত চার মাসে সোনাইমুড়ীতে ধারাবাহিক ভাবে হোন্ডা চুরি, সিঁদেল চুরি, বেড়া কেটে চুরি, খাদ্যে নেশা জাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে ঘরের সর্বস্ব লুটের ডজন খানিক ঘটনায় সোনাইমুড়ী থানায় একাধিক মামলা হলেও পুলিশি তদন্তে এর কোন কুল কিনারা হয়নি। তদন্তের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে চোর সিন্ডিকেট দিন দিন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন ৷
অনুসন্ধানে জানা যায়, বুধবার (১১মে) দুপুর ১২টার দিকে সোনাইমুড়ী বড় মসজিদের বিপরীতে আলী টাওয়ারের সামনের ব্রীজ হতে সাবেক উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়ার হোন্ডা চুরি হয়।
৮ মে দুপুরে সোনাইমুড়ী এছাক সড়ক থেকে ইনসেপ্টা কোম্পানির এমপিও সমরেশ চন্দ্র ঘোষের হোন্ডা চুরির ঘটনা ঘটেছে। এর আগে উপজেলার দেওটি ইউপির শুরহলী গ্রামের বাবুল ডাক্তার ৩০ রমজান ভোরে ফজর নামাজ পড়তে মসজিদের পাশে হোন্ডা রেখে নামাজ পড়ার পর বের হয়ে দেখে হোন্ডাটি চুরি হয়ে গেছে। বারগাঁও ইউপির রাজিব পুর গ্রামের উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক শিপন এর হোন্ডা চুরি হয়। এর এক সপ্তাহ আগে ২৬ মার্চ দিবাগত রাতে উপজেলার দেওটি ইউপির আন্দিরপাড় গ্রাম হতে সোনাইমুড়ী উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি খোরশেদ আলম শিকদার এর হোন্ডা চুরির ঘটনা ঘটে। ফেব্রুয়ারী মাসে চুরি হয় জয়াগ ইউপির আনন্দীপুর গ্রামের জামাল কন্ট্রেকটরের হোন্ডা। তার সপ্তাহ খানিক আগে চুরি হয় একই গ্রামের সর উদ্দিন পাটোয়ারী বাড়ির মৃত সাখাওয়াত উল্যাহ পাটোয়ারীর ছেলে হতদরিদ্র জয়নাল আবেদীন এর অটোরিকশা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সোনাইমুড়ী পৌরসভার ভানুয়াই গ্রামের উপজেলা যুবলীগ নেতা মহিন উদ্দিন এর হোন্ডা চুরি হয়।
এছাড়া গত ২ মাস পুর্বে উপজেলার সোনাপুর ইউপির সোনাপুর গ্রামের তাজুল ইসলাম পাটোয়ারীর ঘরে খাদ্যে নেশা জাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে ঘরের সবাইকে অজ্ঞান করে স্বর্ণালংকারসহ ৬ লক্ষাধিক টাকা লুটে নিয়ে যায় চোরের দল, এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই বজরা ইউপির শীলমুদ গ্রামের গ্রাম সরকারের নতুন বাড়ির শাহ আলমের ঘরের দরজা ভেঙে চোরেরা ঘরে প্রবেশ ৬ভরি স্বর্ণালংকারসহ নগদ টাকা নিয়ে যায়। গত মার্চ মাসের শেষের দিকে পৌরসভার বরলা পাটোয়ারী বাড়ির ইকবাল হোসেনের বসত ঘরের বেড়া কেটে প্রায় ১০ভরি স্বর্ণালংকারসহ নগদ টাকা নিয়ে চোরের দল।
সর্বশেষ গত বুধবার (১১মে) সোনাইমুড়ী আলী টাওয়ারের ব্রীজ হতে উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়ার হোন্ডা চুরির ঘটনা ঘটে।
এসব চুরির ঘটনায় সোনাইমুড়ী থানায় একাধিক মামলা হলেও তদন্তে আলোর মুখ দেখতে পায়নি ভোক্তভোগী৷
সোনাইমুড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হারুন অর রশিদ জানান, গত বুধবার (১১মে) চুরি হওয়া মালামালসহ নোয়াখালী সদর থানার খলিসাটোলা এলাকার মাইন উদ্দিন পাটোয়ারী বাড়ির মৃত রহমত উল্যার ছেলে রিদয় (১৪), লক্ষীপুর জেলার কমলনগর উপজেলার তোরাবগঞ্জ গরুর হাট এলাকার আলমগীর এর ছেলে মোঃ সোহেল (১৪), বেগমগঞ্জ উপজেলার করিমপুর খালপাড় এলাকার মানিকের ছেলে ফরহাদ (১৫) এবং লক্ষীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার চরমন্ডল পানা মিয়া মিঝি বাড়ির ইসমাইল হোসেন এর ছেলে আবদুল মজিদ (১৪) সহ ৫জন চোরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হোন্ডা চুরির বিষয়ে তিনি জানান, এই চক্রে আন্তঃজেলা চোর সিন্ডিকেট জড়িত রয়েছে, এদের ধরতে ব্যাব পুলিশ যৌথ ভাবে কাজ করছে। আশা করি খুব অল্প সময়ের মধ্যে এর একটা বিহীত করা যাবে।